বিমান অবতরণ সহজ করতে ৫৫০ মিটার দৃশ্যমানতা চালুর উদ্যোগ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে এমবিবি আগরতলা বিমানবন্দরে আরও কম দৃশ্যমানতায় খুব সহজেই বিমান অবতরণ করতে পারে তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিমান অবতরণে ৮০০ মিটারের পরিবর্তে দৃশ্যমানতা কমে হচ্ছে ৫৫০ মিটার। প্রবল বৃষ্টি, শীতের ঘনকুয়াশা এই সব প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিমান চালক আকাশ থেকে নিচে নেমে রানওয়েতে বিমান অবতরণ করাতে গিয়ে স্বাভাবিক দৃশ্যমানতা না পেয়ে বিমান অবতরণ করাতে প্রচণ্ড বিপাকে পড়ছেন। বিমান অবতরণ করতে গিয়ে বিমান চালক প্রবল বৃষ্টি বা ঘন কুয়াশার কারণে অস্পষ্ট রানওয়ে দেখতে পেয়ে কখনও রানওয়ের খুব কাছে বিমান নিয়ে এসেও বিমান অবতরণ করাতে না পেরে মুহূর্তের মধ্যে পুনরায় আকাশে উঠে যাচ্ছে।কখন আবার বিমান অবতরণ করাতে না পেরে আগরতলায়
আকাশের উপর বিমান নিয়ে পরপর
চক্কর কাটতে হচ্ছে। আবার কখনও
আগরতলার আকাশে বার বার চক্কর
কাটার পরও রানওয়েতে অবতরণ
করাতে না পেরে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল
টাওয়ারের নির্দেশে পুনরায় আকাশ
থেকে ফিরে যেতে হচ্ছে।কখনও
কলকাতা বিমানবন্দর কখনও গুয়াহাটি
বিমানবন্দরে গিয়ে বিমান অবতরণ
করছে।প্রবল বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশায় বিমানবন্দর রানওয়েতে দৃশ্যমানতা
কমে যাওয়ায় এই সব কারণে বিমান
উড়ান দীর্ঘ সময় বিলম্বিত হচ্ছে ও
তাতে বিমান বাতিলও হচ্ছে।
যাতায়াতে যাত্রীরা চরম যন্ত্রণায় ও
দুর্ভোগে পড়ছেন।তাতে সময়মতো
যাতায়াত করতে না পেরে যাত্রীরা
ক্ষতিগ্রস্তও হচ্ছেন।গত কয়েকদিনের
প্রবল বর্ষণেও রানওয়েতে বিমান
অবতরণ করাতে না পেরে আগরতলা
কলকাতা রুটের উভয় দিকে যাতায়াতের ইন্ডিগোর দু’টি ১৮০ আসনের এয়ারবাস বাতিল হয়। আগরতলা সেক্টরে গত কয়েকদিনের বর্ষণে দীর্ঘ সময় বিলম্বিতও হয়।বিমান অবতরণে উদ্ভুত সমস্যায় অনেকটা নিরসনে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া ভালো একটা উদ্যোগ নিয়েছে। প্রবল বৃষ্টি, ঘন কুয়াশা তথা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে ৫৫০ মিটার দৃশ্যমানতায় রানওয়েতে বিমান অবতরণের ব্যবস্থা চালু করতে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরের প্রধান তথা অধিকর্তা কৈলাশ চন্দ্র মিনা উদ্যোগ নিয়ে অনেকদিন আগেই দিল্লীতে তাদের প্রধান কার্যালয়ে ফাইল পাঠিয়ে দিলেন। দিল্লী থেকে ফাইলে অনুমোদনও দেওয়া হয়। বিমান বন্দরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিমান অবতরণের সুবিধার্থে অনেক ইন্সট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) চালু করা হয়। তাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে রানওয়েতে বিমান অবতরণের দৃশ্যমানতা ৮০০ মিটার চালু রয়েছে। বিমানবন্দরের এক আধিকারিক জানান, প্রবল বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশায় ৮০০ মিটার দৃশ্যমানতায় বিমান অবতরণ করাতে গিয়েও প্রচণ্ড সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিমান উড়ান তাতে ব্যাপক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে দুর্যোগের দিনগুলিতে বিমান অবতরণে অনেকটা সমস্যা দূর করতে আরও কম দৃশ্যমানতা ৫৫০ মিটার চালু করার জন্য জোর চেষ্টা করছে বিমানবন্দর অথরিটি। বর্তমান ব্যবস্থায় চালু থাকা ৮০০ মিটার থেকে আড়াইশো মিটার দৃশ্যমানতা কমিয়ে ৫৫০ মিটার করার উদ্যোগ নিয়ে এগোচ্ছে বিমানবন্দর অথরিটি। বিমান বন্দরের অধিকর্তা কৈলাশ চন্দ্র মিনা সোমবার এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, রানওয়ের উভয় প্রান্ত ধরে আইএলএস সিস্টেমে বিমান অবতরণ করাতে ৮০০ মিটারের পরিবর্তনে ৫৫০ মিটার দৃশ্যমানতা চালু করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। বিমান বন্দর অধিকর্তা জানান, বিমান বন্দরের রানওয়ের দীর্ঘ হল ৭৫০০ ফুট। উত্তর ও দক্ষিণে বরাবর হল রানওয়ে। রানওয়ের উত্তর দিকে যেখানে রানওয়ে শেষ হয়েছে সেখান থেকে আরও উত্তর দিকে ২০০ স্কোয়ার ফুট জায়গা অধিগ্রহণ করে দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে। বাকি জায়গা বিমান বন্দর অথরিটির কাছে আছে। রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় জায়গা অধিগ্রহণ করে দেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সার্ভের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাজ্য সরকার জায়গা অধিগ্রহণ করে দিলে এপ্রোজ লাইট বসানোর জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে। তিনি জানান, দরপত্র চূড়ান্ত হয়ে গেলে এপ্রোজ লাইট বসানোর কাজ শুরু হবে। বাংলাদেশের সীমানার কাছাকাছি ভারতীয় ভূখণ্ডে এপ্রোজ লাইট বসানো হবে বলে বিমানবন্দর অধিকর্তা জানান। বিমান অবতরণে ৫৫০ মিটার দৃশ্যমানতা চালু হলে প্রবল বৃষ্টি, ঘন কুয়াশা তথা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখনকার মতো বিমান অবতরণে আর সেই সমস্যায় পড়তে হবে না।প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিমান বাতিল ও দীর্ঘ বিলম্ব পুরোপুরি বন্ধ না হলেও অনেকটা সমস্যা মিটবে।