বিজেপি বিভেদের রাজনীতি করে না, কংগ্রেস – সিপিএমকে তীব্র আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর।

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যের বিজেপি সরকারের উপর বিশ্বাস রাখুন। তাহলেই চলবে। উন্নয়ন কাকে বলে দেখবেন। এই সরকার রাজ্যকে উন্নয়নের দিশা দেখাবে। আজ বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের কুলুবাড়িতে আয়োজিত যোগদান সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এই মন্তব্য করেন। আজকের যোগদান সভায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা বিল্লাল মিঞা সহ প্রায় সতেরোশ পরিবার বিজেপি দলে যোগদানের ঘোষণা দেন।এই যোগদান সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেস ও সিপিএম দলের কঠোর সমালোচনা করেন। বলেন, কংগ্রেস দল একটা ক্ষয়িষ্ণু দল। বিজেপি দলে কেন আজ বিল্লাল মিঞার মতো কংগ্রেস নেতারা যোগদান করলেন সে সম্পর্কে বিল্লাল মিঞা বলেছেন, তার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ১৯৯৩ সালে কংগ্রেস দল গোপন আঁতাত করে সিপিএম দলের হাতে রাজ্যের ক্ষমতা তুলে দিয়েছিল।বিনিময়ে কংগ্রেস দলের কর্মী সমর্থকরা কী ধরনের অত্যাচার, লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন তা কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরাই বলতে পারবে। তিনি বর্তমান কংগ্রেস দলকে উচ্ছৃঙ্খলদের দল বলে অভিহিত করেন। তারা নাটক করছে। নাট্যকারদের বহু নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। শৃঙ্খলার পরিবর্তে কীভাবে উচ্ছৃঙ্খল হতে হয় তা শেখাচ্ছে বর্তমান কংগ্রেস দল। ত্রিপুরার মানুষ সিপিএমকে ভালো পেতো না। ১৯৯৩ সালে কুচক্রীদের হাত ধরে ক্ষমতায় এসে কংগ্রেস কর্মীদের উপর খুন, সন্ত্রাস, অগ্নি সংযোগ করে পঁচিশ বছর ক্ষমতায় থেকেছে। মানুষ দেখেছে নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাস কাকে বলে। কিন্তু রাজ্যে ২০১৮ সালে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর কোনও সন্ত্রাস হয়নি।বিজেপি দল রাজনৈতিক হিংসায় বিশ্বাস করে না। সবাইকে সাথে নিয়ে চলতে চায়। রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হচ্ছে। মা- বোনেরা রাতের বেলায় নিরাপদে যাতায়াত করতে পারেন। রাজ্য কংগ্রেস দলত্যাগ করে ক্রমশ বিজেপি দলে শামিল হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এক সময় রাজ্যে এই কংগ্রেস দলে কেউ থাকবে না। যিনি রয়েছেন তিনি একা দাঁড়িয়ে থাকবেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এতো ট্রেলার হ্যায়, পিকচার আবিভি বাকি হ্যায়’। এই বক্সনগর বিধানসভায় বিগত দিনে প্রচুর লোক খুন হয়েছে।আগামী সাড়ে চার বছরের জন্য এই বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীকে জয়ী করে বিধানসভায় পাঠান, দেখবেন উন্নয়ন কাকে বলে।রাজ্যের উন্নয়নের রূপরেখা বর্ণনা করতে গিয়ে বিগত বাম শাসনের সমালোচনা করে বলেন, আবাস যোজনা, সামাজিক ভাতা, জল জীবন মিশনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এই সব স্কিমে হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হয়েছে। উন্নয়নে কোনও ধর্ম নেই। সবাইকে সাথে নিয়ে চলতে হবে এটাই সবকা সাথ সবকা বিকাশ। তিন তালাক প্রথা প্রসঙ্গ টেনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বক্সনগর কেন্দ্রে বলেন, এতে মুসলিম নারীদের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তা চালু করা হলেও কোনও অশান্তি হয়নি। এই সরকার স্বচ্ছতার সরকার। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী রাজ্যকে হিরা মডেল উপহার দিয়েছেন। ন্যাশনাল হাইওয়ে বারোটি হয়েছে আর ও চারটি হবে। বারোটা একট্রেস ট্রেন রাজ্য থেকে প্রতিদিন যাচ্ছে।
