বিজেপির কার্যকারিণী বৈঠক, পাখির চোখ লোকসভা।
অনলাইন প্রতিনিধি || বরাবরের মতো যে প্রক্রিয়ায় বিজেপির প্রদেশ কার্যকারিণী বৈঠক হয় এবারে তেমনটা হয়নি। লোকসভার নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই পদ্মশিবির রাজ্য স্তরের কার্যকারিণী বৈঠকে মিলিত হয় সোমবার চড়িলামে। একটা ইস্যুকেই এ দিন মূলত প্রাধান্য দেওয়া হয়। তা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নয় বছরের কার্যকাল পূর্তি। যাকে কেন্দ্র করেই এ দিন শাসক দল একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেয়। তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যেও রূপরেখা তৈরি করা হয়। অন্য বারের মতো অবশ্য রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করা হয়নি। বুথ স্বশক্তিকরণ, অন্য দলগুলির রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে সামান্য আলোচনা হয়েছে বলেও এ দিন বৈঠক শেষে জানানো হয় ৷এ দিন চড়িলাম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে পূর্ব ঘোষিত সূচি অনুযায়ী প্রদেশ
কার্যকারিণী বৈঠকের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা, প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, বিজেপি রাজ্য প্রভারী ডা. মহেশ শর্মা, রাজ্যের সংগঠন মহামন্ত্রী ফণীন্দ্র নাথ শর্মা অন্যরা। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেন, দলকে তৃণমূল স্তর থেকে শক্তিশালী করে তুলতেই বুথ স্বশক্তিকরণের অভিযান চলছে। বুথ জিতলেই বিধানসভা জয় করা যায়। বিধানসভার জয় এলে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় লোকসভাতেও জয় আসবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ঘরে ঘরে জন সম্পর্কে গেলে হবে না। ওই সম্পর্কে মানুষের সমর্থন পাচ্ছে কি না তাও দেখা প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার এবং দল সমন্বয় বজায় রেখে চলছে। প্রতিটি কার্যকর্তার জন্যই সরকার এবং দল । এ দিন নেশা বিরোধী কঠোর বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, নেশা বিরোধী অভিযানে সরকার আরও নির্দয় হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আপসহীন মনোভাব রয়েছে সরকারের। তিনি বলেন, ক্ষমতায় আসার আগে বিজেপির ইস্তেহারে যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তা চার বছরের মধ্যে পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ দিন প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য দলীয় শৃঙ্খলা ও সংহতির বার্তা দেন কর্মীদের। তিনি বলেন, কর্মীদের মধ্যে মত পার্থক্য, অসন্তোষ থাকতেই পারে। এসব নিয়ে কথা বলার উপযুক্ত জায়গাও দলে রয়েছে। বিজেপি রাজ্য প্রভারী মহেশ শর্মা, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মণ সহ অন্যরাও এ দিন সভায় বক্তব্য রাখেন। এ দিনের সভায় শাসক দলের প্রদেশ স্তরের ১৮০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। ১৮৩ জন তাতে আমন্ত্রিত ছিলেন। কার্যকারিণী সভায় ছিলেন না রাজ্য সভার সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। এ দিন সভা শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেন, বৈঠকে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে আগামীদিনে তার ফল মিলবে। দলের মধ্যে অনৈক্য সম্পর্কিত প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, বিজেপি একটি পরিবার। পরিবারে ঝামেলা হয়েই থাকে। অভিভাবকের উদ্যোগে তা মিটে যায়। বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য বলেছেন, প্রদানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নয় বছরের কার্যকাল পূর্তি উপলক্ষে আগামী ত্রিশ মে থেকে ত্রিশ জুনের মধ্যে রাজ্যব্যাপী এক মাসের কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রমে কেন্দ্রের প্রতিনিধিরাও অংশ নেবেন। এই সময়ে দুটি লোকসভা কেন্দ্রে দুটি জনসভাও হবে। এছাড়া জনসম্পর্কের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি চলবে। প্রদেশ বিজেপি সভাপতি বলেন, চব্বিশ মে জেলা স্তরে কার্যকারিণী বৈঠক। ছাব্বিশ মে হবে মণ্ডল স্তরে বৈঠক। এ দিনের বৈঠকে মন্ত্রী, বিধায়ক, বিভিন্ন সংস্থার চেয়ারম্যান সহ জেলা ও মোর্চার পদাধিকারীগণ উপস্থিত ছিলেন।