বয়সবৃদ্ধিতে প্রিয়জনের | স্মৃতিশক্তি হ্রাস, কী করবেন ?

 বয়সবৃদ্ধিতে প্রিয়জনের | স্মৃতিশক্তি হ্রাস, কী করবেন ?
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

ডিমেনশিয়া কী ?

ডিমেনশিয়া কী ?
ডিমেনশিয়া আসলে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া। স্মৃতিশক্তি হ্রাস ডিমেনশিয়ার একটি উদাহরণ। অ্যালঝাইমার্স হল ডিমেনশিয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ এবং এটি এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা।বয়সজনিত কারণ এবং জেনেটিক কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। ব্রেনের স্নায়ু ধীরে ধীরে শুকিয়ে যেতে থাকে। এর ফলে মেমোরি কমে যেতে থাকে। একেই বলে ডিমেনশিয়া।শুধুই কি বয়সজনিত কারণে এই রোগ হয়ে থাকে?মূলত দুই ধরনের ডিমেনশিয়া দেখা যায়।বার্ধক্যজনিত কারণে একপ্রকার ডিমেনশিয়া হয়ে থাকে।আবার কারও কারও ক্ষেত্রে বংশগত ডিমেনশিয়াও দেখা দিতে পারে। আগে পূর্বপুরুষদের ছিল, পরবর্তী প্রজন্মের হতে পারে। এটা আরেক ধরনের ডিমেনশিয়ার মধ্যে পড়ে। এছাড়া বিভিন্ন সেকেন্ডারি কারণ যেমন কোনও স্ট্রোক পেশেন্টের স্নায়ু ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যায়, শুকিয়ে যেতে থাকে। এটা যেমন এক ধরনের। তেমনই কারও যদি বারংবার মাথায় চোট আঘাত লাগে, সে ক্ষেত্রেও ধীরে ধীরে ডিমেনশিয়া ডেভেলপ করে। এরকমই কিছু কিছু ইনফেকশন থেকে পরবর্তীকালে ডিমেনশিয়া হয়।এছাড়াও ডিমেনশিয়ার আরও অনেক কারণ আছে। ডিমেনশিয়ার কি কোনও প্রকারভেদ আছে ?হ্যাঁ, সাধারণত বলা হয়ে থাকে অ্যালঝাইমার্স। এই রোগটা ধীরে ধীরে ভুলে যাওয়া থেকে শুরু হয়। তারপর তা আরও বাড়তে থাকে। রোগীর ব্যবহারে পরিবর্তন আসে। তারপর মস্তিষ্কের সমস্ত কার্যকলাপে এর প্রভাব পড়ে। খুব ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে মানে সেটা আট দশ বছর ধরে হতে থাকে।এছাড়াও বিভিন্ন রকম ডিমেনশিয়াতে আরও অন্যান্য রকম উপসর্গও দেখা দেয়। কিছু কিছু ডিমেনশিয়া ব্যবহারিক দিক দিয়ে শুরু হয়। যেমন—রোগী খুব রেগে যায়, উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ভাবনা-চিন্তা কিংবা একাগ্রতায় ঘাটতি দেখা দেয়।এটাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয়ে থাকে ফ্রন্টো-টেম্পোরাল ডিমেনশিয়া। এতে মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল নর এবং টেম্পোরাল লোবের প্রধান পাশা কা ভূমিকা থাকে। কোনও জিনিস ডিমে হাতে ধরলে হাত কাঁপে। একে বলে পারকিনসন ডিজিজ ডিমেনশিয়া সম্প্রি বা লিউ বডি ডিমেনশিয়া।এর পাশাপাশি এরকম বিভিন্ন ধরনের ডিমেনশিয়া আছে।সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে, কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর ডিমেনশিয়া রোগীর কার্যক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে—এই বিষয়ে কী বলতে চান ?একটা ইনফেকশনের পরেই একপ্রকার ডিমেনশিয়া ডেভেলপ করে। আজকাল এক ধরনের ডিমেনশিয়া দেখা যাচ্ছে যা কোভিডের পরে অনেক সময় ডেভেলপ হয়।