বিমানবন্দরে প্রিপেইড গাড়ির বন্ধ পরিষেবা চালুর তৎপরতা
দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি || আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে বন্ধ হয়ে থাকা প্রিপেইড অটো। ট্যাক্সি কাউন্টার এখনও চালু হয়নি। যদিও বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, পুনরায় শীঘ্রই প্রিপেইড অটো/ট্যাক্সি কাউন্টার চালু করার জন্য পরিবহণ দপ্তর বিমানবন্দর অথরিটি ও অটো চালকদের মধ্যে গত চব্বিশ মার্চ একটি বৈঠক হয়েছে। গত বছর সাতাশ সেপ্টেম্বর যাত্রীর সুবিধার জন্য তৎকালিন পরিবহণ মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় ঘটা করে বিমানবন্দরে প্রিপেইড অটো/ ট্যাক্সি কাউন্টার উদ্বোধন করেছিলেন।
বিমানযাত্রী সহ বিভিন্ন মহলের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল অটো ও ফোর হুইলার গাড়ির ভাড়ার জুলুম ও হয়রানি থেকে রক্ষা করতে অটো ও ফোর হুইলার গাড়ির প্রিপেইড কাউন্টার চালু করার জন্য। কারণ সরকার তথা পরিবহণ দপ্তরের নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী প্রিপেইড কাউন্টারে গাড়ি ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে গাড়ি নিয়ে বাড়ি বা গন্তব্যস্থলে নির্বিবাদেই পৌঁছতে পারেন। দেশের সব বিমানবন্দরেই এই ধরনের প্রিপেইড কাউন্টার পরিষেবা চালু রয়েছে। বিমানযাত্রীর সুবিধার জন্য বিমানবন্দরে প্রিপেইড কাউন্টার চালু রাখা বাধ্যতামূলক।রাজ্য সরকার তথা পরিবহণ দপ্তরকেই প্রিপেইড কাউন্টার পরিষেবা চালু রাখতে হয় বিমানবন্দর থেকে যাত্রীদের বাড়ি বা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে গাড়ির ঝামেলা, ভাড়ার জুলুম, হয়রানি ও দুর্ভোগে যাতে না পড়তে হয় সেই কারণে। সেই কথা মাথায় রেখেই গত বছর সাতাশ সেপ্টেম্বর প্রিপেইড গাড়ি পরিষেবার কাউন্টার রাজ্য সরকার চালু করেছিল। তাতে বিমান যাত্রীরা বিমান থেকে নেমে গাড়ি করে বাড়ি বা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে ভালো সুবিধা পান। কিন্তু তারপর মাত্র ছয়দিন প্রিপেইড কাউন্টার চালু থাকার পর গত বছর দুই অক্টোবর সপ্তমী পুজোর দিন সিএনজি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি পেতেই অটো চালকরা প্রিপেইডে গাড়ি চালাতে রাজি নয়। সেই দিন থেকেই রাজ্য সরকার বা পরিবহণ দপ্তরের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই ও পরিবহণ দপ্তরকে না জানিয়েই বিমানবন্দরের প্রিপেইড যাত্রী পরিষেবা থেকে সব অটো গুটিয়ে নেয়। প্রিপেইড কাউন্টার ও তাতে অটো ও ফোর হুইলার গাড়ির অভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
তাতে পুনরায় যাত্রীদের বিমানবন্দর থেকে গাড়ি বা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে ভাড়ার দরকষাকষিও একাংশ অটো ও ফোর হুইলার গাড়ির ভাড়ার জুলুম ও হয়রানির মুখে নিত্য পড়তে হচ্ছে বলে ক্ষুব্ধ যাত্রীর অভিযোগ।এদিকে, বিমানযাত্রীরাই এখন দাবি করছেন দশ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে সিএনজি গ্যাসের মূল্য অনেকটাই কমেছে। প্রতি কিলোতে সিএনজি গ্যাসের মূল্য পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় কমেছে সাড়ে তিন টাকা। গত বছর শেষবার পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় সিএনজির মূল্য প্রতি কিলোতে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৭৭ টাকা ৩০ পয়সা। এখন গত দশ এপ্রিল মধ্য রাত থেকে সিএনজি গ্যাসের মূল্য কমে দাঁড়ায় প্রতিকিলোতে ৭৪ টাকা ৮০ পয়সা।পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার বাইরেও মূল্য কমেছে সিএনজি গ্যাসের। তবে মূল্য ভিন্ন। সঙ্গত কারণেই বিমান যাত্রীরা দাবি তুলেছেন সিএনজি গ্যাসের মূল্য কমায় বন্ধ হয়ে থাকা প্রিপেইড কাউন্টার শীঘ্রই পুনরায় বিমানবন্দরে চালু করার জন্য।যদিও বিমান যাত্রীদের বক্তব্য সিএনজি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পাক বা পেট্রোল, ডিজেলের মূল্যই বৃদ্ধি পাক না কেন, বিমানবন্দরে তার উপর নির্ভর করে প্রিপেইড গাড়ি পরিষেবার কাউন্টার বন্ধ বা চালু করার কোনও নিয়ম বা যুক্তি নেই। বিমান যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দরে সব সময় প্রিপেইড গাড়ি পরিষেবার কাউন্টার রাজ্য সরকারকে চালু রাখতে হবেই।
দেশের সব বিমানবন্দরে রাজ্য সরকারগুলি প্রিপেইড গাড়ি পরিষেবা চালু করেছে। তাই এখন দেখার গত ছয় মাস ধরে বন্ধ হয়ে থাকা আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে প্রিপেইড গাড়ি পরিষেবা কবে পুনরায় চালু করে রাজ্য সরকার ও তার পরিবহণ দপ্তর।এদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে দ্রুত যাতে বন্ধ হয়ে থাকা প্রিপেইড অটো ট্যাক্সি (ফোর হুইলার) গাড়ির কাউন্টার চালু করার জন্য ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে রাজ্য পরিবহণ দপ্তর। গত চব্বিশ মার্চ বিমানবন্দরে পরিবহণ দপ্তর, বিমানবন্দর অথরিটি ও অটো চালকদের মধ্যে বৈঠকে আলোচনা হয় এই পরিষেবা চালুর জন্য। এখন বিমানবন্দর থেকে পরিষেবা দিতে গন্তব্যস্থলের ভাড়া নির্ধারণ করা হচ্ছে। জানা গেছে, পনেরো এপ্রিলের পর প্রিপেইড চালুর দিন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।