নিয়োগ দুর্নীতিতে সীমা ছাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঘুমে সরকার।।
বিপর্যয়, আগেই সতর্ক করেছিল ইসরো।

অনলাইন প্রতিনিধি :-সিকিমের বুকে বিপর্যয় ডেকে এনেছে লোনাক হ্রদ। হ্রদ ফেটে জল বেরিয়ে প্লাবিত বিস্তীর্ণ সিকিমের বিস্তর্ণ এলাকা।যেন মৃত্যুপুরী সিকিম।একের পর এক মৃত্যুর খবর আসছে তিস্তার পাড় থেকে।বেরিয়ে আসছে দেহ।খোঁজ নেই বহু মানুষের। পাহাড়ে ঘেরা জনপদ যেভাবে নিমেষে মৃত্যুপুরী হয়ে গেল,তা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এখনও দুঃস্বপ্নের মতো।

কীভাবে লোনাক হ্রদের চেহারাটাই পাল্টে গিয়েছে, সেই উপগ্রহ চিত্রও প্রকাশ করেছে ইসরো। তবে লোনাক লেকের এই অবস্থা কিন্তু আকস্মিক নয়। লোনাক নিয়ে দীর্ঘদিনের আতঙ্কের কথা জানিয়েছে ইসরো।সিকিমের একেবারে উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত লোনাক লেক।

উচ্চতা ১৭ হাজার ফুট।লোনাক হিমবাহ গলেই এই হ্রদ তৈরির উপগ্রহ চিত্রও বিভিন্ন সময়ে ধরা পড়েছে সরোর ক্যামেরায়। হ্রদের বয়সও খুব বেশি নয়। তবে গত কয়েক বছরে যে হারে বেড়েছে এই হ্রদ, তা আগে থেকেই চিন্তায় রেখে ছিল ইসরোর বিজ্ঞানীদের। আর তাই নিয়ে বারবার সতর্কবার্তাও পাঠানো হয়েছিল।এর আগে ইসরোর পাঠানো মহাকাশে ঘুরতে থাকা একাধিক উপগ্রহের মাধ্যমে তোলা ছবি থেকে জানা গিয়েছিল; হিমালয়ের কোলে হিমবাহে ঘেরা এমন অনেক হ্রদ রয়েছে।যা থেকে বিপদের আশঙ্কা থাকে সবসময়। দিনের পর দিন যেভাবে বিশ্ব উষ্মায়নের প্রভাবে হিমবাহ গলছে, তাতে এই সব ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।সিকিমে থাকা এমন কয়েকটি লেককে নিয়ে আগেই সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।এবছর সেপ্টেম্বর মাসেও ইসরোর তরফে জানানো হয়েছিল,লোনাক সবথেকে দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকা হ্রদ।সিকিম ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি ও সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই লেকের ওপর নজরদারি চালাচ্ছিল। আগেই আশঙ্কা করা হয়েছিল, এই লেকে যেকোনো সময়ে ফাটল ধরলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বহু মানুষ।আর সেই আশঙ্কাই এবার সত্যি হল। এমনকী এই লেক থেকে জল বের করে নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।তাদের দাবি ছিল, যদি জল’ কৃত্রিম উপায়ে বের করে নেওয়া যায় তাহলেই লোনাকের গর্ভের পরিধি বৃদ্ধি পাবে ফলে লেকের দুপাশ প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।কিন্তু বিজ্ঞানীদের কোনও দাবি, যুক্তিকে মান্যতা দেওয়া হয় নি।২০২১ সালে একটি সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছিল, যাতে উল্লেখ করা হয়েছিল, গত এক দশক ধরে দ্রুত হারে বেড়েছে লোনাক লেক।হিমবাহ ফেটে বন্যার আশঙ্কাও সেখানেও বলা হয়।একেবারে সেই বার্তায় লাল কালি দিয়ে লেখা হয়েছিল ‘গ্লেসিয়ার লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড’ হতে পারে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১৯৬২ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে অর্থাৎ ৪৬ বছরে আয়তনে ২ কিলোমিটার বেড়েছে এই লেকের। আর ২০০৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বেড়েছে আরও ৮০০ মিটার। যদিও সিকিম প্রশাসনের দাবি, লেক থেকে বিপর্যয় আটকাতে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল। বারবার বিজ্ঞানীরা রিপোর্ট দেওয়ার পর নজরদারি চালানোর কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। বছর কয়েক আগে এই লোনাক লেক-কে ঘিরে শুরু হয় এক বিশেষ প্রজেক্টের ব্যবস্থা করেছিল সিকিম প্রশাসন।২০১৬ সালে ১৭০০০ ফুট উচ্চতার এই হ্রদে লাগানো হয় দুটি পলি পাইপ। অতিরিক্ত জল বের করা হয় তার মাধ্যমে। তবে সাম্প্রতিক বিপর্যয় থেকে স্পষ্ট, সব ব্যবস্থাই বিফলে গিয়েছে।