বারুণিঘাটে সবুজ জুটির ধুমধামে বিয়ে সাঙ্গ!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-পাত্রের নাম বট।পাত্রী অশ্বত্থ। মহাধুমধামে দুই যুগলের বিয়ে সম্পন্ন হলো রবিবার।বিবাহতিথিতে পাত্র- পাত্রীর বিয়ে হবে এটা তো স্বাভাবিক। এতে খবর হওয়ার কী আছে? খবর হয় বটে!
বট ও অশ্বত্থ দুটি বৃক্ষ। লাউগাংয়ের বারুণিঘাটে এদের জন্ম ও বেড়ে উঠা। ১৯৯৪ সালে সেখানকার গরিব চাষি রাখাল সোম এই দুটি বৃক্ষ রোপণ করেছিলেন। তার ইচ্ছা ছিল একদিন যখন বৃক্ষ দুটি বড় হবে উভয়কে বিয়ে দেবেন।কিন্তু তিনি তাদের বিয়ে দিয়ে যেতে পারেননি।তার আগেই পরলোক গমন করেন।
তার বংশধররা বহু বছর ধরে চেষ্টা করে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় অবশেষে রবিবার এই দুটি চিরযৌবনকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করেন। এই উপলক্ষে সেখানে কয়েকশ গ্রামবাসী সমবেত হন।তারা বিবাহ অনুষ্ঠানে আনন্দে মেতে উঠেন। বিবাহের সব রীতিনীতি আচার অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। পাত্রী সম্প্রদান থেকে শুরু করে ভুরিভোজ কোনও কিছুই বাদ ছিল না।গাছেরও প্রাণ আছে আবিষ্কার করেছিলেন বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু।প্রাণ আছে, গাছ বেড়েও উঠে। কিন্তু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নাড়াতে পারে না। ফলে কুঞ্জে মালাবদল কিংবা দৃষ্টি মেলানো এসব রোমান্টিকতা বর ও কনে যাত্রীদের প্রভাবিত না করলেও বট ও অশ্বত্থ নিজেরা অগোচরে হয়তো আগেই সেরে নিয়েছে প্রেমপর্ব।
দুই বৃক্ষের বিবাহ অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণ খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে একদল মহিলার কথোপকথন শোনা যাচ্ছিল। ‘বাপের জন্মেও শুনিনি গাছের বিয়ে। আরও যে কত কিছু দেখুম।’
কেন দুটি বৃক্ষের মধ্যে বিয়ে হলো? লাউগাংয়ের বিশিষ্ট সমাজসেবী বিশ্বজিৎ মুহুরী বলেন, বারুণিঘাটে দর্শনার্থী ও পথচারীদের বৃক্ষছায়ায় বিশ্রামের সুবিধা করে দিতে এই দুটি বৃক্ষ রোপণ করেছিলেন রাখাল সোম। পরবর্তীতে গাছ দুটি যখন বড় হয় তখন বহু মানুষ এই গাছ দুটির নিচে ছায়ায় বিশ্রাম করতে ছুটে যায় সবসময়। এতে রাখাল সেনের অনেক মনোস্কামনা পূর্ণ হয়। রাখালবাবুর বিশ্বাস ছিল এই দুটি ভিন্নধর্মী বৃক্ষের মধ্যে বিবাহ না হলে তাদের পরিবারের অমঙ্গল হবে।তাই তার জীবদ্দশায় সম্ভব না হলেও আমরা সবাই মিলে তার ইচ্ছা পূরণ করেছি।