সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের একটি নির্বাচনি জনসভায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমস্ত বিশ্বশর্মা অম্লানবদনে জানিয়েছেন, চল্লিশ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে যে অনুপ্রবেশের সূচনা হয়েছিল, তার জেরেই আসাম বিধানসভার ১২৬ সদস্যের মধ্যেই ৪০ জনই ‘অনুপ্রবেশকারী’ এহ বাহ্য। সগর্জনে তিনি বলেছেন, ‘এর পরেও যেন আর হিন্দুদের মাথা ঠাণ্ডা রাখতে বলা না হয়।এত জন ‘অনুপ্রবেশকারী’ জনপ্রতিনিধি থাকলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এর বিরুদ্ধে তিনি ব্যবস্থা নিতে অপারগ কেন, সে প্রশ্ন ভিন্ন।
অবশ্য হিমন্তের দিকে একা তর্জনি নির্দেশ করে লাভ নেই। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী রাজস্থানের বাঁশবাড়া ও উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের জনসভায় প্রধান বিরোধী দলকে আক্রমণ বলেছিলেন, প্রতিপক্ষ কংগ্রেস হাতে ক্ষমতা পেলে ‘আপনাদের’ সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে তাদের হাতে তুলে দেবে, যারা অনুপ্রবেশকারী, যাদের ঘরে ঘরে ছেলেমেয়ে বেশি…. ‘আপনাদের’ মা-বোনেদের মঙ্গলসূত্রও বেহাত হয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের নিন্দা করে নির্বাচন কমিশনের কাছে নাগরিক সমাজের তরফে দুটি অভিযোগ জমা পড়েছিল।একটি সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল’ নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে, যাতে
স্বাক্ষর করেছিলেন,২,২০৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক। কমিশনের কাছে তাদের আর্জি ছিল, যে ভাষায় প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন, তাতে বিশ্বের কাছে ‘গণতন্ত্রের ধাত্রী’র মর্যাদাহানি হয়েছে। দ্বিতীয় অভিযোগটি করেছিল ‘সংবিধান বাঁচাও নাগরিক অভিযান’ নামের আর একটি
সংগঠন, যাতে স্বাক্ষর করেন ১৭,৪০০ মানুষ।সে আবেদনে বলা হয়,এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আদর্শ নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গের
পাশাপাশি ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনও ভঙ্গ করেছেন।তাদের আরও বক্তব্য ছিল, মোদি শুধু নির্জলা মিথ্যাই বলেননি,
মুসলমানদের তিনি অনুপ্রবেশকারী বলেছেন। তাদের সন্তানের জন্ম নিয়ে অসম্মান করেছেন।ফলত, ওই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী
একাধারে সাম্প্রদায়িক উস্কে দিয়েছেন এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের ঘৃণাও বাড়িয়ে দিয়েছেন। দিনের শেষে কমিশন অবশ্য মোদির দুই বক্তব্যে অন্যায় ও আপত্তিকর কিছু খুঁজে পায়নি।সেদিন বারাণসীতে মোদি ঘোষণা করেন, হিন্দু-মুসলমান রাজনীতি তিনি করেন না।যেদিন করবেন, সেদিনই জনজীবনে থাকার অধিকার হারাবেন। এর পরেও হিমন্তের মুখে প্রকাশ্য মঞ্চে সংখ্যাগুরুর যে
নির্ঘোষ শোনা গেল, তা কি নেহতাই প্রক্ষিপ্ত ঘটনা?তবে এই তন্ত্রেরঅনুসারী যারা, তাদের কাছে উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি বিচার্য বলে মনে হয় না। বিচার্য কেবল সংখ্যাগুরু আধিপত্যের জয়স্তম্ভ। তদনুরূপ তাদের নির্বাচনি ভাষণেও এই আধিপত্যবাদের অহঙ্কার সুস্পষ্ট এবং প্রকট। অথচ নির্বাচনি আবহে কী কী করা যাবে না, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সুস্পষ্ট নীতিমালা আছে।তাতে স্পষ্ট উল্লেখ, জাত, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা বা সম্প্রদায়ের নামে ভোট চাওয়া যাবে না।এমন কিছু বলা যাবে না, যাতে সমাজে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে। সাম্প্রদায়িক বা জাতিগত সংঘাতের পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। কিন্তু বিষয়টি শুধুমাত্র ‘সাম্প্রদায়িক’ খোপে সীমাবদ্ধ নয়।মূল প্রশ্নটি গণতন্ত্রের।স্বাধীনতার সাড়ে সাত দশক অতিক্রান্তের পর কোথায় চলেছি আমরা? অতলান্তে বিদ্বেষের কৃষ্ণগহ্বরে নয়তো? আবহমানকাল ধরে ধর্ম যেভাবে এ দেশের নির্বাচনে পরিসর দখল করে আছে এবং ছিল, বিশ্বের কোনও উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে তা বিরল।হয়তো এর একটি কারণ, স্রেফ ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ। অথচ ‘ধর্মমোহ’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ সেই কবে মানব জাতিকে সতর্ক করে লিখেছিলেন, ধর্মের বেশে মোহ যারে এসে ধরে / অন্ধ সে জন মার আর শুধু মরে। ধর্ম কী? ধর্ম একটি শক্তিশালী ‘সাইকোট্রপিক’ প্রক্রিয়া যা আমাদের শরীরে সুখানুভূতির হরমোহনগুলির নিঃসরণ ঘটায়। জীবন ও জগতের
যা কিছু মানুষের বোধবুদ্ধির বাইরে, উপরন্তু তাকে নিয়ত জ্বালাযন্ত্রণা, অনিশ্চয়তা, অস্থিরতায় ভোগায়, ধর্ম সেসবের ব্যাখ্যা দেয়।বিশ্ব সংসারে একটা গভীর অন্তর্লীন অর্থ খুঁজে দিয়ে সেখানে মানুষের অবস্থান নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। ধর্মের এই ভূমিকা ব্যক্তিমানুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও। কিন্তু যে ‘ধর্ম’ ভোটের আবহে তেজ বিকিরণ করছে সেটি কি তাই? সংশয় জাগে, এই ভারতে কি তা হলে ব্যক্তিসত্তার বাধ্যতামূলকদমন-অবদমনই ভবিতব্য? আজকের ভারতে নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে কি ধর্মই মোক্ষম বিভেদাস্ত্র?
অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…
অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…
অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…
দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…
২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…