বিধানসভা অধিবেশনের সিদ্ধান্ত অধরা, ক্ষোভ রাজ্যের বেকারদের !!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি দুর্নীতি রাজ্য বিধানসভায় উঠেছে। তবে এখন পর্যন্ত চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হয়নি। এমনকী তদন্তও অধরা। ফলে রাজ্যের বিজেপি সরকারের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে। যদিও গত নয় জানুয়ারী ত্রিপুরা বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনের চতুর্থদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি দুর্নীতির বিষয়টি উঠেছিল। বিরোধী দলের বিধায়কের পক্ষে উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য সরকার ও ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে এমনই ইঙ্গিত দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী রাজ্যব্যাপী প্রচার চলে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হচ্ছে। যা এখন পর্যন্ত হয়নি। উল্টো এরা মৌখিক ইন্টারভিউর নামে রাতারাতি চাকরি যাচ্ছে বহি:রাজ্যে। অভিযোগ, রাজ্য বিধানসভায় বিষয়টি উঠলেও ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের অনুমতি ছাড়াই চৌদ্দটি চাকরি প্রদান হয়ে গিয়েছে। এই চৌদ্দটি অধ্যাপক/অধ্যাপিকা পদের মধ্যে এগারোটি চাকরি তড়িঘড়ি বহি:রাজ্যের বেকারদের দিয়ে দিলো বহি:রাজ্য থেকে আগত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এখন চাকরি দুর্নীতির বিষয়গুলি প্রমাণ সহ ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত আচার্যর নজরেও নেওয়া হয়েছে বলে খবর। রাজ্য বিধানসভায় নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি উঠলেও কোন ক্ষমতাবলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহি:রাজ্যে চাকরি প্রদানে ব্যস্ত।অভিযোগ, ২০১৮ সালে ফিনান্স অফিসার পদে একজন, কন্ট্রোলার অব এগজামিনেশন পদে একজন, লাইব্রেরিয়ান পদে একজন, কলেজ ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল পদে একজন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে চারজন, অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার পদে ছয়জন সহ ইউডিসি, এলডিসি পদে সরাসরি নিয়োগে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর বিজ্ঞাপন মোতাবেক বিভিন্ন পদে রাজ্যের শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীরা আবেদনও করেন। ২০১৮-র এই নিয়োগ প্রক্রিয়া মাঝপলে বাতিল হয়ে যায়। ২০২১ সালে এই পদগুলিতে নিয়োগের জন্য পুনরায় বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। এমনকী ২০১৮ সালে যারা আবেদন করেছিলেন তাদের মধ্যে যেমন বেকারের চল্লিশ বছর পার করে বয়স উত্তীর্ণ বেকার হয়েছিলেন তাদেরকেও ২০২১ সালে অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার পদে পুনরায় আবেদনের সুযোগ প্রদান হয় অন্যান্য পদের ক্ষেত্রেও ২০২১ সালে বয়স উত্তীর্ণ বেকারদের আবেদনের সুযোগ প্রদান হয়েছে। যদিও ২০২১ সালে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া মাঝপথে বাতিল হলে যায়। এখন আবার নতুন করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে এই পদগুলিতে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য আবেদন সংগ্রহ করা হয়। তবে ২০২৩ সালের এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২০১৮ এবং ২০২১ সালে আবেদনকারী রাজ্যের বয়স উত্তীর্ণ বেকারদের আর আবেদনের সুযোগ প্রদান হয়নি। যা অনৈতিক। ফলে তার অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার সহ অন্যান্য পদে আবেদনের সুযোগ পেলেন না। আঠারো এবং একুশ সালে আবেদনের নামে রাজ্যের বেকারের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যা বেকারদের ফিরিয়ে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি ২০১৮ এবং ২০২১ সালে আবেদনকারী রাজ্যের বেকার