বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ, ক্ষতিগ্রস্ত ৪৬৭ বাড়ি, শিবিরে ৭৪৬!!

 বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ, ক্ষতিগ্রস্ত ৪৬৭ বাড়ি, শিবিরে ৭৪৬!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে গোটা রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষেবা।ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৬৭টি বাড়িঘর। ১৫টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ৭৪৬ জন।ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পাকা ধান সহ শাকসবজিরও।ঝড়ের সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে রাজ্যের নদীগুলির জলস্তরও বৃদ্ধি পেয়েছে।রেমালের প্রভাবে সোমবার সকাল থেকেই জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
রেমালের প্রভাবে সোমবার রাত নয়টার পরই ভারী বৃষ্টিপাত সহ ঝড়ো হাওয়া শুরু হওয়ার পরই রাজধানী আগরতলা সহ গোটা রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।অন্ধকারে ডুবে যায় গোটা রাজ্য।রেমালের প্রভাবে সোমবার সকাল থেকেই গোটা রাজ্যে বিদ্যুতের আসা-যাওয়া শুরু হয়। সোমবার রাত নয়টা নাগাদ ঝড়ো হাওয়া সহ ভারী বৃষ্টি শুরু হতেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা।ভারী বৃষ্টি সহ ঝড়ের কারণে রাজধানী আগরতলা সহ গোটা রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ পরিবাহী তারের উপর বড় বড় গাছ সহ গাছের ডালপালা ভেঙে পড়লে খুঁটিসহ বিদ্যুতের তারের ব্যাপক ক্ষতি হয়।বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে।ছিঁড়ে পড়ে বিদ্যুতের তার।টানা ২০- ৩০ ঘন্টা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় থাকার পর রাজধানী আগরতলা শহর ও শহরতলিতে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও রাজ্যের গ্রাম পাহাড়ে মঙ্গলবার রাতে সংবাদ লেখা
পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি।অন্ধকারে ডুবে রয়েছে রাজ্যের গোটা গ্রাম-পাহাড়।বিদ্যুৎ না থাকায় সোমবার থেকে মঙ্গলবার দুর্বিষহ দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন মানুষ। বিদ্যুৎ নিগমের অতি দুর্বল প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত পরিকাঠামোর কারণে খোদ রাজধানী শহর ও শহরতলিতেই বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতেই বিদ্যুৎ নিগমের ২০-৩০ ঘন্টা সময় লেগে যায়।জেলা ও মহকুমা সদরেও একই বেহাল অবস্থা। গ্রাম-পাহাড়ের বিদ্যুৎ পরিষেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।সারাই করার মতো পরিকাঠামো বিদ্যুৎ নিগমের না থাকায় গ্রাম-পাহাড়ের বিদ্যুৎ পরিষেবা কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে এ ব্যাপারে স্থানীয় বিদ্যুৎ নিগমের আধিকারিকরা পর্যন্ত বলতে পারছেন না।বিদ্যুৎ না থাকায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। হাসপাতালগুলিতে হাঁসফাঁস করছেন রোগীরা।পানীয় জল পরিষেবা বন্ধ হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতাল সহ বাড়িঘরের ট্যাঙ্কে জল পর্যন্ত তোলা সম্ভব হয়নি। ফলে হাসপাতালে শৌচালয় ব্যবহারেও দুর্ভোগে পড়েন রোগী ও তাদের সঙ্গীরা।টানা বিদ্যুৎ না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মৎস্য ব্যবসায়ী, আইসক্রিম ব্যবসায়ী, হোটেল ব্যবসায়ী থেকে মিষ্টির ব্যবসায়ীরাও।টানা বিদ্যুৎ না থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন হিমঘর ব্যবসায়ীরাও।
এদিকে মঙ্গলবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে খাদ্য, পর্যটন ও পরিবহণ দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান, ভারী বৃষ্টিসহ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ১৫টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।ত্রাণ শিবিরগুলিতে ৭৪৬ জন আশ্রয় নিয়েছেন। তাছাড়া রেমালের প্রভাবে ঘূর্ণিঝড়ে রাজ্যে ৪৬৭টি গৃহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।মন্ত্রী জানান,গত দু’দিনে রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বিভিন্ন নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। জলসম্পদ দপ্তর নদীগুলির জলস্তর ও বাঁধের উপর নজর রাখছে। মন্ত্রী জানান, রেমালের প্রভাবে রাজ্যে বিশেষ করে কৃষি ও বিদ্যুতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলি উদ্ধার ও গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলি চালিয়ে যেতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ২১৫.৫ মিলিমিটার। ঊনকোটি জেলায় সর্বোচ্চ ২৫২.৪ মিলিমিটার এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় সর্বনিম্ন ১৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তাছাড়া পশ্চিম জেলায় বৃষ্টি হয়েছে ২২৯ মিলিমিটার, সিপাহিজলায় ১৮৭.২ মিলিমিটার, খোয়াই জেলায় ১৯৯ মিলিমিটার, গোমতী জেলায় ১৯৮.২ মিলিমিটার, উত্তর জেলায় ২৪২ মিলিমিটার ও ধলাই জেলায় ২৪৮.৩ মিলিমিটার। সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যে রেমালের প্রভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যসচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।পরিস্থিতি মোকাবিলায় এসডিআরএফ, এনডিআরএফ, ফায়ার সার্ভিস, রাজ্য প্রশাসন, রাজস্ব দপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তর প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে।জানান, অনেক জায়গায় গাছ উপড়ে পড়ায় রাস্তা আটকে যায় এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হয়।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.