বিনা টেন্ডারে রাবার চারা ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরা রিহ্যাবিলিটেশন প্ল্যানটেশন কর্পোরেশনে (টিআরপিসি) ব্যাপক অনিয়ম-বেনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে প্রচণ্ড ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। গত কয়েক মাস ধরেই টিআরপিসিতে অরাজকতা কায়েম করা হয়েছে। কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান পাতাল কন্যা জমাতিয়ার একতরফা ও মর্জিমাফিক কাজকর্ম নিয়েই কেবল অভিযোগ উঠছে। টিআরপিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়াকে কাঠের পুতুল বানিয়ে রেখে এমডি আর কে শ্যামলকে দিয়ে চাপাচাপি করে চেয়ারম্যান একের পর এক নিয়মবহির্ভূত কাজ চালিয়েছে বলেও অভিযোগ।এবার অভিযোগ উঠেছে সরকারী নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করে কোন টেন্ডার না আহ্বান করে টিআরপিসিতে প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকার রাবারের পলিব্যাগ চারা ক্রয় করা নিয়ে। শুধু তাই নয়, বিনা টেন্ডারে নিয়মবহিভূত ভাবে পছন্দের ব্যবসায়ী থেকে রাবার পলিব্যাগ চারা ক্রয় করার পর ব্যবসায়ী মালিককে তড়িঘড়ি টাকা
মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ ঘিরেও রাবার চারা ক্রয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে টিআরপিসিতে। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, টিআরপিসিতে অরাজকতা, অনিয়ম- বেনিয়ম, দুর্নীতির ঘটনা উঠে এলেও রাজ্য সরকার এখন পর্যন্ত নীরবতা পালন করে চলেছে।জানা গেছে, গত কয়েকদিন আগে টিআরপিসি বেসরকারী রাবার (পলিব্যাগ) চারা নার্সারির মালিক থেকে ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭৫০টি রাবার চারা ক্রয় করেছে।প্রতিটি পলিব্যাগ রাবার চারার পড়েছে ৯১ টাকা করে। টিআরপিসির তরফে সেই চারা ইতিমধ্যে বেনিফিসিয়ারিদেরও দেওয়া হয়েছে বলেও বলা হয়।ক্রয় করা সেই সব চারার মূল্য হলো ১ কোটি ৬৮ লক্ষ ১২ হাজার ২৫০ টাকা। কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ আনন্দ গোসাই জমাতিয়া থেকেই সিংহভাগ চারা ক্রয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যযাদের থেকে রাবার চারা
ক্রয় করা হয়েছে তারা হলেন সুজিত দাস ও উসমান নামের ব্যবসায়ী থেকে।কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সরকার ও তার অর্থ দপ্তরের নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে কীভাবে বিনা টেন্ডারে ১ কোটি ৬৮ লক্ষ ১২ হাজার ২৫০ টাকা খরচ করে রাবার চারা ক্রয় করা হলো। যেখানে সরকার ও তার অর্থ দপ্তরের নিয়ম চালু রয়েছে দু’লক্ষ টাকার। উপর সরকারের কোন দপ্তর, কর্পোরেশন, সংস্থা বিনা টেন্ডারে কোন কিছু ক্রয় করতে পারবে না।দু’লাখ টাকার উপর কোন কিছু কিনতে গেলে ই-টেন্ডার আহ্বান করে ক্রয় করতে হবে বলে সরকারের একটা নিয়মনীতি দীর্ঘ দিন ধরে চালু রয়েছে।এক্ষেত্রে প্রশ্ন, টিআরপিসি কী করে বিনা টেন্ডারে এত বিপুল টাকা খরচ করে রাবার চারা ক্রয় করল।অভিযোগ, কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান নেতৃত্বে সহযোগিতায় বিনা টেন্ডারে এত বিপুল টাকার রাবার চারা ক্রয় করেছে টিআরপিসি।শুধু তাই নয়, রাবার নার্সারির মালিক থেকে অতি তৎপরতায় ক্রয়ের বিল সংগ্রহ করেও আনা হয়। টাকাও খুব তাড়াতাড়ি মঞ্জুরও করে দেন কর্পোরেশনের এমডি। সোমবার সেই টাকা মালিকদের মিটিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। রাজ্যে আরও নামি পলিব্যাগ রাবার চারা বিক্রয়ে নার্সারি থাকলেও কেন আনন্দ গোসাই সহ মাত্র দু’তিন জন ব্যবসায়ী থেকে তা ক্রয় করা হয়েছে এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রাবার চারা ক্রয়ের পুরো ব্যাপারটি তড়িঘড়ি পছন্দমতো ব্যবসায়ী থেকে ক্রয় করার ঘটনায় শুধু অনিয়ম ও বেনিয়মই নয়, এর পেছনে ব্যাপক রহস্য রয়েছে বলেও টিআরপিসিতে সংবাদ।সেই বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করলে কেঁচো খুঁড়তে গর্ত থেকে সাপ বেরিয়ে পড়ার মতো ঘটনা ঘটবে বলেই টিআরপিসির সঙ্গে যুক্ত সকলেরই আশঙ্কা।কিন্তু কে তদন্ত করবে?বিড়ালের গলায় কে ঘন্টা বাঁধবে সেই প্রশ্নটি টিআরপিসিতে বড় করে দেখা দিয়েছে।কর্পোরেশনের কর্মচারীরা এই অনিয়ম-বেনিয়ম ও অন্যায়মূলক কাজের প্রতিবাদ করলে কর্মচারীদের চাকরিতে বরখাস্ত ও বদলি করার হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ।মুখ খুললে শোকজ নোটিশও গণহারে কর্মচারীদের ধরিয়ে দিচ্ছে। কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানের নির্দেশেই কর্মচারীদের এই অস্বস্তিকর দশা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও অভিযোগ।