আজ বয়স উত্তীর্ণ। এমনকী তাদের চাকরির দরজা পর্যন্ত বন্ধ। এভাবেই সর্বক্ষেত্রে রাজ্যের বেকারদের ঠকাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। রাজ্যের বেকার যুবক যুবতী, ছাত্রছাত্রী গবেষকরা বিগত কয়েক বছর ধরে প্রতারিত সর্বক্ষেত্রে হচ্ছে। উল্লেখ্য, রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে বিরোধী দলের বিধায়কের দাবি ছিল ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৩ সালের ১৫ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে ছাব্বিশটি বিষয়ে ছাপ্পান্নজন অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করছে। আর অক্টোবর মাসে সাতটি বিষয়ে নয়জন অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসরা নিয়োগের মৌখিক সাক্ষাৎকার শুরু হয়। এর মধ্যে কেমেস্ট্রি বিভাগ ২ জন, সংস্কৃত বিভাগে ২, ফিলোসফি বিভাগে ১, আইন বিভাগে ১ জন, সাংবাদিক ও জনসংযোগ বিভাগে ১ জন, সোসিওলজি বিভাগে ১ জন, হিন্দি বিভাগে ১ জন নিয়োগের জন্য রাতারাতি সিদ্ধান্ত নিলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাপ্পান্নটি অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর নিয়োগের প্রথম পর্যায়ের মৌখিক সাক্ষাতকারের মাধ্যমে আট চাকরি বহি:রাজ্যের বেকারদের দেওয়া হয়। নয়টি শূন্যপদের মধ্যে আটটি চাকরি বহি:রাজ্যে। শুধু তাই নয়, যেদিন মৌখিক সাক্ষাতকার হলো এ দিন তাদের হাতেই চাকরির অফার তুলে দেওয়া হলো। বাকি আটচল্লিশটি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বহি:রাজ্যে চাকরি যাচ্ছে। অথচ নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি নির্দেশে রয়েছে চাকরি প্রদানের ক্ষেত্রে রাজ্যের প্রার্থীদের প্রাধান্য দিতে হবে। রাজ্য সরকারও চাকরি প্রদানের ক্ষেত্রে পিআরটিসি বাধ্যতামূলক করেছে। তবে তা মানা হচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয়ে। এমনকী এসটি, এসসি, ওবিসির সংরক্ষণ নীতি পর্যন্ত লঙ্ঘন হচ্ছে। ফলে সাধারণ শ্রেণীর বেকারের চাকরিও হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ২০২৪ সালে এসে নিয়োগ প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু হলেও এর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কলেজ ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল অর্থাৎ সিডিসি অধিকর্তার পদটি নেই। যার ফলে রাজ্য সরকারের পঁচিশটি সাধারণ ডিগ্রি কলেজ এ বছরও সর্বক্ষেত্রে আর্থিকভাবে বঞ্চিত হবে। ছয়টি অ্যাসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার পদের চাকরিও বহি:রাজ্যে যাচ্ছে। ফিনান্স অফিসার, কন্ট্রোলার অব এঞ্জামিনেশন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার, লাইব্রেরিয়ান, এলডিসি, ইউডিসি সহ অন্যান্য পদের চাকরিও বহি:রাজ্যে যাচ্ছে। অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর পদে প্রায় ছাপ্পান্নটি এবং অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদে প্রায় ছেচল্লিশটি পদের চাকরিও বহি:রাজ্যে যাচ্ছে। আবার প্রফেসর পদে নিয়োগ বন্ধ।

Dainik Digital

Recent Posts

এ কে-৪৭ ও প্রচুর কার্তুজ সহ ৬ বৈরী ধৃত মিজোরামে, চাঞ্চল্য!!

অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…

14 hours ago

ফাইফরমাশ খাটছেন টিএসআর জওয়ানরা !!

অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…

14 hours ago

ইন্ডিগো আরও একটি দিল্লীর বিমান চালু করছে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…

14 hours ago

ইন্দ্রপ্রস্থে ভোট!!

দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…

14 hours ago

বহিঃরাজ্যে গেল “ধানি লঙ্কা”ওরফে ধান্না মরিচ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…

1 day ago

কুম্ভ ইকনমি

২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…

1 day ago