বিমান পরিষেবায় রাজ্যে অচল উড়ান প্রকল্প!!

 বিমান পরিষেবায় রাজ্যে অচল উড়ান প্রকল্প!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-কেন্দ্রীয় সরকারের ‘উড়ে দেশকি আম নাগরিক’ তথা উড়ান প্রকল্পে ত্রিপুরার মানুষ কোন সুবিধা পাচ্ছে না।চরম বঞ্চিত।কম ভাড়ায় উড়ান প্রকল্পের বিমান পরিষেবা উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে এক মাত্র ত্রিপুরা রাজ্যে চালু নেই। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাকি ৬ টি রাজ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের কম ভাড়ার উড়ান প্রকল্প চালু রয়েছে।রাজ্যে ডবল ইঞ্জিনের সরকার থাকলেও কেন্দ্রীয় সরকারের কম ভাড়ার উড়ান প্রকল্প রাজ্যে চালু নেই।সেই কারণে রাজ্যের মানুষ বিমানে বহিঃরাজ্যে যাতায়াতে সারা বছর নাগালের বাইরে খুব চড়া ভাড়ায় টিকিট নিয়ে যাতায়াত করছে।সারা বছর আকাশছোঁয়া ভাড়ায় বিমানে যাতায়াত ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্যে চালু থাকলেও কেন্দ্রীয় সরকারের উড়ান প্রকল্পের বিমানের সুবিধা কেন নেই-এই দাবি বারবার উঠলেও বর্তমান রাজ্য সরকার এখন পর্যন্ত রহস্যজনক ভাবে নির্বিকার ভূমিকা পালন করেই চলেছে। এই অভিযোেগ ক্ষুব্ধ রাজ্যের মানুষের।গত ১২সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লীতে একটি অনুষ্ঠানে উড়ান প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে বিমানে যাতায়াত সাধ্যের মধ্যে, বিশেষ করে নিম্নমধ্যবিত্তরা সেই সুবিধা পাচ্ছেন বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, আঞ্চলিক দেশীয় বিমান পরিবহণ সংক্রান্ত স্কিম উড়ান গোটাদেশে আঞ্চলিক বিমান পরিবহণে মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।দ্বিতীয় এশিয়া প্যাসিফিক মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সের উদ্বোধন করে এ কথা বলেন।প্রসঙ্গত, বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার দেশে আসার পর ২০১৬ সালে উড়ান প্রকল্প চালু করেছিল। উড়ান প্রকল্প চালুর উদ্দেশ হলো কম ভাড়ায় আঞ্চলিক বিমান পরিষেবা মজবুত করা।উড়ান প্রকল্পে নিয়ম হলো, যে সব বিমান সংস্থার বিমান পরিষেবা দেবে কেন্দ্রীয় সরকার বিমান সংস্থা গুলিকে ক্ষতি পোষাতে ভর্তুকি দেবে।রাজ্যগুলির ছোঁট ছোট বিমানবন্দরের মধ্যেও যাতে বিমান পরিষেবা চালু হয়।রাজ্যগুলির যেসব বিমানবন্দর বহুদিন ধরে বিমান চলাচলে ব্যবহৃত না হওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে সেই সব বিমানবন্দরকে আমূল সংস্কার করে বিমান পরিষেবা চালু করা।এয়ারপোর্ট অথরিটি সব ইন্ডিয়ার টাকায় ও ব্যবস্থাপনায় নষ্ট বিমানবন্দর সংস্কার করে দ্রুত চালু করার উদ্যোগ নেবে বলে ২০১৬ সালে উড়ান প্রকল্প চালু করার সময় কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা দিয়েছিল।বিশেষ করে উত্তর- পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ ও ভালো সুবিধা করার উপরও উড়ান প্রকল্পে জোর দেওয়া হয়।বিস্ময় ও পরিতাপের ব্যাপার হলো, ত্রিপুরা রাজ্য উড়ান প্রকল্প থেকে সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত। উড়ান প্রকল্পের কোন বিমান এই রাজ্যে চালু নেই।উড়ান প্রকল্প চালুর পরও অনেক বিলম্বের পর ত্রিপুরায় একসময় আগরতলা-আইজল, আগরতলা- শিলং, আগরতলা- ডিব্রুগড় এই তিনটি রাজ্যের মধ্যে বিমান যাতায়াতে সুবিধা চালু হয়েছিল।ভাড়াও নাগালের মধ্যে ছিল।আগরতলা-ডিব্রুগড়ের মধ্যে ফ্লাইবিগের বিমান ছিল।দুটি রুটে ইন্ডিগোর বিমান ছিল। কিন্তু দু-আড়াই বছর এই রুটে উড়ান প্রকল্পে বিমান পরিষেবা চালু রাখার পর আচমকাই ২০২২ সাল থেকে একে একে বিমান গুটিয়ে নেওয়া শুরু করে।সর্ব শেষ বিমান গুটিয়ে নেওয়া হয় গত
বছর ৩১ মার্চ আগরতলা- শিলংয়ের মধ্যে যাতায়াতে
ইন্ডিগোর বিমান।রাজ্যবাসীর প্রশ্ন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব রাজ্য মণিপুর, আসাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, মিজোরাম ও অরুণাচল প্রদেশে কেন্দ্রীয় সরকারের উড়ান প্রকল্পের বিমান পর্যাপ্ত সংখ্যায় চালু থাকলেও ত্রিপুরা কেন এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ত্রিপুরার সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব রাজ্যের মধ্যে উড়ান প্রকল্পের কম ভাড়ায় বিমান পরিষেবা চালু থাকলে রাজ্যবাসীর যাতায়াতে ভালো সুবিধা হতো। ছা সেই সব রাজ্য থেকে পর্যটকরাও ত্রিপুরা ভ্রমণে আসতেন।তাতে আর্থিক দিক দিয়ে ত্রিপুরা লাভবান হতো।ব্যবসা বাণিজ্য আরও প্রসার হতো। কিন্তু উড়ান প্রকল্পের বিমান চালু না থাকায় সেই সুবিধাও মার খাচ্ছে।তাছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের উড়ান প্রকল্প ত্রিপুরায় কার্যকর হলে কৈলাসহর বিমানবন্দর, খোয়াই ও কমলপুর বিমানবন্দরকে সংস্কার করে ছোট বিমান পরিষেবা চালু করা যেত।অথচ রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার থাকলেও রহস্যজনক কারণেই হোক বা বর্তমান রাজ্য সরকারের ব্যর্থতায়ই হোক রাজ্য ও রাজ্যবাসী সেই সুবিধা থেকে পুরো কী বঞ্চিত।কেন্দ্রীয় সরকারের বিমান সংস্থা অ্যালায়েন্স এয়ারের বিমান পরিষেবাও আগরতলা সেক্টরে চালু নেই।যদিও ত্রিপুরা বাদে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিমান অ্যালায়েন্স এয়ারের বিমান চালু রয়েছে।এই বিমানে – ভাড়া খুব কম নেওয়া হয়। অ্যালায়েন্স এয়ারের বিমান পরিষেবা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সঙ্গে কলকাতা ও অন্যান্য জায়গায় চালু রয়েছে।কম ভাড়ার অ্যালায়ন্স এয়ারের বিমান আগরতলা-কলকাতা রুটেও চালু যদি থাকত তা চলে রাজ্যের মানুষ বিশেষ উপকৃত হতেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.