বাজারে আলুর মূল্যবৃদ্ধি, চড়ছে সবজির দামও!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-শীতের
অগ্রহায়ণ মাস শেষের দিকে চলে এসেছে।বুধবার অগ্রহায়ণের ২৫ এবং ডিসেম্বরের ১১ তারিখ অতিক্রান্ত হয়েছে।শীতের পৌষ মাস দোরগোড়ায়। অথচ বিস্ময়কর হলো, শীতের সময়ের আলু, পেঁয়াজ সহ শাক সবজির মূল্য নিচে নামছে না।অন্যান্য বছর অগ্রহায়ণের এই সময় আলু,পেঁয়াজ,শাক সবজির মূল্য কমে তলানিতে চলে আসত।তাতে ক্রেতারা বাজারে গিয়ে আলু ও শাকসবজির মূল্য যাচাই করে স্বস্তি পেতেন।সস্তা আলু,শাক সবজি ক্রেতারা ব্যাগ ভরে বাড়িতে নিয়ে আসতেন। কিন্তু এবার শীতের অগ্রহায়ণ মাসের শেষের দিকেও আগরতলা সহ রাজ্যের বাজারগুলিতে আলু ও শাকসবজির মূল্য এখনও খুব চড়া।বাজারে মূল্য যেন কিছুতেই কমছে না।তাতে শীতের বাজারেও ক্রেতাসাধারণের নাভিশ্বাস দূর হচ্ছে না।শীতের পৌষ মাসের সামনে বাজারে আলু, পেঁয়াজ ও শাকসবজির মূল্য খুব চড়া থাকায় বাজারে গিয়ে ক্রেতারা গ্রীষ্মের সময়ের মতোই মূল্য শুনে বিস্ময় প্রকাশ করছেন। বাজারে আলু,পেঁয়াজ, শাক সবজিতে শীতের প্রভাব কবে পড়বে,মূল্য কমে কবে তলানিতে আসবে তা ব্যবসায়ীরাও সঠিকভাবে কিছু জানাতে পারছেন না। বুধবার সন্ধ্যায় মহারাজগঞ্জ বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে আলু, পেঁয়াজ, শাকসবজির স্থানীয় জোগানে এখনও সংকট থাকায় বাজারে মূল্য নিচে নামছে না।আসাম, শিলং, পশ্চিমবঙ্গ, বেঙ্গালুরু ইত্যাদি রাজ্য থেকে আলু, পেঁয়াজ শাকসবজি এখনও আসছে।শুধু আসছেই নয়, ব্যাপকভাবেই আসছে। পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, বহি:রাজ্য থেকে কম মূল্যে কিনে আনলেও সেই সব আলু, পেঁয়াজ শাকসবজির পরিবহণ খরচ ও আনুষাঙ্গিক খরচ অনেকটা বেড়ে যায়। তাই শীতের এই সময়েও বাজারে চড়া মূল্য বহাল রয়েছে বলে সবজি ব্যবসায়ীদের দাবি।এখন প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের স্থানীয় উৎপাদন কোথায়।কেন শীতের সময়েও বাজারে স্থানীয় আলু শাক সবজির জোগানে এত ঘাটতি রয়েছে। উৎপাদন ও জোগান চাহিদা মতো করতে রাজ্য কৃষি দপ্তর কী করেছে – এই প্রশ্নটা জোরালো ভাবেই উঠছে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ক্রেতা ও বিভিন্ন মহলেই। বাজারে স্থানীয় আলু, শাক সবজির চাহিদা মতো জোগান না থাকায় যে বাজারে চড়া মূল্য বহাল রয়েছে তাতে বাজারে গিয়ে ক্রেতার পকেট ফাঁক হয়ে যাচ্ছে। এতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। কৃষি দপ্তরের ব্যর্থতা দপ্তর স্বীকার না করলেও দপ্তরের কোনও কোনও আধিকারিক আগষ্ট মাসের ভয়াবহ বন্যায় কৃষিজমির ক্ষতি হওয়ায় শীতের স্থানীয় শাকসবজির উৎপাদনে বিলম্বিত হচ্ছে। তাই বাজারে সেই কারণে এখনও চাহিদামতো জোগান নেই। কিছু দিনের মধ্যে বাজারে স্থানীয় জোগান বাড়বে বলে কৃষি দপ্তরের দাবি। তবে বাজারে আলু, পেঁয়াজ, সবজির মূল্য কেন এখনও খুব চড়া সেই বিষয়ে মূল্য যাচাইয়ে ও মূল্য কমাতে রাজ্য সরকার, প্রশাসন, কৃষি দপ্তর, খাদ্য দপ্তর, এনফোর্সমেন্ট টিম সকলেই নির্লিপ্ত ও উদাসীন ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ। আর সেই কারণে বাজারে একাংশ অসাধু ব্যবসায়ী নানা অজুহাতে যথেচ্ছ মূল্য বৃদ্ধি করে চলেছে বলেও ক্রেতাসাধারণের অভিযোগ। বাজারে আলুর মূল্য এখন খুব চড়া। স্থানীয় উৎপাদিত আলুর বাজারে জোগান না থাকায় বহি:রাজ্য থেকেই আলু আসছে। বুধবার পাঞ্জাবের জলন্ধরের নতুন আলু বটতলা বাজারে খুচরোতে প্রতি কিলো বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়।লেক চৌমুহনী, দুর্গা চৌমুহনী, জিবি বাজার, অভয়নগর বাজার এমবিটিলা বাজার, মঠ চৌমুহনী বাজার সহ আগরতলা ও তার পার্শ্ববর্তী বাজারগুলিতে জলন্ধরের আলু খুচরোতে প্রতিকিলো ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মহারাজগঞ্জ বাজারে খুচরোতে প্রতিকিলো ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মহারাজগঞ্জ বাজারে এই আলু পাইকারিতে প্রতিকিলো ৪১-৪২ টাকায় বুধবার বিক্রি হয়েছে। আগরতলায় জলন্ধরের আলু খুচরোতে ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হলেও খোদ স্থানীয় জলন্ধরে এই আলু প্রতিকিলো ২৬-২৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে মহারাজগঞ্জ বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী সূত্র জানিয়েছে। আগ্রা থেকেও রাজ্যে আলু আসছে। অনেকটা সাদা রংয়ের মতো আগরতলায় আগ্রার আলু খুচরোতে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের ধূপগুড়ি থেকে পুরনো জ্যোতি আলু এখন না এলেও সেই আলু ব্যবসায়ীদের কাছে রয়েছে খুচরোতে ৪৫ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে বাজারে এখন জলন্ধরের নতুন আলুর জোগান সবচেয়ে বেশি। বাজারে পেঁয়াজের মূল্যও চড়া হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ৬৫-৭০ টাকায় প্রতিকিলো পেঁয়াজ খুচরোতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকিলো ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকায়। বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কিলো। গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কিলো। ক্ষিরাই বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কিলো। শীতে বাজারে শুধু মূল্য কমেছে কাঁচা মরিচের।৫০-৮০ টাকার মধ্যে প্রতিকিলো কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে।