বিচারকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার মারাত্মক অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-ধলাই জেলার কমলপুরে কর্মরত প্রথম শ্রেণীর বিচার বিভাগীয় আদালতের এক বিচারকের বিরুদ্ধে জনৈকা মহিলাকে যৌন হেনস্তা করার বিস্ফোরক অভিযোগ ঘিরে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক গুঞ্জন ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এই অভিযোগের সত্যতা কতটা?তা তদন্ত সাপেক্ষ।কিন্তু ওই মহিলা যেভাবে প্রকাশ্যে একজন বিচারকের বিরুদ্ধে এমন একটি বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন,যা রাজ্যের ইতিহাসে সম্ভবত এর আগে কোনওদিন উঠেনি বা শোনা যায়নি।ফলে এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে জোড় গুঞ্জন শুরু হয়েছে।কেননা, বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং অত্যন্ত সিরিয়াস।যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি একজন বিচারক।শুধু তাই নয়, খোদ আদালতে বিচারকের চেম্বারেই ওই মহিলা যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণএবং এই বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এদিকে,শুক্রবার ওই মহিলার মারাত্মক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার ধলাইয়ের জেলা ও দায়রা বিচারক গৌতম দেবনাথ এবং জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কমলপুর সফরে আসেন।প্রথম শ্রেণীর আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সম্পর্কে খোঁজখবর করেন। কথা বলেন যার বিরুদ্ধে অভিযোগ,সেই বিচরকের সাথে।কথা বলেন,কমলপুর বারের একাধিক আইনজীবীর সাথে।কথা বলেন কমলপুর বারের সভাপতি, সম্পাদকের সাথে।কথা বলেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারকের সাথে।তবে অভিযোগের সপক্ষে আইনজীবীরা তেমন কিছু বলতে পারেননি।তবে অন্য বিচারকরা কে কি বলেছেন? সেটা অবশ্য জানা যায়নি। তবে আইনজীবীদের একাংশ যে প্রথম শ্রেণীর আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ, সেটা স্পষ্ট হয়েছে।মহকুমার কচুছড়া থানার মেচুড়িয়া চৌদ্দকার্ড এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা গত ১৩ ফেব্রুয়ারী রাতে ধর্ষণের শিকার হন।১৪ ফেব্রুয়ারী কচুছড়া থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ ওইদিনই অভিযুক্তকে আটক করে।১৬ ফেব্রুয়ারী ওই মহিলা আদালতে আসেন নিজের জবানবন্দি দেওয়ার জন্য। প্রথম শ্রেণীর আদালতের বিচারকের চেম্বারে মহিলার বক্তব্য রেকর্ড করা হয়। অভিযোগ,দরজাবন্ধ চেম্বারে বক্তব্য রেকর্ড করার সময় বিচারক মহিলাকে যৌন হেনস্তা করেন।বিচারকের চেম্বার থেকে বেড়িয়ে মহিলা প্রথমে বিষয়টি তার স্বামীকে জানান।এরপর বিকাল তিনটা নাগাদ মহিলা বিস্তারিত উল্লেখ করে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।একই সাথে অপর একটি লিখিত অভিযোগ কমলপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সচিবের কাছে করেন।সচিবের হয়ে সেই অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন বারের সভাপতি। বারের পক্ষ থেকে মহিলার অভিযোগপত্রটি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যেহেতু বিষয়টি জুডিশিয়ারি অর্থাৎ অভিযোগ একজন জুডিশিয়াল অফিসারের বিরুদ্ধে।এখানে বারের কিছু করার নেই।এরপর ওই মহিলা (গৃহবধূ) কমলপুর প্রেস ক্লাবে গিয়ে প্রকাশ্যে সাংবাদিকদেরও বিচারকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলে নিজের বক্তব্য পেশ করেন।কিন্তু প্রশ্ন হলো, ওই মহিলা এখনও পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি।এমনকী যার বিরুদ্ধে এমন মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে,সেই বিচারকও এখনও পর্যন্ত এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি।এই অভিযোগের কতটা সত্যতা রয়েছে?নাকি এর পিছনে গভীর কোনও চক্রান্ত রয়েছে?এর জবাব পাওয়া যেতে পারে একমাত্র বিচারকের চেম্বারে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে।কেননা,চেম্বারে তখন দুইজনই উপস্থিত ছিলেন। বিচারক এবং ওই মহিলা। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা উচিত।কেননা, অভিযোগ যার বিরুদ্ধে তিনি একজন বিচারক।অভিযোগ যদি অসত্য হয়,তাহলে অভিযোগকারিণীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ যেমন জরুরি,তেমনি অভিযোগ সত্য হলেও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।কেননা,এখানে আদালতের মর্যাদার প্রশ্ন
জড়িয়ে রয়েছে।