বার্ষিক পরীক্ষার সূচি নিয়ে শিক্ষা দপ্তরের রসিকতায় চরম ক্ষোভ!!

 বার্ষিক পরীক্ষার সূচি নিয়ে শিক্ষা দপ্তরের রসিকতায় চরম ক্ষোভ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের
সরকারী স্কুলে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ হতেই রাজ্যের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উপর জুলুমের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষানুরাগী মহলে। পাশাপাশি পরীক্ষার সূচিটি মোটেও বাস্তবসম্মত এবং বিজ্ঞানভিত্তিক হয়নি বলেও অভিযোগ। কেননা পরীক্ষা শেষ হওয়ার নয়দিনের মধ্যে উত্তরপত্র মূল্যায়ন সহ নম্বরপত্র তথা মার্কশিট তৈরির কাজ শেষ করে ফলাফল প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে স্কুলে স্কুলে। এত অল্প সময়ের মধ্যে উল্লেখিত কাজ ঠিকঠাকভাবে করে সুচারুভাবে ফলাফল প্রকাশ কার্যত অসম্ভব বলে শিক্ষানুরাগী মহলের বক্তব্য।
সমস্যা এখানেই শেষ নয়। রাজ্য বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমিক এবং প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের তরফে আলাদা আলাদা করে প্রকাশিত পরীক্ষা সূচি নিয়ে আরও প্রশ্ন রয়েছে।বিশেষত তৃতীয় শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষা সূচি মোটেও কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়নি। দপ্তরের তরফে ঠাণ্ডা ঘরে বসে এই সূচি তৈরির সময় শিশু মনোবিজ্ঞান সহ প্রাসঙ্গিক বিষয়ের উপর মোটেও গুরুত্ব আরোপ করা হয়নি বলে শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত বড় অংশের বক্তব্য। ফলে পরীক্ষা সূচি তৈরি হয়েছে পুরোপুরি আমলাদের মর্জি মতো। এর জন্য অভিজ্ঞ এবং ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ থাকা ও তাদের মন, মানসিকতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল শিক্ষক-শিক্ষিকার পরামর্শ নেওয়া হয়নি।তেমন হলে সূচি এত দায়সারা গোছের হতো না বলে অভিমত মহলটির।রাজ্য বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমিক এবং প্রাথমিক বিভাগের তরফে আলাদা আলাদাভাবে পরীক্ষা সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত সূচি অনুসারে মাধ্যমিক শিক্ষার আওতায় থাকা নবম ও একাদশ শ্রেণীর ২০২৪- ২৫ শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে দশ ফেব্রুয়ারী। শেষ হবে এগারো মার্চ।

অন্যদিকে তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষা শুরু হবে বারো মার্চ। শেষ হবে কুড়ি মার্চ। প্রথম দিন বারো মার্চ তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী তথা প্রাথমিক বিভাগ এবং ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত উচ্চ বুনিয়াদি স্তরের অঙ্ক পরীক্ষা। চৌদ্দ মার্চ উভয় ক্ষেত্রে বাংলা ও ককবরক ভাষা পরীক্ষা। সতেরো মার্চ তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীর পরিবেশ বিজ্ঞান এবং ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর বিজ্ঞান পরীক্ষা। উনিশ মার্চ উভয় ক্ষেত্রে ইংরেজি পরীক্ষা। এরপর তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী আর কোনও পরীক্ষা নেই। কুড়ি মার্চ ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর সমাজবিদ্যা পরীক্ষা।

চৌদ্দ মার্চ হোলি। সরকারী ছুটি নেই। তবে সরকারী ছুটি না থাকলেও হোলির দিন বাড়িঘর থেকে বের হওয়া অনেক সময় ঝুঁকির হয়ে দাঁড়ায়।হোলি নিয়ে মত্ত থাকে অনেকে।ফলে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া নিয়ে অনেকেই সংশয়ে এবং আশঙ্কায় রয়েছেন। তাছাড়া যষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে উনিশ মার্চ ইংরেজির মতো বিষয়ের পরীক্ষা দেওয়ার পরদিন তুলনায় বেশি পাঠ্যসূচির কঠিন বিষয় হিসাবে পরিচিত সমাজবিদ্যা পরীক্ষা। এই দুই পরীক্ষার মধ্যে কোনও ফাঁকা দিন না রেখে সূচি তৈরি করা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। তার উপর কুড়ি মার্চ পরীক্ষা শেষ হবে। এর নবম দিনের মাথায় উনত্রিশ মার্চ বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। কারণ ত্রিশ মার্চ রবিবার এবং একত্রিশ মাচ ইদ। এই দুইদিন সরকারী ছুটি। এমতাবস্থায় পরীক্ষা শেষ হওয়ার মাত্র নয়দিনের মধ্যে উত্তরপত্র মূল্যায়ন সহ মূল্যায়ন করতে হবে শিক্ষকদের। শিক্ষা দপ্তরে এমনিতেই এমন হাজারো কাজ করতে হয় শিক্ষকদের। শিক্ষকরা এখন একেকজন করণিক। ফলে এত কম সময়ের মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণ, খাতা মূল্যায়ন, মার্কশিট তৈরি, মেরিট বুক তৈরি করা এবং ফলাফল প্রকাশ কীভাবে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে হলেও শিক্ষকরা কিছুটা সময় পেতেন কিন্তু শিক্ষা দপ্তর তা না করে অত্যন্ত অবিবেচনাপ্রসূত এই পরীক্ষার রুটিন তৈরি করে শিক্ষকদের চূড়ান্ত বিড়ম্বনায় ফেলেছেন বলে মনে করছেন শিক্ষকরা।বিষয়টি পর্যালোচনার দাবি উঠেছে নানা মহল থেকে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.