সেটাকে আমরা “লং কোভিড সিম্পটম’ বলে থাকি। দীর্ঘদিন কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর এই উপসর্গগুলো আসে। এক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তার ক্ষমতা খানিকটা ভোঁতা হয়ে যায়। পুরোপুরি ডিমেনশিয়া না হলেও মাইল্ড ডিমেনশিয়া থাকে।কোন বয়সের পর থেকে এই ধরনের সমস্যা আসতে পারে ?অ্যালঝাইমার্স রোগটা বছর ষাটের পর থেকে দেখা দেয়। কিন্তু যদি জেনেটিক প্রবলেম থাকে তবে আর্লি স্টেজেও হতে পারে। সাধারণত ষাট- সত্তর বছরের ওপরেই এই ধরনের সমস্যাগুলো দেখা দেয়।আগে থেকে এই রোগের লক্ষণ কি বোঝা সম্ভব?খুব ভালভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায় কিছু কিছু লক্ষণ খুব আগে আসে। যেমন কিছু কিছু কাজে ভুল হওয়া। প্রতিদিনকার যে কাজগুলো একজন মানুষ করছেন সেই কাজে কিছু কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। অনেক সময় দেখা যায়, কোনও জিনিস কোথাও রেখে অনেকেই ভুলে যান। অনেকসময় এই ধরনের রোগীদের একটা কথা সকালে বললে বিকেলে তারা ভুলে যান। এই ধরনের উপসর্গগুলো খুব আলি স্টেজে আসে। অনেক সময় দেখা যায়, কাউকে টাকা দিয়ে ভুলে যান অনেকেই।এই ধরনের মাইল্ড সিম্পটম কিন্তু শুরুর দিকে পাওয়া যায়।এভাবে চলতে চলতে একটা সময়ে রোগী দেখা গেল নিজের নামই মনে করতে পারছেন না। এমন পর্যায়েই পৌঁছে যায়। বাড়ির লোককে চিনতে না পারা, কোথায় গেছেন মনে করতে পারেন না। এমন পর্যায়ে বিষয়টা পৌঁছে যায়।চিকিৎসা পদ্ধতি কেমন হয় ? ডিজেনেরেটিভ ডিমেনশিয়া মানে বয়সজনিত কারণে নার্ভ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা যাদের থাকে সেই ডিমেনশিয়াতে মেডিসিন দিলেও খুব একটা উন্নতি হয় না। এরকম হয় না যে স্মৃতিশক্তি পুরো আগের মতো ফিরে পেল। তবে যেই ডিমেনশিয়াগুলো সেকেন্ডারি, যেগুলোর কোনও আলাদা কারণ আছে, মানে স্ট্রোকের কারণে ডিমেনশিয়া বা ইনফেকশনের পরে ডিমেনশিয়া। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসা করে জায়গার উন্নতি করা সম্ভব। যার স্ট্রোকের পর এরকম হয়, তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের মেডিসিন আগে থেকে দেওয়া হবে যাতে স্ট্রোক বারংবার না হয়। হরমোনাল ইমব্যালেন্স, ভিটামিনের অভাবেও এরকম হতে পারে। এই বিষয়গুলো টেস্ট করে নেওয়া হয়, এগুলোর ক্ষেত্রে কোনও ঘাটতি আছে নাকি।এরকম ক্ষেত্রে থাকলে ডিমেনশিয়ার চিকিৎসা করা সম্ভব।জেনেটিক বা বয়সজনিত যে কারণেই ডিমেনশিয়া হোক না কেন, আগে থেকে সতর্কতা কীভাবে অবলম্বন করা প্রয়োজন? যদি বংশগত থাকে, তাহলে বিভিন্ন রকম জেনেটিক স্টাডি করা সম্ভব। পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে সেই জিন যদি পজিটিভ পাওয়া যায় তাহলে ধরে নেওয়া যায় পরবর্তী জেনারেশনের মধ্যেও সেটা ডেভেলপ হতে পারে। তাহলে যে মাত্রায় রোগটা বাড়তে পুরোপুরি প্রতিরোধ করাটা মুশকিল। সম্প্রতি নানা রকম ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে।তবে সেগুলো সবই পরীক্ষামূলক পর্যায়ে চলছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.