অনেকদিন পর দিল্লীর জাতীয় রাজনীতিতে বিরোধী পালে মৃদুমন্দ হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। আপাতত ভারতের রাজনীতি যে খাতে এগিয়ে চলেছে, তাতে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে এই বিরোধী পালে হাওয়া অনেকটাই যে গতি পাবে তা রাজনীতির ঘটমান পরিস্থিতিই ইঙ্গিত দিচ্ছে। যে দল বর্তমানে লোকসভায় তিনশর বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসীন, সেই দলের কাছে ৫০ বা তার কাছাকাছি আসন নিয়ে বসে থাকা প্রতিপক্ষকে কখনোই ভয় পাওয়া উচিত নয়। অথচ সামনাসামনি না এসে পেছন থেকে কলকাঠি নেড়ে প্রধান বিরোধী দলের ষিনি মুখ, তাকেই কি না সুপরিকল্পিত কায়দায়, সচেতনভাবে প্রথমে সংসদের সদস্যপদ থেকে ডিসকোয়ালিফিকেশন করে দেওয়া এবং তাকে বাংলো ছাড়ার নোটিশ দেওয়ার মতো ঘটনা যে কার্যত শাসকের জন্যই যে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত সেটা দিন যত যাচ্ছে ততই জাতীয় রাজনীতিতে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। কার্যত বিরোধী দল কংগ্রেসের কাছে এটাই যেন শাপে বর হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিরোধীদের প্রতি শাসকের এই প্রতিহিংসামূলক আচরণ যে আসলে একধরনের ভীতি ও আতঙ্কের বহিঃপ্রকাশ, তা তড়িঘড়ি করে নেওয়া শাসকের তাড়াহুড়ো পদক্ষেপ থেকেই স্পষ্ট।এই হটকারী সিদ্ধান্তের পর পরই দক্ষিণের কর্ণাটকে বিধানসভার ভোটে রীতিমতো পর্যুদস্ত হয়ে পড়া শাসকের কাছে যে বড়সড় ধাক্কা এসে লাগে তা গোটা দেশেই ছত্রভঙ্গ বিরোধী শিবিরকে আকস্মিকভাবেই একজোট করে তুলতে অক্সিজেনের মতো কাজ করে। ঠিক এই পরিস্থিতিতেই পাটনাতে আগামী ২৩ জুনের বৈঠকের গতি প্রকৃতি দেখতে মুখিয়ে আছে গোটা দেশ। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিবিরোধী এই বৈঠক যে জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।এ অব্দি যা খবর, বিজেপিবিরোধী ১৭ টি দল এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবে। মূলত দলগুলোর শীর্ষ নেতারাই থাকবেন এই বৈঠকে। বিরোধী জোটের বৈঠকে রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেস দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা, সমাজবাদী নেতা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ, এনসিপির শারদ পাওয়ার, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব থাকরে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, তেজস্বী যাদব সহ আরও কিছু নেতার বৈঠকে থাকার কথা আছে। ছুঁতমার্গিতা ভেঙে বৈঠকে হাজির থাকবেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তাই সব মিলিয়ে জেডিইউ’র ডাকা বিহারে বিজেপিবিরোধী জোটের বৈঠক যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে জাতীয় রাজনীতির নিরিখে তা একশভাগ বলা যায়। কারণ লোকসভার ভোট এত এগোচ্ছে মোদি শাহ জুটির কৌশল যত কঠোর হচ্ছে, ততই নিজেদের অবস্থান বদলে নরম হচ্ছে বিরোধী দলগুলি। কংগ্রেস আর নিজেকে আগের মতো মাস্টারমশাই ভাবছে না। তেমনি জাতীয় দলের তকমা হারিয়ে তৃণমূল নেত্রীও এখন অনেকটাই নীচু গাইছেন। তবে ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে সম্মিলিত বিরোধী জোটকে বিজেপিকে হারানোর জন্য সদর্থক কিছু ভাবতে হলে সবার আগে যে ফর্মুলায় তাদের একজোট হতে হবে তা হলো ‘বড় মন’।যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী এবং যাদের ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি সেই ফর্মুলাকে সামনে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিরোধী দলগুলোর প্রত্যেকের সম্পর্কে অপরের নমনীয় ও শ্রদ্ধার মনোভাব থাকা উচিত। মুখে মুখে বিরোধী নেতারা সকলেই বিজেপিকে হারানোর কথা বললেও একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেওয়ার যে ফর্মুলা সেটা বাস্তবে রূপায়ণ করাটাই হল আসল কথা। আর সেটা করার জন্য নিজের অহংভাব যেমন ত্যাগ করতে হবে, তেমনি সবাইকে একজোট হয়ে ত্যাগ স্বীকার করে উদার বা বড় মনের পরিচয় দিয়ে এগোতে হবে। যদিও ‘বড় মনের’ পরিচয় দেওয়ার বিষয়টি শুধুই কথার কথা। সবাই নীতিগতভাবে জোটবদ্ধতার কথা বললেও সমস্যার সৃষ্টি হবে তখন, রাজ্যে রাজ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে যখন দর কষাকষি শুরু হবে। বিশেষ করে দিল্লী, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা ও পাঞ্জাব নিয়ে। যদিও আঞ্চলিক দলের নেতারা চাইছেন কর্ণাটক, কেরালা, হিমাচল, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, উত্তরাখণ্ড হরিয়ানা এই রাজ্যগুলোতে যেখানে কমবেশি ২০০ বেশি আসন রয়েছে, সেখানে সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ুক কংগ্রেস। বাদবাকি রাজ্যে যেখানে শক্তিশালী সেই আঞ্চলিক দলকে সমর্থন করুক কংগ্রেস। কিন্তু মমতা, কেজরি, মুলায়মের এই তত্ত্ব কংগ্রেস কতটা মানতে রাজি হবে তার উপরই বিরোধী জোটের ভবিষ্যৎ অনেকটা ঝুলে আছে।দেশের নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের দিনই বিরোধী জোটের পাটনা বৈঠকের ঘোষণা করেছিলেন নীতীশ কুমার। কিন্তু কংগ্রেস সহ বিভিন্ন দলের বেশ কয়েকজন নেতার অসুবিধাজনিত কারণে ১২ তারিখের বৈঠবে পিছিয়ে ২৩ জুন করতে হয়েছে। বিরোধী জোটের সলতে পাকাতে নীতীশ যখন কলকাতায় আসেন,তখনই পাটনায় বিরোধী জোটের বৈঠক ডাকার প্রস্তাবটি দেন মমতা। ১৯৭৪ সালে পাটনার গান্ধী ময়দান থেকে সম্পূর্ণ ক্রান্তির ডাক দিয়েছিলেন লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ। সেই জোটবদ্ধ আন্দোলনের জেরেই দিল্লীর তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের পতন হয়েছিল। প্রায় দীর্ঘ ৫০ বছর বাদে সেই ইতিহাসকে স্মরন করেই বিরোধীরা আবার মিলিত হতে যাচ্ছেন গান্ধী ময়দানে। বিরোধীদের মতে, বিজেপির একদর্শী ও কর্তৃত্ববাদী আদর্শের বিরুদ্ধে বহুদর্শী গণতান্ত্রিক আদর্শের লড়াইয়ের জন্য এটাই হল আদর্শগত জোট। রাজনীতির এই নয়া রসায়ন আগামীতে কোথায় গিয়ে ঠেকে সেটাই এখন দেখার।
অনলাইন প্রতিনিধি :-সুর বদলে এবার শান্তির বার্তা পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দরের।ভারত যুদ্ধ থামালে, তারাও থেমে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজৌরিতে পাক সেনার গোলাবর্ষণে প্রাণ গেল রাজৌরির অতিরিক্ত জেলা উন্নয়ন কমিশনার রাজকুমার থাপার।…
আজকের দিনের প্রতিটি যুদ্ধ মানেই প্রথমেই স্নায়ুযুদ্ধ।স্নায়ুযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের উপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ বাড়িয়ে তোলার মাধ্যমে…
অনলাইন প্রতিনিধি :- ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী শুক্রবার সকাল থেকেই…
অনলাইন প্রতিনিধি :-চার দিনের মাথায় আবারও ভূমিকম্প পাকিস্তানে।শুক্রবার রাত ঠিক ১টা ৪৪ মিনিট।আগের দিনের তুলনায়…
অনলাইন প্রতিনিধি :-বৃহস্পতিবারের পুনরাবৃত্তি। সন্ধ্যা আটটার পর থেকেই শুরু হয় একই কায়দায় ড্রোন মিসাইল হামলা…