বর্ষণে আরও বেহাল জাতীয় সড়ক

 বর্ষণে আরও বেহাল জাতীয় সড়ক
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

ভারী বর্ষণ মেঘালয়ে। সেসঙ্গে দক্ষিণ আসামের বিভিন্ন অংশেও চলছে অবিরাম বৃষ্টি। ফলে জাতীয় সড়ক নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা বেড়েছে। তার মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে জাতীয় সড়ক সংস্কার ও পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে। বিপদ সঙ্কুল সড়ক দিয়ে শনিবার সকালের দিকে অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে কয়েকটি ছোট গাড়ি চলাচল করেছে। তবে পণ্যবাহী যান সহ ভারী কোনও যানবাহন চলাচলের প্রশ্নই উঠেনি ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে। ফলে ত্রিপুরা সহ মিজোরাম, আসামের দক্ষিণাংশ এবং মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে সড়ক পথে। পাশাপাশি টানা প্রবল বর্ষণের জেরে পাহাড়ি রেলপথ আবারও বিপর্যস্ত হওয়ার খবর মিলেছে।

ফলে জাতীয় সড়কের বিভিন্ন অংশে পণ্যবাহী যানবাহন দাঁড়িয়ে রয়েছে। দাঁড়িয়ে রয়েছে বেশকিছু যাত্রীবাহী যানবাহনও। মেঘালয়ের পূর্ব জয়ন্তীয়া পাহাড় জেলায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে বেশকিছু যানবাহন রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব যানবাহনের মধ্যে গুয়াহাটি এবং শিলংমুখী যানবাহনের পাশাপাশি উল্টোমুখী যানবাহনও দাঁড়িয়ে রয়েছে। এর মধ্যে ত্রিপুরায় আসার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা জ্বালানি তেল, গ্যাসবাহী ট্যাঙ্কার ও বুলেট সহ বিভিন্ন অত্যাবশ্যকীয় পণ্যবোঝাই যানবাহন রয়েছে। এগুলির মধ্যে আম সহ বিভিন্ন ফল ও পেঁয়াজের মতো পচনশীল সামগ্রী রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব যানবাহনের সঙ্গে যুক্ত চালক, সহ চালক অথবা খালাশি সহ অন্যদের পড়তে হয়েছে চরম দুর্ভোগে। একইসঙ্গে সড়কপথে যাত্রা করা যাত্রীদেরও বর্ণনাতীত দুর্ভোগ সইতে হয়েছে অথবা হচ্ছে বলে খবর।

জানা গেছে, বিভিন্ন ছোট গাড়ি করে মাত্রাছাড়া ভাড়া গুনে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছেছেন যাত্রীদের বড় অংশ। অনেকের সড়কের উপর বাসে কাটাতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। বেহাল সড়কের কারণে তুলনায় অর্থবলহীনদের বেশি বিপাকে পড়তে হয়েছে। বিপদগ্রস্ত এলাকায় থাকা এক বাসকর্মীর বক্তব্য অনুসারে ৫ টাকা মূল্যের বিস্কুটের প্যাকেট কিনতে হচ্ছে ২০ টাকায়। বিপদগ্রস্ত এলাকায় প্রশাসনের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে খবর।
এর মধ্যেও ঝুঁকি নিয়ে দু একটি ডজার দিয়ে বিপদ সঙ্কুল জাতীয় সড়ক স্বাভাবিক করার কাজ চলছে। তবে মূলত সড়ক থেকে সংলগ্ন পাহাড় বেয়ে নেমে আসা পাথর সরানোর কাজ চলছে। স্থানীয় সূত্রের খবর অনুসারে টানা প্রবল বর্ষণের কারণে সড়ক স্বাভাবিক করার কাজে সেভাবে হাতই দেওয়া যাচ্ছে না। বৃষ্টি না থামলে এই কাজ করা যাবে না বলে অনেকের বক্তব্য। মেঘালয়ের পূর্ব জয়ন্তিয়া, পাহাড় জেলার ক্যালেরিহাট, সোনাপুর, লোমশুঙ, লঙশিলনঙ, রাতাছড়া ইত্যাদি এলাকায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক বেহাল হয়ে আছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই সড়ক ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারমধ্যেও শুক্রবার সকালের দিকে গোটাকয় চার চাকার হালকা যানবাহন চলেছে।

দুপুরের আগেই অবশ্য প্রশাসনের উদ্যোগে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। মেঘালয়ের আন্তঃরাজ্য সীমানা রাতাছরা সংলগ্ন আসামের মালিডহর, কালাইন, কাটিগড়া ইত্যাদি এলাকায় সড়কের হালও খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে খবর। তবে এসব এলাকায় যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কোনও খবর নেই। এমনিতে মেঘালয়ে জাতীয় সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় আসামের উল্লেখিত এলাকায় খুব বেশি যানবাহন চলাচল করছে না। এসব এলাকায় জাতীয় সড়ক স্বাভাবিক হওয়ার আশায় পণ্যবাহী যানবাহন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বহু চালক ও সহচালক। এদিকে, টানা প্রবল বর্ষণের জেরে উত্তর কাছাড় পাহাড় ঘেরা পাহাড়ি রেলপথে শুক্রবার নতুন করে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে জানা গেছে। আপাতত রোদ ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে জাতীয় সড়ক ও রেলপথ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.