বাজারে বাংলাদেশি বীজের রমরমা, আইসিএআরের অনুমোদন হারালো ত্রিপুরা কৃষি কলেজ।

 বাজারে বাংলাদেশি বীজের রমরমা, আইসিএআরের অনুমোদন হারালো ত্রিপুরা কৃষি কলেজ।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি || রাজ্য কৃষি মহাবিদ্যালয়ের টানা দুবছর ধরে অনুমোদন নেই। এমনকি রাজ্যের একমাত্র এগ্রিকালচার কলেজের নেই কোনও নিয়মিত প্রিন্সিপাল । কারণ এই কৃষি মহাবিদ্যালয়ের প্রায় দুই বছর আগেই নানা ত্রুটির জন্য অনুমোদন বাতিল করে দিয়েছে ইণ্ডিয়ান কাউন্সিল করে দিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচার রিসার্চ(আইসিএআর) নতুন দিল্লী।রাজ্যের একমাত্র কৃষি মহাবিদ্যালয়ে পঠন- পাঠনের ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই। ছাত্রছাত্রী অনুপাতে নেই শিক্ষক শিক্ষিকা।শুধু তাই নয়, নেই উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর গ্রন্থাগার ও পরীক্ষাগার। তার খেসারত দিতে হচ্ছে কলেজে ছাত্রছাত্রীদের। কারণ একটি অনুমোদনহীন কৃষি কলেজের বিএসসি এগ্রিকালচার স্নাতক ডিগ্রি সার্টিফিকেটের কোনও মূল্য নেই। তাই এই কলেজ থেকে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা এমএসসি এগ্রিকালচার এবং এমএসসি হর্টিকালচার বিষয়ে মাস্টার ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হতে পারছেন না।ফলে পড়ুয়াদের সরকারী ও বেসরকারী ক্ষেত্রে চাকরি পর্যন্ত হচ্ছে না।অভিযোগ, রাজ্য সরকারের ও কৃষি দপ্তরের দায়সারা মনোভাব এবং তুঘলকি সিদ্ধান্তের জন্যই কৃষি মহাবিদ্যালয়ের অনুমোদন বাতিল হয়ে গিয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, কেবলমাত্র ত্রিপুরা কেন্দ্ৰীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের জন্য কৃষি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতনভাতা প্রদান করা যাচ্ছে।তবে আইসিএআরের কোনও অনুমোদন না থাকায় সমস্যায় জর্জরিত ছাত্রছাত্রীরা। যদিও ২০০৭ সালের ২৪ আগষ্ট প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের হাত ধরে রাজধানী আগরতলা সংলগ্ন লেম্বুছড়াতে কৃষি, মহাবিদ্যালয়ের সূচনা হয়।এরপর ধাপে ধাপে পঠন-পাঠনের পরিকাঠামো ও উন্নয়ন চলে। ২০১১ সালের ১৯ জুলাই কৃষি কলেজে বর্তমান বহুতল ও নির্মাণ এবং উদ্বোধন হলো। কিন্তু ২০২১ সালে এসে আইসিএআরের অনুমোদন বাতিল হয়ে যায়। অভিযোগ, ২০১৯ সাল থেকে রাজ্য সরকারকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছিল কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তবে কোনও এক অদৃশ্য কারণে এতে কর্ণপাত করেনি সরকার। শুধুমাত্র ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনে ছাত্রছাত্রী ভর্তিতেই সীমাবব্ধ ছিল রাজ্য সরকার। যার ফলে এখন বিপাকে পড়েছেন ছাত্রছাত্রীরা।সরকারের তুঘলকিপনার জন্য ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণ
অনিশ্চিত। কারণ একটি অনুমোদনহীন কলেজে বছর বছর ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা বিশ্বাসঘাতকতা। কারণ পড়ুয়াদের কাছ থেকে মোটা
অঙ্কের অর্থ আদায় পঠন- পাঠনের নামে চলছে। অবাক করার বিষয় হলো কলেজের কোনও অনুমোদন নেই।এদিকে, কৃষি মহাবিদ্যালয়ের প্রিন্সিপিাল অধ্যাপক ড.তপন কুমার মাইতির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও স্বীকার করেন ২০২১ সাল থেকে আইসিআরের অনুমোদন নেই।যদিও তার তরফে ইতিমধ্যে কয়েকবার অনুমোদনের আবেদন করা হয়েছে।বর্তমানে কৃষি কলেজে পরিকাঠামোগত কোনও সমস্যা নেই।এমনকী নতুন নিয়মে মাস্টার ডিগ্রি কোর্সে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তিতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।এদিকে, রাজ্যের বাজারে বাংলাদেশি শাক-সবজির বীজে ছেয়ে গেছে। একাংশ ব্যবসায়ীদের হাত ধরে সীমান্তের কাঁটাতারের উপর দিয়ে রাজ্যে আসছে বাংলাদেশি শাকসবজির বীজ।কৃষি ও উদ্যান দপ্তরের উদাসীনতার সুযোগ নিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বাংলাদেশি বীজ এনে রাজ্যের কৃষকদের মধ্যে বিক্রি করছেন।কৃষকরা অবৈধভাবে রাজ্যে আসা বাংলাদেশি শাক-সবজি বীজ ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি স্থানীয় শাসকদলীয় নেতাদের দলবাজির কারণে প্রকৃত কৃষকরা কৃষি ও উদ্যান দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না। কৃষক নয়, এমনকী যাদের কোনও চাষের জমি নেই তাদের নামে বরাদ্দ হচ্ছে সরকারী প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা। একইভাবে কৃষক নয় এমন ব্যক্তিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রধানমন্ত্রীর কিষান সম্মান নিধির টাকা ঢুকিয়ে কমিশন হাতিয়ে নিচ্ছে একাংশ শাসকদলীয় নেতা। এ ধরনের ঘটনা নিয়ে গ্রামাঞ্চলে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা চলছে। প্রকৃত কৃষক মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এ ধরনের ঘটনার রাশ না টানলে কৃষি ও উদ্যান দপ্তরের উনয়নমূলক পরিল্পনা সাফল্যের মুখ দেখবে না ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.