বাসস্থানের অভাবে ভবঘুরে হাতিদের নিয়ে চিন্তা বাড়ছে বনদফতরের!!

 বাসস্থানের অভাবে ভবঘুরে হাতিদের নিয়ে চিন্তা বাড়ছে বনদফতরের!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-ছোট হয়ে আসছে জঙ্গল। অথচ বাড়ছে জনবসতি। হাতি-মানুষের লড়াইও ক্রমশ বাড়ছে। আর জঙ্গল সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়ায় ক্রমশ ভবঘুরে হয়ে যাচ্ছে হাতির দল। জঙ্গল থেকে লোকবসতির আশপাশে দলে দলে ঘোরাফেরা করছে তারা। জঙ্গলমহলের ছোট্ট জেলা ঝাড়গ্রামে অন্য সব সমস্যার চেয়েও বড় সঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছে হাতি। প্রায় প্রতিদিনই হাতি ঢুকে পড়ছে গ্রামের অন্দরে ।এমনকি ঘর-বাড়ি ভাঙচুর ও হাতির হানায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। প্রাণ-হারাচ্ছে হাতিও।
ঝাড়গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শালের জঙ্গল। সেখানে প্রতিদিন ঘুরছে ১৫০ থেকে ২০০টির মতো হাতি। স্বাভাবিক কারণেই হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘাত বাড়ছে। সন্ধের পরে ঝাড়গ্রাম থেকে ৫ নম্বর রাজ্য সড়ক দিয়ে লোধাগুলি যেতে এখন অনেকেই ভয় পান। কারণ, জঙ্গল ছেড়ে খাবারের সন্ধানে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে হাতির দল। ঝাড়গ্রামের জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলি সন্ধে ৭টার পরেই শুনসান হয়ে যায়। তার কারণও সেই হাতি। বন দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২১-২২ সাল থেকে ২০২৪-২৫ পর্যন্ত হাতির হানায় ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।৭২১টি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।১১৯৯.৪১ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। চার বছরে ৬,৫২৬ জনকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে বন দফতরের তরফ থেকে।
ঝাড়গ্রামের গড় শালবনি এলাকার বাসিন্দা শ্যামসুন্দর মাহাতো দীর্ঘদিন ধরে হাতি নিয়ে চর্চা করছেন। তার কথায়, ‘হাতি তাদের স্থায়ী ঠিকানা হারাচ্ছে। যাযাবরের মতো জীবনযাপন করছে। তাদেরও বাঁচার অধিকার রয়েছে। অন্য দিকে,মানুষের প্রাণ ও রুজিরুটি রক্ষাও জরুরি।ঝাড়গ্রাম নয়, হাতির বাসস্থান ঝাড়খণ্ডের দলমা এবং ওড়িশার ময়ূরভঞ্জে। দলছুট হয়ে হাতি এই এলাকায় রয়েছে। হাতির সমস্যা সমাধানের জন্য কেন্দ্র সরকারের মধ্যস্থতায় ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গ– এই তিন রাজ্যের সরকারকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্র বের করতে হবে।’ তিনি জানান, ‘বিট, রেঞ্জ এবং বন বিভাগের সমন্বয়ের অভাবে সমস্যা আরও বাড়ছে। তারা একে অন্যের পিঠ বাঁচানোর জন্য হুলা পার্টি, পটকা, জ্বলন্ত শলাকা এবং আগুনের ভয় দেখিয়ে হাতিকে তাড়া করছে।সেই কারণে হাতিও উগ্র হয়ে উঠছে।এতে মানুষ এবং হাতি উভয়ের ক্ষতি হচ্ছে।’
সাঁওতালডিহা গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু মেহেরা বলেছেন, ‘পাঁচ বছর আগেও হাতি নিয়ে এত সমস্যা ছিল না। এখন যে কোনও সময়ে হাতি ঢুকে পড়ছে গ্রামে। আমরা বাড়িতেও নিরাপদ নই। বন দফতরকে হাতির সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যোগী হওয়া উচিত।’ প্রাক্তন বনকর্তা তথা হাতি বিশেষজ্ঞ সমীর মজুমদারের কথায়, ‘হাতির সমস্যা সমাধানের জন্য দু’দশক আগে ময়ূরঝর্না এলিফ্যান্ট প্রকল্পের ভাবনাচিন্তা করা হয়েছিল। এখন দ্রুত সেই প্রকল্পের বাস্তবায়ন জরুরি।’

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.