বন্যায় মৃত্যু বেড়ে দাঁড়াল ৩১ পরিস্থিতি দেখতে কেন্দ্রীয় টিম!!

 বন্যায় মৃত্যু বেড়ে দাঁড়াল ৩১ পরিস্থিতি দেখতে কেন্দ্রীয় টিম!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে।ত্রাণ শিবির থেকে বন্যাদুর্গত মানুষ ধীরে ধীরে নিজ বাড়িঘরে ফিরছেন।বুধবার রাতে সংবাদ লেখা পর্যন্ত রাজ্যে ত্রাণ শিবিরের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬৯ টি।শরণার্থীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩৩৫৬ জন।এদিকে সরকারী হিসাবেই বুধবার পর্যন্ত বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে। আহত দু’জন। নিখোঁজ রয়েছেন ১ জন।
এদিকে গোমতী নদীর জলস্তর নামতে শুরু করায় অমরপুর, উদয়পুর ও সোনামুড়ার বন্যা পরিস্থিতিও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।এদিকে বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পান্ডে জানান, রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুগ্মসচিব বিসি জোশীর নেতৃত্বে আন্তঃ মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল (আইএমসিটি) বুধবার বিকালে রাজ্যে এসে পৌঁছেছে।এই দলে কৃষি, অর্থ, পরিবহণ, জলসম্পদ এবং গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের আধিকারিকগণ রয়েছেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে সচিব জানান, মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার রাজ্যের সর্বশেষ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।এখনও যারা ত্রাণ শিবিরগুলিতে রয়েছেন তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য, পানীয় জল,স্বাস্থ্য পরিষেবা অব্যাহত রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসকগণদের নির্দেশ দিয়েছেন।তিনি জানান, সোনামুড়ায় গোমতী নদীর জলস্তর বিপদসীমার নিচে দিয়ে বইছে।রাজ্যে নগর এলাকাগুলির বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, মোট ৩২ হাজার মানুষকে সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করা হয়।আগরতলা শহরের পানীয় জলের উৎস তিনটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, ১১ টি ডিপ টিউবওয়েলকে সংস্কার করা হয়েছে।শহরের বিভিন্ন স্থানে যেখানে জলের অভাব রয়েছে সেখানে জল পৌঁছানোর জন্য ৯ টি ওয়াটার ট্যাঙ্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।প্রাথমিক মূল্যায়নের মাধ্যমে দেখা গেছে রাজ্যের নগর এলাকাগুলিতে বন্যার জন্য ৩০৬ কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে।এণ শিবিরগুলিতে স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং জলবাহিত রোেগ যাতে না হয় তার জন্য সুরক্ষা কর্মসূচি হিসেবে শৌচালয়গুলির নিয়মমাফিক পরিষ্কার।জীবানুনাশক ওষুধ স্প্রে ও ব্লিচিং-এর ব্যবহার করা হচ্ছে।এখন পর্যন্ত ত্রাণ শিবিরগুলিতে চিকিৎসকরা ১,১০৭ বার পরিদর্শন করে ৪৪৭ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন।এছাড়াও ১,৬৫০ টি স্বাস্থ্য শিবিরে ৪৫ হাজারের উপর মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।জীবানুনাশক এবং ডায়ারিয়া স্বাস্থ্য দপ্তর ২ লক্ষ ওআরএস প্যাকেট,২০ লক্ষ হ্যালোজেন ট্যাবলেট, ১০ লক্ষ জিঙ্ক ট্যাবলেট সহ জ্বরের ওষুধ, স্কিন লোশন ক্রয় করবে।সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজস্ব দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব তমাল মজুমদার, ত্রাণ, পুনর্বাসন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের অধিকর্তা জে ভি দোয়াতি প্রমুখ।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব (ফরেনার্স ডিভিশন) বিসি জোশীর নেতৃত্বে এই প্রতিনিধিদলটি আজ সন্ধ্যায় মহাকরণের কনফারেরন্স হলে ‘রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতিজনিত বিষয় নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন।বৈঠকের শুরুতেই রাজস্ব দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে গত ১৯ আগষ্ট থেকে রাজ্যের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি এবং ক্ষয়ক্ষতির এক সচিত্র প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের কাছে তুলে ধরেন।বৈঠকে পূর্ত (সড়ক ও গৃহ) এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ক্ষয়ক্ষতি ও
বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করেন।বন্যার ফলে সমগ্র রাজ্যের রাস্তাঘাট, কালভার্ট যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তিনি তুলে ধরেন।বিদ্যুৎ, পানীয় জল ও স্বাস্থ্যবিধান এবং জলসম্পদ দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং নিজ নিজ দপ্তরের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংবলিত বিবরণ তুলে ধরেন।বৈঠকে কৃষি দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায় জানান, কৃষিজ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি জেলাভিত্তিক কৃষির ক্ষয়ক্ষতির তথ্য বৈঠকে তুলে ধরেন।এছাড়াও কৃষি কাজের জন্য জমি প্রস্তুতকরণ এবং দপ্তরের পরবর্তী পদক্ষেপসমূহ নিয়ে তিনি আলোচনা করেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.