বিভৎস ট্রেন দুর্ঘটনা, ছিটকে গেল চলন্ত তিনটি মালগাড়ির কামরা!!
বিশ্বজুড়ে হাইপারসনিক ক্ষেপনাস্ত্রের প্রতিযোগিতা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে , সফলভাবে রেথিয়ন টেকনোলজিস কর্পোরেশনের তৈরি ‘ এয়ার ব্রিদিং হাইপারসনিক ‘ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে তারা । এর গতি শব্দের গতির চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি । আমেরিকার স্থানীয় সময় মঙ্গলবার পেন্টাগনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে , এয়ার ব্রিদিং ক্ষেপণাস্ত্রগুলি বায়ুমণ্ডল থেকে বাতাস সংগ্রহ করে । সেই বাতাস ইঞ্জিনে থাকা জ্বালানির সঙ্গে মিশে গিয়ে প্রবল গতি তৈরি করে । যুদ্ধ বিমান এবং হাতিয়ার উন্নয়ন সংক্রান্ত কর্মসূচি চলতি সপ্তাহ জুড়ে পরিচালনা করছে ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি ( ডিএআরপি ) ।

এই ধরনের অস্ত্র সরবরাহের চুক্তি পেতে রেথিয়ন ও লকহিড মার্টিন কর্পোরেশনের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে । রেথিয়নের ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক ব্যবসায়িক শাখার প্রেসিডেন্ট ওয়েস ক্রেমের বলেছেন , ‘ আমাদের দেশের হাইপারসনিক সক্ষমতাকে এগিয়ে নেওয়ার কাজটি জাতীয় অপরিহার্যতার বিষয় । সে কাজে আরেক ধাপ এগিয়েছি আমরা । একের পর এক সফল পরীক্ষা আমাদের এইচএডব্লিউসি প্রযুক্তিতে পরিপক্কতা অর্জনের জন্য ব্যাপক আত্মবিশ্বাস জোগাবে । ’ পেন্টাগন সূত্রে বলা হয়েছে , এয়ার ব্রিদিং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের যে পরীক্ষা চালানো হয়েছে , তা ২০১৩ সালের পর এই ধরনের অস্ত্রের তৃতীয় সফল পরীক্ষা ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত চারটি এয়ার ব্রিদিং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে । রেথিয়নের তৈরি অস্ত্রের পরীক্ষা দুবারই সফল হয়েছে । তবে লকহিডের একটি পরীক্ষা সফল আর একটি পরীক্ষা ব্যর্থ হয়েছে । হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের গতির চেয়ে পাঁচ গুণেরও বেশি শক্তি নিয়ে উচ্চ বায়ুমণ্ডলীয় স্তরে উড়তে পারে । তখন এর গতি থাকে ঘণ্টায় প্রায় ৬,২০০ কিলোমিটার । এর আগে গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর হাইপারসনিক গ্লাইডিং ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল উত্তর কোরিয়া । উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সেই খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছিল ।

কিম জন উন উত্তর কোরিয়ার পাহাড়ি এলাকা জাগাং প্রদেশ থেকে এই পরীক্ষা চালিয়েছিলেন । এর আগে ওই বছরেই ১৫ সেপ্টেম্বর উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া , উভয় দেশেই পরীক্ষামূলকভাবে ব্যলিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছিল । ব্যালিস্টিক দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশই ক্রমেই অত্যাধুনিক অস্ত্র উৎপাদন করে চলছে এবং নিজেদের মধ্যে অস্ত্র সম্ভার বাড়ানোর প্রতিযোগিতা শুরু করে । দিয়েছে । শব্দের চেয়ে দ্রুত গতির ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঠিক আগেই উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রসংঘে বলেছিলেন , ‘ আত্মরক্ষার খাতিরে পিয়ংইংয়ের অস্ত্র পরীক্ষার অধিকার কেউ অস্বীকার করতে পারে না । ‘ এবার সেই ক্ষেপণাস্ত্র দৌড়ে নাম লেখাল আমেরিকাও । উত্তর কোরিয়া ছাড়াও এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া এবং চিন ।

তবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে চিন ও রাশিয়া অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে । মার্কিন সেনেটর জ্যাক রিড তার বক্তব্যে কার্যত হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে সারা বিশ্ব যে প্রতিযোগিতায় নেমেছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন । তিনি বলেছেন , ‘ এর ফলে পরমাণু অস্ত্রের প্রতিযোগিতায় এক নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে আমেরিকা । এতদিন এই ব্যাপারে দেখা যেত দ্বিমুখী প্রতিযোগিতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে । এবার , প্রথমবারের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মুখোমুখি হতে হচ্ছে ত্রিপাক্ষিক প্রতিযোগিতার , যোগ দিয়েছে চিন । তবে উত্তর কোরিয়ার হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চায় না আমেরিকা ।

গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের ভাইস প্রেসিডেন্ট , জেনারেল জন ই হাইটেন বলেছিলেন , ‘ চিনের হাতে এখন এমন হাইপারসনিক মিসাইল রয়েছে , যাতে করে তারা যে কোনওদিন আচমকা আমেরিকার উপর পারমাণবিক হামলা চালাতে পারে । ‘ তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন , চিনের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পুরো বিশ্বকে প্রদক্ষিণ করার ক্ষমতা রয়েছে । ভারতও গত কয়েক বছর ধরে হাইপারসনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে । মার্কিন পার্লামেন্টে পেশ করা এক রিপোর্ট অনুসারে , ভারত দেশীয় প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে হাইপারসনিক মিসাইল তৈরিতে দারুণ সাফল্যও পেয়েছে । রিপোর্টে বলা হয়েছে , ভারত এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে , যা প্রচলিত অস্ত্রের পাশাপাশি পারমাণবিক ওয়ারহেডও নিক্ষেপ করতে পারে । ২০১৯ সালের জুন মাসে এবং ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত , হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির বেশ কয়েকটি সফল পরীক্ষা করেছে ।