বিদ্যাজ্যোতি, ১০৩২৩ ইস্যুতে সরকারের তীব্র সমালোচনা।

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি || বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প ও ১০৩২৩ শিক্ষক শিক্ষিকা ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে বিঁধলেন বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মা। শুধু তাই নয়, রোমান হরফে ককবরক ভাষা চালুর ক্ষেত্রে তিনি রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন।তার মতে রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ১০৩২৩ শিক্ষক শিক্ষিকাদের চাকরি ফিরিয়ে দিচ্ছে না। এমনকী বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আড়ালে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে পর্যন্ত ছিনিমিনি খেলা চালাচ্ছে রাজ্য সরকার, আর রোমান হরফে ককবরক ভাষা চালু না করে রাজ্য সরকার উপজাতি জনসমাজের স্বার্থে আঘাত করতে ব্যস্ত। ফলে উপজাতি ছাত্র যুবসমাজের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে তার অভিযোগ, ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে রাজ্যে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের সূচনা হয়। ওই সময়ে রাজ্যের ১০০টি বিদ্যালয়কে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের অধীনে আনা হলো। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ছিল এই ১০০টি বিদ্যালয়ের জন্য নাকি ৫০০ কোটি টাকা রাজ্যকে প্রদান করা হবে। ফলে এই ১০০টি বিদ্যালয়ের জন্য রাজ্য সরকার পেলো ৫০০ কোটি টাকা। এর কিছুদিন পর আবার দুই ধাপে পঞ্চাশটি সরকারী স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের অধীনে আনল সরকার। তার দাবি এই পঞ্চাশটি স্কুলের জন্য রাজ্য সরকার পেলো আরও ১৫০ কোটি টাকা। তার মানে ১৫০টি বিদ্যালয়ের জন্য ৭৫০ কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে এসেছে। তবে অবাক করার বিষয় হলো বিদ্যাজ্যোতির ১৫০টি স্কুলে কোনও ধরনের পঠনপাঠনের পরিকাঠামো নেই। নেই নতুন ক্লাসরুম, কম্পিউটার ল্যাব, গ্রন্থাগার, ছাত্রছাত্রীদের বসার জন্য নেই বেঞ্চ। শৌচাগার পর্যন্ত নেই। আর স্বচ্ছ পানীয় জলতো দিবাস্বপ্ন। সাথে রয়েছে শিক্ষক শিক্ষিকার সঙ্কট। এমনকি নতুন পাকাবাড়ি পর্যন্ত নির্মাণ হলো না।স্কুলগুলিতে বৈদ্যুতিন পাখা ও লাইট পর্যন্ত নেই।তবে কোথায় গেলো এই ৭৫০ কোটি টাকা? রাজ্য সরকারকে তার জবাব দিতে হবে রাজ্যবাসীকে। পরিতাপের বিষয় হল বিদ্যাজ্যোতি স্কুলগুলিতে পঠন-পাঠনের জন্য নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে নিচ্ছে সরকার। স্কুলগুলি আবার ইংরেজি মাধ্যমে চলছে। অথচ ইংরেজি জানা শিক্ষক শিক্ষিকা নেই। পঠনপাঠন তাই বাংলাতে হচ্ছে। শুধুমাত্র নিজেদের এবং বহিরাগতদের শ্রীবৃদ্ধির জন্য এক হাজার টাকা করে অর্থ আদায় চলছে। যা দুর্ভাগ্যজনক বিরোধী দলনেতার অভিযোগ,সম্প্রতি আদালত বলেছে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ রাজ্য সরকার যেভাবে ১০৩২৩ শিক্ষক শিক্ষিকাদের । একটি নোটিশে ছাঁটাই করেছে তা সঠিক নয়। আদালত বলেছে মেমো দিয়ে সকলকে অবহিত করা হয়নি।তাই ১০৩২৩ শিক্ষক শিক্ষিকাদের চাকরি বর্তমানেও রয়েছে। অনিমেষ দেববর্মার দাবি আদালত শুধুমাত্র ২০০৩ সালের রাজ্য সরকারের নিয়োগ নীতিকে বাতিল করেছিল। তবে কেন ১০৩২৩ শিক্ষক শিক্ষিকার চাকরি গেল ? কারণ একই । নিয়োগনীতিতে বিজ্ঞান শিক্ষক শিক্ষিকা সহ প্রায় ৫৫ হাজার সরকারী চাকরি রাজ্যে হয়েছে। তাই চাকরি গেলে সবার যাবে। এমনকী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর সময়ে দুটি কমিটি ১০৩২৩ শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য গঠিত হয়। এই দুটি কমিটি বলেছে আদালতের রায়ে মাত্র ৪৬২ জনের চাকরি গিয়েছে। তাই বাকি ৯৮৬১ জনের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। এর মধ্যে যারা প্রয়াত হয়েছেন তাদের পরিবারেও একটি সরকারী চাকরি প্রদান করা হোক।
এখন আবার আদালতের আদেশ তাদের পক্ষে আছে। তবে কেন রাজ্য সরকার নীরব? আরও অবাক করার বিষয় হলো যে ৫৯ জন ১০৩২৩ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে মামলা করেছিলেন তাদের মধ্যে ৪০ জন পুরানো নিয়োগনীতিতে বর্তমানে চাকরি করছেন।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

বিভৎস ট্রেন দুর্ঘটনা, ছিটকে গেল চলন্ত তিনটি মালগাড়ির কামরা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ফের লাইনচ্যুত ট্রেন। ছিটকে গেছে তিনটি কামড়া। ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার তিতলাগড় স্টেশনের কাছে।…

12 hours ago

চিনে আবার নতুন করে কোভিড নাইটিন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রথম সংক্রমণের ৫ বছরের রেষ কাটতে না কাটতেই নতুন করে চিনে খোঁজ মিলেছে…

17 hours ago

দিল্লিতে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-গত ৫ আগস্ট হাসিনা জামানার পতনের পর বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। তবে…

17 hours ago

মরিশাসের জাতীয় দিবসে প্রধান অতিথির মুখ নরেন্দ্র মোদী!!

শুক্রবার মরিশাসের সংসদে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন আসন্ন ন্যাশনাল ডে বা জাতীয় দিবসের উদযাপনে প্রধান অতিথি…

19 hours ago

ধন্যবাদার্হ!!

কোনও চাওয়া যখন পথের থেকে বেশি সংখ্যায় পথবন্ধক তৈরি করে, তাকে পরিত্যাগ করাই বিধেয়। কারণ…

19 hours ago

নয়া জঙ্গি তৎপরতার উপর নজর রাখছে পুলিশ :ডিজিপি!!

অনলাইন প্রতিনিধি:- নারী নির্যাতন কিংবা মহিলা সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা রাজ্যে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি…

21 hours ago