বামেদের ৪০ সহ একদিনে ৬৩ মনোনয়ন জমা পড়ল
গত ২১ জানুয়ারী থেকে এ অবধি রাজ্যে ত্রয়োদশ বিধানসভা নির্বাচনে মনোনয়ন জমা পড়ল ৭৬টি। শুক্রবার মোট মনোনয়ন জমা পড়ে ৬৩ খানা ৷ মনোনয়ন জমা দেওয়ার বাকি আর একদিন। শেষ দিন, সোমবার। শুক্রবার মনোনয়ন জমা দিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন চৌধুরী সহ তার দলের মোট ৩৮ জন। সাব্রুমে বিশাল মিছিল করে মহকুমা শাসকের দপ্তরে গিয়ে এ দিন মনোনয়ন দিলেন সাব্রুম কেন্দ্রের প্রার্থী জিতেন চৌধুরী ও মনু কেন্দ্রের প্রার্থী প্রভাত চৌধুরী।
সিপিএমের চার প্রার্থী এবং বাধারঘাটে ফরোয়ার্ড ব্লকের একমাত্র প্রার্থী এ দিন মনোয়ন জমা দেননি। প্রার্থী পরিবর্তনের কারণে জিরানীয়া মহকুমার দুইটি বিধানসভা কেন্দ্রের খয়েরপুর ও মান্দাইয়ের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিলেন। এ দিন সন্ধ্যায়….
সিপিএম মজলিশপুরে তাদের প্রার্থী পরিবর্তন করেছে। পূর্বে ঘোষিত প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে’র জায়গায় এবার সিপিএমের প্রার্থী হবেন সঞ্জয় দাস। পেশায় শিক্ষক সঞ্জয় দাস নবাগত…প্রার্থী। অর্থাৎ বামেদের প্রার্থী তালিকায় ন নবাগতের সংখ্যা আরও একজন বাড়লো। এ দিন খোয়াই মহকুমায় খোয়াইয়ের
বিদায়ী বিধায়ক নির্মল বিশ্বাস, রামচন্দ্রঘাটের প্রার্থী রঞ্জিত দেববর্মা, আশারামবাড়ির প্রার্থী অঘোর দেববর্মা মনোনয়ন দেননি। দলীয় সূত্রের খবর, শেষদিনে তারা মনোনয়ন দেবেন। বাধারঘাটে ফরোয়ার্ড ব্লক তাদের প্রার্থী এখনও চূড়ান্ত করতে পারেনি বলে খবর। প্রসঙ্গত, সবগুলি মহকুমা ও জেলা সফরেই বিশাল মিছিল করে বাম প্রার্থীরা মনোনয়ন দেন। আগরতলায়ও বড় মিছিল হয় এবং মনোনয়ন জমা দেন। খয়েরপুর, মান্দাইবাজার, বড়জলা ও প্রতাপগড়ের বামপ্রার্থী।মুখ্য নির্বাচনআধিকারিকের দপ্তরের খবর অনুযায়ী শুক্রবার সারা রাজ্যে যে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরের খবর অনুযায়ী শুক্রবার সারা রাজ্যে ৬৩টি মনোনয়ন জমা পড়ে তার মধ্যে সিপিএমের ৩৮টি মনোনয়ন রয়েছে। সিপিআই ১, আরএসসি ১, এসইউসি ৪, আমরা বাঙালির ১৩, টিপিপি ১, এনপিপি ১. সিপিআইএমএল ১ এবং তিন জন নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। প্রসঙ্গত, দুপুরে সাব্রুম মহকুমা শাসকের দপ্তরে মনোনয়ন দেওয়ার মিছিল থেকে জিতেন চৌধুরী বলেছেন, যারা এতোদিন ষাটে ষাট পাবে বলেছেন তাদের ষাটের শূন্যটা চলে যাবে। আমরা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত কুশাসনের সরকার পরাস্ত হবে। এই নির্বাচনে বামফ্রন্টের একার লড়াই নয়। রাজ্যের সব সংবিধানপন্থী, গণতন্ত্রপ্রেমী, উন্নয়নকামী, শান্তির পক্ষের যে মানুষ তাদের লড়াই এক জঙ্গলরাজের বিরুদ্ধে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই চান উন্নয়ন, শান্তি, সংবিধান সুরক্ষিত থাকে। তাই কুশাসনের পরাজয় ঘটবেই। পাঁচ খয়েরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী হিসাবে শুক্রবার মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বিধানসভার প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর। এ দিন তিনি রিটার্নিং অফিসার সন্তোষ দাসের হাতে তার মনোনয়নপত্র তুলে দেন। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে পবিত্র কর জয় নিয়ে আসা প্রকাশ করে বলেন, মানুষ প্রাণভরা ভালোবাসা দিচ্ছে। প্রচারে দারুণ সাড়া পেয়েছেন তিনি। পবিত্র কর বলেন, গত পাঁচ বছর দমবন্ধকর পরিস্থিতি ছিল রাজ্যে। ছিল না গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকার প্রয়োজনের অধিকার, কথা বলার অধিকার।
তিনি বলেন, সমস্ত প্রতিশ্রুতি ছিল ভাওতা ও ভুল। এর থেকে মানুষ পরিত্রাণ চাইছে। মানুষ চাইছে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা রুটি রোজগার। বিশেষ করে যুবসমাজের দুর্বিসহ অবস্থা তারা চায় কর্মসংস্থান। তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীদের অবস্থা কাহিল সরকারী স্কুল বেসরকারী হয়েছে, মহিলারা যখন তখন চলাফের করতে পারছে না। আগামীদিনে যা মানুষ পায়নি নির্বাচনে জয়ী হয়ে সেই সমস্ত বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। ১ নং সিমনা কেন্দ্রের বামফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী কুমুদ দেববর্মা এবং ৩নং বামুটিয়া কেন্দ্রের প্রার্থী নয়ন সরকার মনোনয়নপত্র মোহনপুর মহকুমা শাসক অফিসে জমা দেন। কুমুদ দেববর্মা বলেন, রাজ্যের মানুষ পাঁচ বছরের গণতন্ত্র বাক স্বাধীনতা ধ্বংসকারী এবং ভয়ের পরিবেশ থেকে মুক্ত হতে ২৩শে নির্বাচনে বামফ্রন্টকে ক্ষমতায় আনতে রাস্তায় মানুষ নেমে গেছে। মানুষ বুঝে গেছে ২০১৮-তে বিজেপি জোট সরকারকে ক্ষমতায় এনে কত ভুল করেছে। মানুষ বলছে উন্নয়ন দূরের কথা সমাজ অধঃপতনের দিকে চলে গেছে। মানুষ আওয়াজ তুলছে রাজ্যের শান্তির পরিবেশ রক্ষায় বামফ্রন্টকে ক্ষমতায় আনা প্রয়োজন। বামুটিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী নয়ন সরকার বলেন, এবারে নির্বাচন গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই। ১০০ শতাংশ নিশ্চিত বামুটিয়া এবং সিমনায় সিপিএম প্রার্থীর জয়ের সাথে সাথে রাজ্যেও বামফ্রন্ট ক্ষমতায় ফিরছে।