বনাঞ্চল দখল করে মাথা তুললো ৭২৫টি ঘর

 বনাঞ্চল দখল করে মাথা তুললো ৭২৫টি ঘর
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

প্রাক্তন আত্মসমর্পণকারী বৈরী সংগঠনগুলির পরিবারের সদস্যরা উত্তর জেলার কাঞ্চনপুর মহকুমার মনুমনপুইয়ের বনাঞ্চলের বেশ কিছু অঞ্চল দখল করার ঘটনা ঘিরে গোটা রাজ্য প্রশাসনে তোলপাড় হয়েছে।এই ইস্যু নিয়ে কাঞ্চনপুরে বর্তমানে উত্তপ্ত অবস্থা। বিক্ষোভ, পথ অবরোধ, আন্দোলন পর্যন্ত হচ্ছে। প্রাক্তন আত্মসমর্পণকারী বৈরী পরিবারগুলির সদস্যরা মনুমনপুইয়ের বনাঞ্চল দখল করে এখন পর্যন্ত ৭২৫টি বাঁশের ঘর নির্মাণ করেছে।এদিকে গোটা এলাকা ঘুরে দেখা গেল, প্রতিনিয়ত দখল হচ্ছে রিজার্ভ বনের জমি। ত্রিপুরা সরকারের রাজস্ব দপ্তরের কিছু খাস এবং রিজার্ভ ফরেস্টের জমি দীর্ঘদিন ধরে বসবাসের দোহাই দিয়ে জমি ছাড়ছে না সহস্রাধিক দখলদাররা।পাশাপাশি শত শত একর জমির মূল্যবান গাছ কেটে জুম চাষ,এমনকী শক্তপোক্ত ঘর নির্মাণ করেছে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা। এতে উজাড় হচ্ছে মনুমনপুই,কাঞ্চনছড়া, জয়মণিপাড়া সহ কাঞ্চনপুর পাহাড়ের বনভূমি ও বৃক্ষরাজি। দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনছড়া, মনুমনপুই,চণ্ডীপুর, জয়মণিপাড়ার বনভূমি থেকে মূল্যবান বনজ সম্পদ পাচার হচ্ছে।শান্তিপূর্ণ কাঞ্চনপুরে ব্যাপকভাবে বহিরাগতদের আসার ফলে বনাঞ্চল জবরদখল এবং বনাঞ্চল ধ্বংস করার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। কাঞ্চনপুর বিভাগীয় বন বিভাগ তিনটি রেঞ্জে বিভক্ত। ওই তিনটি রেঞ্জের অধীনে কয়েক হাজার একরের কাছাকাছি বনভূমি দখল করে আছে সহস্রাধিক দখলদার পরিবার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বহু অবৈধ দখলদার ঘর বানিয়ে বসবাসের পাশাপাশি পাহাড় কেটে স্থায়ী বাসস্থানের চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে অপার সৌন্দর্যের দেওভ্যালির পাহাড়। রিজার্ভ বনের মধ্যে মানববসতি গড়ে ওঠায় কমে গেছে বন্যপ্রাণীর বিচরণ। একসময় এই দেওভ্যালির পাহাড়ের বনে বাঘ, ভাল্লুক, হরিণ, বানর, শূকর ও বনমোরগ থাকলেও এখন সেগুলো আর চোখে পড়ে না। দখলদারদের অত্যাচারে সেগুলি এসব বনাঞ্চল থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বনের জমিতে অবৈধভাবে বসবাসের দোহাই দিয়ে জমি ছাড়তে চাইছে না দখলদাররা। প্রায় প্রতিনিয়তই দেওভ্যালি পাহাড়ের বনের জমি দখল হচ্ছে। এতে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বনভূমি। দখলদাররা বনের গাছপালা কেটে বসতবাড়ি নির্মাণসহ চাষাবাদ করছে। দেওভ্যালির পাহাড়ে জবরদখল নিয়ে দশদা আর ডি ব্লকের বিএসি চেয়ারম্যান উদারাম রিয়াং জানান, সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই ১২৩৫ জন আত্মসমর্পণকারী পরিবারের সদস্যরা মাথা গোঁজার ঠাই হিসাবে মনুমনপুই পাহাড়ে ঘর বানাচ্ছে। আত্মসমর্পণকারী বৈরীদের জায়গা জমি না থাকায় বাধ্য হয়েই এখানে এসেছে। সরকার যদি তাদের অন্য কোথাও থাকার জায়গা করে দেয় তাহলে তারা এই জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি আছে। সরকারের কাছে আকুল আবেদন করছি তাদের এখান থেকে উচ্ছেদ করলেও যাতে পুনর্বাসনের একটা ব্যবস্থা করে দেয়। বিএসির চেয়ারম্যান উদারাম রিয়াং আরও জানান, মনুমনপুই এলাকায় প্রাক্তন বৈরীরা বাসস্থান তৈরি করলে অন্যান্য সম্প্রদায়ের কোনও অসুবিধা হবে না। এদিকে কাঞ্চনপুর মহকুমাশাসক রাহুল মোদি জানান, মনুমনপুই পাহাড়ে নতুন করে ঘর নির্মাণ না করতে দখলদারদের অনুরোধ করা হয়েছে। তবে মহকুমা প্রশাসন সরকারী সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছে বলে মহকুমাশাসক জানান ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.