বন রক্ষায় নতুন নিয়োগ দায়িত্বে টিএসআর: অনিমেষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যের বনাঞ্চল এবং বন দপ্তরের আধিকারিক কর্মচারীদের রক্ষায় গোয়েন্দা বিভাগ গড়ছে রাজ্য সরকার, বন দপ্তর। শুধু তাই নয়, বনাঞ্চল এবং বনকর্মীদের রক্ষার দায়িত্বভার ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসকে দেওয়া হচ্ছে, যাতে কাঞ্চনপুর মহকুমা ফরেস্ট প্রোটেকশন ইউনিটে হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। এ লক্ষ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। মূল লক্ষ্য রাজ্যের শান্তি সম্প্রীতি উন্নয়ন অব্যাহত থাকতে হবে। যারা এই ঘটনার প্রকৃত দোষী তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য সরকার- এমনটাই বললেন বনমন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা রাজধানীর প্রজ্ঞাভবনে বুধবার ডিএনএ ক্লাব আয়োজিত প্রশিক্ষণ শিবিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে বনমন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা জানান, রাজ্যের দীর্ঘ বাম শাসনে রাজ্যবাসীর স্বার্থে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বনাঞ্চল রক্ষায় বন দপ্তরে কর্মচারী নিয়োগ হয়নি। তাই এখন সরকার এই সমস্যার নিরসনে পদক্ষেপ নিয়েছে। অবিলম্বে ফরেস্টার, ফরেস্ট গার্ড সহ অন্য শূন্যপদ পূরণ করছে বন দপ্তর। বনদস্যুদের উৎখাতের দায়িত্বভার প্রদান হচ্ছে টিএসআর জওয়ানদের উপর। বন্যপ্রাণী এবং বনজ সম্পদ রক্ষার ইস্যুতে তিনি বলেন, বাম আমলে রাজ্যে প্রত্যেকদিন এ ধরনের ঘটনা হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট থানা এবং বন দপ্তরে লিপিবদ্ধ হয়নি। বর্তমান সরকারের সময়ে এ ধরনের ঘটনা প্রায় নেই বললেই হয়। কাঞ্চনপুর পেচারথল কাঞ্চনছড়া মৃত্তিঙ্গাছড়া বনাঞ্চল রক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার, বন দপ্তর। ফরেস্ট প্রোটেকশন ইউনিটে সশস্ত্র হামলার ঘটনায়ও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পেকুছড়ার ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য সব পদক্ষেপ হচ্ছে। এতে রাজ্যবাসীর কোনও ক্ষতি হবে না। কাঞ্চনপুর মহকুমা ফরেস্ট প্রোটেকশন ইউনিটের কর্মচারীদের সব ধরনের সাহায্য করা হচ্ছে এবং হবে।এদিকে ডিএনএ ক্লাবের কার্যক্রমের উপর প্রশিক্ষণ শিবিরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা বলেন, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে জৈব প্রযুক্তি বিষয়ক চিন্তা চেতনাকে সুদৃঢ় করতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ছাড়া কোনও দেশের অগ্রগতি সম্ভব নয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকা দেশগুলি উন্নত দেশ হিসাবে বিবেচিত হয়। প্রজ্ঞাভবনে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দ্বিতীয় বছরের জন্য ডিএনএ ক্লাবের কার্যক্রম নিয়ে এক প্রশিক্ষণ শিবিরের উদ্বোধন করে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশমন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা বলেন, এ ধরনের প্রশিক্ষণ শিবির জেলা ও মহকুমাস্তরে আয়োজন করতে হবে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দপ্তরের সচিব তথা ত্রিপুরা বায়োটেকনোলজি কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ড. কে শশীকুমার। অনুষ্ঠানে ডিএনএ ক্লাবের প্রথম বছরের কাজের অগ্রগতি মূল্যায়নের মাধ্যমে চল্লিশটি বিদ্যালয়ের তেইশজন শিক্ষকশিক্ষিকাকে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। উল্লেখ্য, ত্রিপুরা বায়োটেকনোলজি কাউন্সিল রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিকে বিজ্ঞান বিষয়ক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য ডিএনএ ক্লাব প্রকল্পে আর্থিক অনুদান ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত ১৭২টি বিদ্যালয়কে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চল্লিশটি বিদ্যালয়কে ডিএনএ ক্লাবের কার্যক্রমের জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ে পঁচিশ হাজার টাকা করে মোট দশ লক্ষ টাকা ি আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজ্যে নতুন পঞ্চাশটি বিদ্যালয়কে ল্যাবরেটরি বিষয়ক যন্ত্রপাতি কেনা এবং বিভিন্ন জৈব বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য আর্থিক অনুদান ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ডিএনএ ক্লাব প্রকল্পে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বাটারফ্লাই গার্ডেন নির্মাণ, স্পেরো হাউস নির্মাণ সহ অন্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বায়োটেকনোলজি দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা তথা ত্রিপুরা বায়োটেকনোলজি কাউন্সিলের সদস্য সচিব অঞ্জন সেনগুপ্ত। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য সচিব বিশু কর্মকার, সিনিয়র সায়েন্টেফিক অফিসার সুশান্ত বণিক প্রমুখ। এই প্রশিক্ষণ শিবিরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে চল্লিশটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, টিচার্স কো-অর্ডিনেটর ও ছাত্রছাত্রী অংশ নেন।