বিধানসভায় শাসক বিরোধী একমত,ডিজে ব্যবহারে আরোপ হতে পারে কঠোর বিধিনিষেধ!!

 বিধানসভায় শাসক বিরোধী একমত,ডিজে ব্যবহারে আরোপ হতে পারে কঠোর বিধিনিষেধ!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি:-শব্দ দূষণ প্রতিরোধে রাজ্যে উচ্চস্বরে ডিজে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহারে এবার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ হতে যাচ্ছে।সোমবার বিধানসভায় এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী রতনলাল নাথ।শীঘ্রই এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে আলোচনার পর এই বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করা এবং পুলিশকে এই বিষয়ে আরও কঠোর হওয়ার কথা বলেছেন।সোমবার বিধানসভায় শাসকদলের বিধায়ক সুশান্ত দেব এ বিষয়ে একটি দৃষ্টি আকর্ষণী নোটিশ উত্থাপন করেন।নোটিশটির বিষয়বস্তু ছিল,’ভয়ঙ্কর শব্দ দূষণ ঠেকাতে রাজ্যে সমস্ত ধরনের অনুষ্ঠানে ডিজে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার জন্য জনস্বার্থে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে’।সব থেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, শাসকদলের বিধায়ক সুশান্ত দেবের উত্থাপিত এই দৃষ্টি আকর্ষণী নোটিশের শাসক-বিরোধী সকলেই একবাক্যে সমর্থন জানিয়েছেন।যা বিধানসভায় সচরাচর দেখা যায় না। শাসক-বিরোধী সকলেই এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। এমনকী অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন পর্যন্ত নোটিশের সমর্থন করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।এ ব্যাপারে সিপিএম বিধায়ক জিতেন্দ্র চৌধুরী,বিধায়ক দীপঙ্কর সেন,বিধায়ক নির্মল বিশ্বাস,তিপ্রা মথা বিধায়ক বৃষকেতু দেববর্মা,বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা প্রত্যেকে এক সুরে কথা বলেন।প্রত্যেকে উচ্চস্বরে ডিজে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দাবি জানান।প্রত্যেকে বলেন, ডিজে যখন বাজানো হয় তখন শুধু মানুষই নয়,মাটি পর্যন্ত কাঁপতে থাকে। পশু-পাখি পর্যন্ত ভয়ে পালিয়ে যায়।অসুস্থ মানুষ,গর্ভবতী মহিলাদের প্রচণ্ড ক্ষতি হয়। অথচ পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয় না।নোটিশের জবাব দিতে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন,এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ভারত সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের পরিবেশ সুরক্ষা আইন- ১৯৮৬-এর শব্দ দূষণ (প্রবিধান ও নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুযায়ী) বিধিমালা,২০০০ অনুযায়ী লাউড স্পিকার, পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম, শব্দবর্ধক যন্ত্র এবং অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র রাত ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে ব্যবহার করা যাবে না। শুধুমাত্র আবদ্ধ স্থান,প্রেক্ষাগৃহ,সভাকক্ষ এবং আপৎকালীন পরিস্থিতিতে রাত্রিকালীন সময়ে এসব যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে।রাজ্যে লাউড স্পিকার ও পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের লিখিত অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যায় না।রাজ সরকার সাংস্কৃতিক,ধর্মীয় এবং বিশেষ উৎসবের দিনগুলিতে লাউড স্পিকার,পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম,শব্দবর্ধক যন্ত্র এবং অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারের সময়সীমা রাত ১০ট থেকে ১২টা পর্যন্ত বছরে ১৫ দিনের জন্য বর্ধিত করতে পারে। তিনি আরও বলেন,ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের আদেশ অনুসারে রাজ্য সরকার সমস্ত ধরনের সাউন্ড সিস্টেম, পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমের উপর সাউন্ড লিমিটারের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। শব্দ ও বায়ু দূষণ রোধে দীপাবলি ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে শব্দবাজি ব্যবহার রাজ্যে নিষিদ্ধ রয়েছে।তিনি আরও জানান, মধ্যপ্রদেশের রাজ্য সরকার সম্প্রতি এ ধরনের লাউড স্পিকার,পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম, শব্দবর্ধক যন্ত্র এবং অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের অনিয়ন্ত্রিত ও অবৈধ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে নির্দেশিকা জারি করেছে।রাজ্যেও এ ধরনের আইন প্রয়োগ করা যায় কিনা তা দেখা হবে। তিনি বলেন, শব্দদূষণ রোধে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আরক্ষা প্রশাসনও যাতে এ সকল ক্ষেত্রে অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে তার জন্য রাজ্য সরকার পদক্ষেপ নেবে। এক্ষেত্রে তিনি জনপ্রতিনিধিদেরও আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার জন্য আহ্বান রাখেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.