ইন্টারনেটে ত্রিপুরা গেটওয়ে হয়েছে। বিমানবন্দর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর বিমান বন্দর হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য একের সাথে অপরের মেলবন্ধন তৈরি করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি বিশ্বাস করেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন না হলে দেশের উন্নয়ন হবে না। খেলাধুলা, নারী সংরক্ষণ, কলেজ স্তরে বেতন তুলে দেওয়া, ছাত্রীদের বাইসাইকেল বিতরণ করার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এখন নতুন সিদ্ধান্ত হয়েছে স্কুটি দেবার। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রাজ্য মেডিক্যাল কলেজে নয়টি বিভাগ চালু হয়েছে। এই ক্ষেত্রে রাজ্যের রোগীদের বাইরে যেতে হবে না। রাজ্যের তিন জেলায় আরও তিনটি ট্রমা সেন্টার গড়ে তোলা হবে। রাজ্যের এই উন্নয়ন রেখাচিত্রে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বিরোধী দলগুলি।তাদের মরীচিকা বলে অভিহিত করে বলেন এর পেছনে ছুটবেন না, এতো বছর ধরে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন। কংগ্রেস যেমন ক্ষয়িষ্ণু হয়ে গেছে বর্তমান সিপিএম দলও ক্ষয়িষ্ণু হয়ে যাবে। যে দল কংগ্রেস দলের কর্মী সমর্থকদের খুন করেছে সেই দলের সঙ্গেই হাত মিলিয়েছে কংগ্রেস। তারা আসলে মানুষের স্বার্থে কথা চিন্তা করে না। কেবলমাত্র নিজেদের স্বার্থ নিয়ে ভাবে। তিনি বলেন, কাজের শেষ নেই। কাজ করতে হবে। মানুষের সমস্যার সমাধান করতে হবে। অতীতে সমস্যা জিইয়ে রেখে কাজ করতো। বিজেপি বিভেদের রাজনীতি করে না, জাতি-উপজাতি সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চায়। আমাদের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জে পি নাড্ডা। মানুষ আগে উচ্ছৃঙ্খল, মারপিট দেখেছে কিন্তু বিজেপি সংস্কারবাদী, আমাদের আদর্শ ডা. শ্যামাপ্রসাদ, দীনদয়াল উপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী মোদি দেশের বিদেশ নীতিতে ভারতের গুরুত্ব বাড়িয়েছেন। বিভিন্ন রাষ্ট্র ভারতকে সমীহ করতে বাধ্য হয়েছে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক দেখেছে, সংসদে এখন আর উগ্রবাদী হামলা হয় না। সমস্ত জায়গায় সুন্দর পরিবেশ হয়েছে। এবারের উপনির্বাচনে বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীকে জয়ী করার আহ্বান জানিয়ে বলেন এই সুযোগ বার বার আসবে না। রক্তস্নাত দিন ত্রিপুরায় আর ফিরে আসবে না। কংগ্রেস-সিপিএম থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।এই সভায় প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন, ত্রিপুরার উন্নয়ন একমাত্র বিজেপির দ্বারাই সম্ভব। আজ এই কেন্দ্রের বাড়ি বাড়ি প্রচারে মানুষ দীর্ঘ বাম শাসনের ভয়ার্ত চেহারাই স্মরণ করে বলেছে তারা পঁচিশ বছর অপশাসন দেখেছে। বক্সনগর সিপিএমের গড় বলে। এখন থেকে সিপিএমকে উৎখাত করতে হবে। সিপিএম ত্রিপুরা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। গরিবের সরকার বলে দাবি করা সিপিএম গরিবের জন্য কী করেছে সেই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, বিজেপি সরকার আবাস যোজনা, সমাজিক ভাতা পেয়েছে এর জন্য কোনও চাঁদা দিতে হয়নি। অতীতে দলীয় নেতা, ক্যাডার বা সুযোগ সুবিধা পেতো। প্রকৃত গরিব বঞ্চিতই থেকে যেতো। এছাড়া সিপিএম একটি বিশেষ ভাতা চালু করেছিল সেটা হল স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা। গরিব মানুষ বিভিন্ন সুযোগ হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।তিনি বলেন এটাই পরিবর্তন।বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রে আজকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, টিংকু রায়, বিকাশ দেববর্মা, বিধায়িকা কল্যাণী রায় সহ প্রদেশ সাধারণ সম্পাদিকা পাপিয়া দত্ত, বক্সনগর মণ্ডল সভাপতি সুভাষ সাহা, এই কেন্দ্রের প্রার্থী তফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।

Dainik Digital

Recent Posts

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

21 hours ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

21 hours ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

2 days ago

রাজধানীতে চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-মুখ্যমন্ত্রীডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার আপনজন ক্লাবের চাঁদার নামে বড় অঙ্কের তোলাবাজির অভিযোগের রেশ…

3 days ago

ইন্ডিয়ান বুকে রাজ্যের মেয়ে ঝুমা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ইচ্ছে ছিলো অনেক আগে থেকেই। অবশেষে নিজের ইচ্ছেকেই বাস্তবে পরিনত করলো ঝুমা দেবনাথ।…

3 days ago

সুশাসনে আইনশৃঙ্খলা!

রাজ্যে কি সত্যিই আইনের শাসন রয়েছে?সাধারণ মানুষ কিন্তু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।সরকার বলছে রাজ্যে সুশাসন…

3 days ago