বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল-কলেজ সংস্কার হয়নি, ব্যাহত পড়াশোনা।।
অনলাইন প্রতিনিধি :-শিক্ষা
দপ্তরের অর্থ ভাণ্ডার শূন্য। বিশেষ করে গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্যের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল এবং ডিগ্রি কলেজগুলিতে বর্তমানে নিয়মিত পঠন পাঠন একপ্রকার বন্ধ।যার ফলে রাজ্যের হাজারো ছাত্রছাত্রী বিপাকে পড়েছে।
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর,গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্যের বন্যায় ৮৬১টি স্কুল৬টি ডিগ্রি কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। এর মধ্যে ১৯৪টি নিম্নবুনিয়াদি,২৭৪টি উচ্চ বুনিয়াদি,৩৩২টি দ্বাদশ শ্রেণী এবং ১২৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,৬টি ডিগ্রি সহ ৬১টি বিভিন্ন স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।এই বন্যার ফলে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের ক্ষতির বহর ছিল প্রায় ২৬২ কোটি ৮ লক্ষ টাকা।তবে ওই সময়ে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্যে বন্যা ত্রাণ প্যাকেজে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরকে বারো কোটি টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার বলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা। যদিও ২৬২ কোটি টাকার ক্ষতির মধ্যে মাত্র বারো কোটি টাকার প্রদানের ঘোষণা ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছিল।যার কোন সঠিক উত্তর শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের কাছে ছিল না।
অবাক করার বিষয় হলো তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও ক্ষতিগ্রস্ত ৮৬১টি স্কুলের মধ্যে ৮১৭টি স্কুল এখন পর্যন্ত কোন আর্থিক সাহায্য পেলো না। আর ৪৪টি স্কুলকে আর্থিক সাহায্য প্রদান হয়েছে।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষিকারা অভিযোগ করেন, শিক্ষা দপ্তরের অর্থ সংকটের কারণে বর্তমানে প্রায় ১৯০টি নিম্নবুনিয়াদি, ২৫৪টি উচ্চ বুনিয়াদি, ২২টি দ্বাদশ শ্রেণী এবং ১১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা বর্তমানে একপ্রকার বন্ধ। অভিযোগ,এই বিদ্যালয়গুলিতে বর্তমানে শ্রেণির কক্ষে পড়াশোনা করার জন্যে ছাত্র অনুপাতে বেঞ্চ নেই, শ্রেণিকক্ষ নেই। অধিকাংশ বিদ্যালয়ের বর্তমানে শ্রেণির কক্ষে পড়াশোনা করার জন্যে ছাত্র অনুপাতে বেঞ্চ নেই, শ্রেণিকক্ষ নেই।অধিকাংশ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে এখনও পলি জমে রয়েছে। পানীয় জলের জন্যে হাহাকার অব্যাহত রয়েছে। নেই কোনও শৌচাগার। এতে সহজেই অনুমেয় স্কুলগুলির কী করুণ অবস্থা।এমনকী অধিকাংশ স্কুলে যাতায়াতের জন্যে রাস্তা পর্যন্ত নেই। আর বিদ্যুৎ সংযোগ তো দিবাস্বপ্ন। অভিযোগ, বন্যায় ১৫০০ স্কুলের পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপালদের অভিযোগ, কলেজগুলিরও বেহাল দশা। এখন পর্যন্ত কোনও আর্থিক সাহায্য নেই।ফলে ব্যাহত হচ্ছে পড়শোনা।বিপাকে ছাত্রছাত্রী।দপ্তর উদাসীন। ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের ক্ষোভ চরমে উঠেছে।শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর বন্যায় প্রায় পঁচাশি হাজার বই, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মিড ডে মিলের খাদ্যসামগ্রী, আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতি সহ অধিকাংশ বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছিল।এখন পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হয়নি। যার খেসারত দিচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা।প্রথম ধাপে যে সকল শিক্ষার্থীর বই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের মধ্যে মাত্র ২১,৫৫২টি বই বিতরণ করা হয়।আর বাকিদের কী হবে? এ প্রশ্নের উত্তর নেই। অন্যদিকে, বর্তমানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং বিদ্যালয়ে জীবাণুনাশক কর্মসূচি বন্ধ।
বন্যায় বগাফা পাবলিক লাইব্রেরি এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা পাবলিক লাইব্রেরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এর ফলে প্রায় আট হাজার বই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এছাড়াও বিলোনীয়ার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কলেজের সীমানার দেওয়াল, মোহনপুরের স্বামী বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ের রাস্তা, হাপানিয়ার উইমেন্স পলিটেকনিক কলেজের বাউন্ডারি ওয়াল ও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত সহ ছয়টি ডিগ্রি কলেজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল।ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় দুই কোটি চৌত্রিশ লক্ষ টাকা।