বিলুপ্তির পথে পর্যটন কেন্দ্র ‘জঙ্গলমহল’

 বিলুপ্তির পথে পর্যটন কেন্দ্র ‘জঙ্গলমহল’
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

নিজ রাজ্যের পর্যটন শিল্প ছাড়া রাজ্যের অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। বাস্তব এই সত্যটি রাজ্য সরকার মেনে নিলেও কোনও এক অজ্ঞাত কারণে প্রয়োজন অনুসারে রাজ্যের পর্যটন শিল্পের বিকাশ করতে পারছেন না।


ভারতবর্ষের অন্যান্য রাজ্যে পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভর করে হাজার হাজার মানুষ পরিবার লালন পালন করছেন। সেই সঙ্গে সেই রাজ্য সরকারের অর্থনৈতিক বিকাশের অগ্রগতির রথ এগিয়েই চলছে।অথচ ত্রিপুরা রাজ্যের পর্যটন শিল্পের প্রচুর সম্ভাবনা থাকার পরও আশানুরূপ সাফল্য আসছে না। বহু রাজ্যে প্রকৃতির সৃষ্টিকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে পর্যটন শিল্প।অথচ ত্রিপুরা রাজ্যে পর্যটন শিল্প গড়ে তোলার বহু প্রাকৃতিক সম্পদ থাকার পরও গড়ে উঠছে না পর্যটন শিল্প।


রাজ্যের যে কয়টি পর্যটন শিল্প বর্তমানে রয়েছে সেগুলোরও অবস্থা ততটা স্থিতিশীল নয়। রাজ্যের প্রত্যেকটি মহকুমায় কিছু না কিছু পর্যটন শিল্পের পরিকাঠামো রয়েছে। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় দেখভাল এবং অর্থ বরাদ্দের জন্য সেই সম্ভাবনাগুলি ধীরে ধীরে মৃতপ্রায় হয়ে যাচ্ছে। খোয়াই মহকুমায় পূর্বগনকী গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০১২ সালে বেশ কয়েক একর জায়গা মিলে তৈরি করা হয়েছিল জঙ্গলমহল নামের একটি পর্যটন কেন্দ্র। শুরুতে বেশ জাঁকজমক ছিল এই জঙ্গলমহল।


রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমা থেকে গাড়ি বোঝাই করে রাজ্যের পর্যটকরা আসতেন। বনভোজনের পাশাপাশি শিশু ও বয়স্কদের বিনোদন, লেইকে বুটের মাধ্যমে ভ্রমণ সহ আরও একাধিক আমোদ প্রমোদের ব্যবস্থা ছিল এই জঙ্গলমহলে। পর্যটকদের নিকট থেকে ভালো অর্থ আয় হত সরকারের কালের বিবর্তনে সেই জঙ্গলমহল আজ ধ্বংসের পথে। রাজ্য সরকারের পর্যটন দপ্তরের কত কোটি টাকা এই জঙ্গলমহলের উন্নয়নে খরচ করা হয়েছিল তার কোনও হিসেব নেই। ২০১২ সাল থেকে এই জঙ্গলমহল পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় ব্লক কর্তৃপক্ষ।


এরপর ব্লক কর্তৃপক্ষ সেই জঙ্গলমহলকে লিজ দিতে শুরু করে বছরভিত্তিক। ব্লক কর্তৃপক্ষ যখন জঙ্গলমহল নিজেদের দায়িত্বে রেখেছিল তখন থেকেই জঙ্গলমহলে আয়ের চেয়ে ব্যয় ছিল বেশি। জঙ্গলমহলকে লিজ দেওয়ার পর সেই ব্যয় নাকি আরও বেড়ে যায়।পরবর্তী সময়ে সেই জঙ্গলমহলকে স্থানীয় পূর্বগনকী পঞ্চায়েতের হাতে তুলে দেওয়া হয়।পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষও সেই জঙ্গলমহলের পরিচালনা লিজের মাধ্যমে করতে শুরু করেন।এভাবে ধীরে ধীরে জঙ্গলমহল আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আছে বিলুপ্তির অপেক্ষায়।


এখন আসে না কেন পর্যটক। জঙ্গলমহল জুড়ে শুধু শ্মশানের নিস্তব্ধতা।স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এই প্রতিবেদককে জানান, জঙ্গলমহলটিকে আর ধরে রাখা যাচ্ছে না। প্রচুর অর্থের দরকার এর সংস্কারের জন্য। পঞ্চায়েত বা ব্লক স্তরের মাধ্যমে কোনও বরাদ্দ না থাকায় জঙ্গলমহলের পরিচর্যা একপ্রকার বন্ধের পথে। এলাকার স্থানীয় মানুষজন জানালেন রাজ্যের পর্যটন দপ্তর যদি এই জঙ্গলমহলটিকে হস্তান্তর করে নিজেদের হাতে তুলে নেয় তবে হয়তো জঙ্গলমহল পূর্বের ন্যায় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.