বিরোধী কণ্ঠ রোধের প্রয়াস নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী, রতন!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-২০১৮ সালে রাজ্যে প্রথম বিজেপি- আইপিএফটি জোট সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।শুরু থেকেই এই অভিযোগ তুলে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা।বিশেষ করে বিধানসভায় জনগণের নানা সমস্যা নিয়ে বিরোধীদের কথা বলার সুযোগ নানাভাবে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিধানসভায় বিরোধী সদস্যরা জনগণের কথা উপস্থাপন করতে পারছেন না সময়ের অভাবে।সরকার পক্ষ বিধানসভার অধিবেশনের সময়সীমা কমিয়ে দিচ্ছে।যা গণতন্ত্রের পক্ষে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিরোধীদের এই অভিযোগ যে একেবারেই অসত্য নয়, বিধানসভার তথ্য থেকে তা স্পষ্ট।আর এর জন্য বিরোধীদের নিশানায় রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং সংসদীয় মন্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, শাসকদল কি বিধানসভায় বিরোধীদের মোকাবিলা করতে ভয় পাচ্ছে? বিরোধীদের উত্থাপিত নানা প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ার আশঙ্কায় ভুগছে? তা না হলে ডবল ইঞ্জিনের সুশাসনে বিধানসভার অধিবেশনের সময়কাল রহস্যজনকভাবে কমে যাচ্ছে কেন?এমন প্রবণতা তো সুস্থ গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এক্ষেত্রে পূর্বতন বাম সরকারের শেষ পাঁচ বছরের বিধানসভা অধিবেশনের তথ্য এবং বর্তমান রাম সরকারের ২০১৮ থেকে এখন পর্যন্ত সাত বছরে বিধানসভা অধিবেশনের তথ্য থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। তথ্য বলছে, বাম সরকারের শেষ পাঁচ বছরে অর্থাৎ ২০১৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত একাদশ বিধানসভার অধিবেশন ডাকা হয়েছে ১৫ বার।এই ১৫টি অধিবেশনে সর্বমোট কাজ হয়েছে ৭৫ দিন। এই ৭৫ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন একদিন থেকে সর্বোচ্চ বারোদিন পর্যন্ত অধিবেশন চলেছে। অন্যদিকে, ডবল ইঞ্জিন সরকারের আমলে ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত পাঁচ বছরে দ্বাদশ বিধানসভার অধিবেশন ডাকা হয়েছে ১২টি। অধিবেশন চলেছে মাত্র ৪৩ দিন।২০২৩ থেকে ২০২৪ দুই বছরে এখন পর্যন্ত ত্রয়োদশ বিধানসভার অধিবেশন ডাকা হয়েছে ৪ বার।অধিবেশন বসেছে মাত্র ১৫টি।সব মিলিয়ে সাত বছরে ৫৮ দিন। প্রশ্ন হচ্ছে, এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে ডবল ইঞ্জিনের সরকার দশ বছরেও বাম সরকারের ৭৩ দিন অতিক্রম । করতে পারবে না। রাম আমলে সাত বছরে একবারই মাত্র সর্বোচ্চ আটদিন অধিবেশন চলেছে। সেটি ছিল দ্বাদশ বিধানসভার দ্বিতীয় অধিবেশন।১৯ জুন ২০১৮ থেকে শুরু হয়েছিল, শেষ হয়েছিল ২৮ জুন,২০১৮। মাঝে দুদিন ছুটি ছিল। এরপর থেকে সর্বনিম্ন একদিন থেকে সর্বোচ্চ ছয়দিন পর্যন্ত অধিবেশন চলেছে।ছয়দিন একবারই চলেছে।
অথচ বিরোধী দলের সদস্যরা বারবার বিধানসভার অধিবেশনের দিন ও সময় বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছেন।সরকারপক্ষ তাতে কর্ণপাতই করছে না। সংখ্যার
জোরে বিরোধীদের কথা বলার সুযোগ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিধানসভায় গুরুত্বপূর্ণ বিলের উপর বিস্তারিত আলোচনা ছাড়াই ধ্বনিভোটে পাস করিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছে সরকার।যেসব ইস্যুতে এবং প্রশ্নে সরকার বিধানসভায় বিব্রত ও বেকায়দায় পড়তে পারে সেসব বিষয় ও প্রশ্ন উত্থাপন করার সুযোগ পাচ্ছে না বিরোধীরা।এমনটাই অভিযোগ। নানা কৌশলে বিধানসভার প্রশ্নসূচি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়ার অভিযোগও কম নয়।আর এই সবের জন্য বিরোধীরা দায়ী করছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং সংসদীয় মন্ত্রীকে।কেননা, এই দুজনই বিধানসভার যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী।জানা গেছে,ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরেই ত্রয়োদশ বিধানসভার পঞ্চম অধিবেশন আহ্বান করা হবে। পঞ্চম অধিবেশন কতদিনের হবে? সেটাই এখন দেখার।