কুমিল্লার স্বনামধন্য নাট্যদল যাত্রিকের আমন্ত্রণে ত্রিপুরা থিয়েটারের পরিবেশনায় প্রখ্যাত সাহিত্যিক (একুশে পদক প্রাপ্ত) সেলিনা হোসেনের গল্প অনুসরণে বিভু ভট্টাচার্যের নাট্যরূপ এবং নির্দেশনায় কুমিল্লা টাউন হলে (বীরবিক্রম গণ পাঠাগার ও মিলনায়তন) উপচে পড়া দর্শকের সামনে গত ৯ সেপ্টেম্বর মঞ্চস্থ হল নাটক ‘মতিজানের মেয়েরা’। বিষয় বাংলাদেশের প্রান্তিক গরিব মহিলাদের হাহাকারের জীবন। কাহিনিটি সংক্ষেপে এই রকম। মতিজানের মা-বাবা খুবই গরিব। শহরেই থাকে। মেয়ের বিয়ে হয় গ্রামে। বিধবা মা আর ছেলে। ছেলে শহরে কাজ করে। মায়ের দৈনন্দিন কর্তৃত্ব আর প্রতিবেশীর কুমন্ত্রণায় শিক্ষিত বউ এই সংসারের শৃঙ্খলায় বেমানান। অন্যদিকে মায়ের চাপে ছেলে আবুল বাড়ি আসতে উৎসাহ হারিয়ে নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে শহরে পরনারী আসক্ত হয়। নানা টানাপোড়েনের পর বাজার-সদাই দিতে আসা সদা হাস্যময় আবুলের বন্ধু লোকমানের সঙ্গে মতিজানের ভাব জমে ওঠে। তারই ঔরসে মতিজানের দু’টি মেয়ে হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাশুড়ি ছেলেকে দিয়ে তালাকের ব্যবস্থা করবে বলে ঘাষণা দেওয়ায় মতিজানই দু’টি মেয়ে সন্তানকে নিয়ে মাতাল লম্পট স্বামীকে তিন তালাক দিয়ে শাশুড়িকে চ্যালেঞ্জ করে বলে, ‘যান দেখি কী করতে পারেন!’ উদ্ঘাটিত হয় নাটকের মুখ্য উদ্দেশ্য। দেখা যায় অত্যন্ত পরিশিলিত নৃত্যের মাধ্যমে মহিলাদের আগলভাঙার অসাধারণ সংঘবদ্ধ প্রয়াস। মতিজানের মেয়েরাও সহযোগী হয়। এ এক অসাধারণ নির্মাণ।
‘ইনিয়ে বিনিয়ে নয় প্রতিবাদ করো সজোরে।’ কারণ নারীর স্বাতন্ত্র্য উপেক্ষিত। শাশুড়ি দ্বারা নির্যাতিতা ছেলের বউয়ের কাছে দাবি ছিল আত্মনিবেদনকারী অধস্তনতা। স্বাধীনচেতা হলেই মুশকিল। মহিলারা কি তালাক দিতে পারে ? “মাইয়ালোক হইয়া মাইয়া লোকের শত্রুতা কইরেন না’, ঘোর ভাঙে মতিজানের কথায়। কিন্তু দিন দিন প্রতিদিনের মানসিক পীড়ন যে অসহ্য। তাই সতীত্ব থেকে নারীর বিচ্যুতি এখানে জলো হয়ে ওঠে। মানুষের অর্থনৈতিক বিপন্নতা ছাড়াও সামাজিক নানা অসংগতি তার জীবনের সমস্ত মূল্যবোধকে যেন তছনছ করে দেয়। আর গল্পের বাস্তবতা, পটভূমি, সম্পর্কের মোচড়, লজ্জাহীনতা দর্শককে এক বিপন্নতার দিকে ঠেলে দেয়। অস্বস্তিকর অথচ বাস্তব এক পরিবেশ এই উপমহাদেশের প্রান্তিক মহিলাদের স্থিতাবস্থার শেকড়কে টান মারতে উদ্যত হয়। আপাত ভাবে সরল ন্যারেটিভ মনে হলেও নাটকটিতে রয়েছে নানা স্তরভেদ আর বিন্যাসের তারতম্য। বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে লেখা কাহিনিটি যেন অনায়াসেই একাকার হয়ে সমগ্র উপমহাদেশের লক্ষ কোটি মহিলার প্রতিনিধিত্ব করে, লাঞ্ছনার শৃঙ্খল ভাঙতে উদ্যোগী হয়, দেশের সীমানা অতিক্রম করে হয়ে ওঠে সর্বজনীন।
কুমিল্লা টাউন হলে উপচে পড়া দর্শক নিজের দর্পণে যেন পরিচিত সমাজের বাস্তব ছবি দেখে সেলিনা আপার লেখা, বিভু ভট্টাচার্যের নাট্যরূপ, নির্দেশনা আর ত্রিপুরা থিয়েটারের শিল্পীদের অত্যন্ত পরিশ্রমসাধ্য আর আন্তরিক পরিবেশনায় মুগ্ধ হয়ে মুহুর্মুহু করতালিতে আমন্ত্রিত দলকে অভিনন্দিত করেন। নাট্যাঙ্গনে কুমিল্লা টাউন হলের এ ছবি ভোলার নয়। দেশকাল পাত্র ভেদে নাট্যশিল্পী আর দর্শক মিলেমিশে যেন গান গেয়ে ওঠে ‘উই আর ইন দ্য সেম বোট ব্রাদার’।
ডায়াবেটিস বা মধুমেহ আজকের সমাজে একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে পরিচিত।এই রোগটি ধীরে ধীরে বাড়ছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষাসূচি এগিয়ে আনা হবে।২০২৫ সালে রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মাধ্যমিক এবং…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠার পর রাজ্যের কৃষকদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সরকারের…
গুণ-বিচার পরে, আগে তো দর্শনধারী!এই আপ্তবাক্য আজকের ডিজিটাল জেট যুগে একেবারে সর্বাংশে সত্য। দর্শন অথে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ডবলইঞ্জিনের সরকারের ক্ষমতা ঠুনকো।কোনও প্রতিশ্রুতি পালন বা পদক্ষেপ নিতে পারছে না।অন্তত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস…
অনলাইন প্রতিনিধি :-সোমবার উত্তরাখণ্ডের গারওয়াল থেকে কুমায়ুন এর দিকে গন্তব্য ছিল বাসটির। বাসে তখন কমপক্ষে…