বুবাগ্রার অপরিণত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও একগুঁয়ে মানসিকতায় তিপ্ৰা মথার নিচুস্তরের কর্মী-সমর্থকরা হতাশায় ভুগছেন। ওই সব সিদ্ধান্ত কী বুবাগ্রা জেনে বুঝেই করছেন নাকি ব্যক্তিগত লাভালাভ রয়েছে, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু হয়েছে পাহাড়ে এবং সমতলের বিরোধী রাজনৈতিক মহলে। মাস দুয়েক আগেও তিপ্রা মথার কর্মী-সমর্থকরা যেভাবে পাহাড়ে দাপিয়ে বেড়াত এবং পাহাড়ে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে চলেছিল, সেই দলে কেমন গাছাড়া মনোভাব। হতাশার লক্ষণ প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। নির্বাচনের দিনক্ষণ যত ঘনিয়ে আসছে পাহাড়ে বুবাগ্রা ও তিপ্রা মথার দলেরই ভাবমূর্তি ক্রমশ ফিকে হতে শুরু করেছে। কর্মী- সমর্থকরা ভালভাবেই বুঝে গেছেন বুবাগ্রার গ্রেটার তিপ্রাল্যাণ্ডের দাবি রাজনৈতিক লাভালাভের দাবি। ওই দাবি আদায় করতে হলে তিপ্রা মথাকে সম্মানজনক আসন নিয়ে মাথা উঁচু করে বিধানসভায় গিয়ে দাঁড়াতে হবে। অনেকেই বুঝেশুনে এগোনোর পক্ষপাতি বলে কথাবার্তায়, চালচলনে জানিয়ে দিচ্ছেন। যা রাজ্যের অন্যতম আঞ্চলিক দল তিপ্রা মথার কাছে অশনি সংকেত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। দলের ভেতরে এক রকম আবার প্রকাশ্যে আরেক রকম বক্তব্যে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বুবাগ্রা কখনও বলছেন তিপ্ৰা মথা এককভাবেই পঁয়তাল্লিশ থেকে পঞ্চাশ আসনে প্রার্থী দিয়ে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবেন। কখনও আবার অন্য কথা। কর্মী-সমর্থকদের বড় অংশের মধ্যে বুবাগ্রার বক্তব্য নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কর্মী-সমর্থকরা বুঝতে পারছেন বুবাগ্রার বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবের মোটেই সামঞ্জস্য নেই। তিপ্রা মথার পাহাড়ের নিচুস্তরের কর্মীরা তো বটেই দলের নেতৃত্বকেও শাসক বিরোধী জোট রাজনীতির পক্ষেই প্রকাশ্যেই সওয়াল করতে প্রত্যক্ষ করা গেছে বিভিন্ন সময়ে। একথা অনস্বীকার্য যে শাসক বিজেপিকে রুখে দেওয়ার লক্ষ্যেই পাহাড় রাজনীতির অন্যতম হোতা সিপিএমের নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা তিপ্রা মথায় শামিল হয়ে দলের কলেবর বৃদ্ধি করেছে। ফলে তিপ্ৰা মথা পাহাড়ে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে এবং এডিসির ক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বুবাগ্রার এককভাবে নির্বাচনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়ার বক্তব্য কর্মী-সমর্থকরা মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারছেন না। পাহাড়ের তিপ্রা মথার কর্মী-সমর্থকদের মূল লড়াইটাই চলছে বিজেপির বিরুদ্ধে। জোটের অন্যতম শরিক আইপিএফটির হাতে গোনা জনাকয়েক নেতৃত্ব ও বিধায়ক মন্ত্রী ছাড়া বেশিরভাগ তিপ্রা মথায় শামিল হয়ে গেছেন। লক্ষ্য একটাই প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া দিয়ে বিজেপি দলকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দেওয়া। প্রধান বিরোধী সিপিএম তো বাটেই জাতীয় কংগ্রেসের মতো সর্বভারতীয় দল, এমনকী তৃণমূল কংগ্রেসের মতো দলও যে জোটের জন্য তিপ্রা মথার সুপ্রিমোর মুখাপেক্ষী হয়ে আছে সেই আর বলার অপেক্ষা রাখে না। একাধিক বিরোধী নেতৃত্ব বৃহত্তর জোটের পক্ষেও সওয়াল করেছেন এবং করে যাচ্ছেন। বিজেপি জোটের সাতান্ন মাসে এমনকী তিপ্ৰা মথা এডিসি দখল করার পরেও পাহাড়ে উল্লেখযোগ্য কোনও উন্নয়ন হয়নি। গ্রাম পাহাড়ে রাস্তাঘাটের কঙ্কালসার করুণ চেহারা। স্বাস্থ্য পরিষেবা যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। স্কুলগুলিতে পড়াশোনার বেহাল অবস্থা। বিদ্যুৎ, পরিস্রুত পানীয় জল পাহাড়ে আজকের দিনেও অধরাই রয়ে গেছে। বলার কেউ নেই। ভিলেজ কমিটির নির্বাচন করা হয়নি। যার ফলে পাহাড়ের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে গেলেও লুটপাট খেয়োখেয়ি অবাধেই চলছে। কোথাও শাসকদের নেতৃত্ব মাতব্বরী করছেন, আবার কোথাও তিপ্রা মথার মাতব্বরী। যার যেখানে আধিপত্য তার সেখানেই মাতব্বরী বেশি। আবার আসন্ন নির্বাচনে বিরোধী ঐক্য বা জোট সবটাই নির্ভর করছে তিপ্রা মথা সুপ্রিমোর সিদ্ধান্তের উপর। কিন্তু জোটের বিষয়ে বুবাগ্রার ভূমিকা আশা ব্যাঞ্জক নয় ৷ পাহাড়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাহলে কী বুবাগ্রা নিজের হাতে গড়া আনারস বাগান নিজেই ধ্বংস করতে চলছেন।এমতাবস্থায় বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে তিপ্রা মথার সংগঠনে ভাঙন ধরার আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। আর তা হলে যে রাজনৈতিকভাবে লাভবান হবে শাসক দল বিজেপি সে আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে বুবাগ্রা জানিয়েছেন, তিনি অসুস্থতার কারণে চলতি মাসে দলের কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। সব মিলিয়ে বুবাগ্রার সিদ্ধান্ত এবং পাহাড় রাজনীতির গতি প্রকৃতির উপর নির্ভর করছে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল।
প্রতিবেশী বাংলাদেশে গত ছয়মাস ধরে চলতে থাকা অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একেবারে নিঃশব্দে এগিয়ে…
অনলাইন প্রতিনিধি:-প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করছে না সরকার। জেআরবিটির মাধ্যমে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেররাজধানী শহর আগরতলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়াল সেতু। শহরের পশ্চিম…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেরসরকারী স্কুলে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ হতেই রাজ্যের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উপর জুলুমের অভিযোগ উঠেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট একটি প্রতীককে ত্রিপুরা সরকারের রাজ্য প্রতীক/লোগো হিসেবে ব্যবহারের…
অনলাইন প্রতিনিধি :-সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকালই বিজেপির দশটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নামে চূড়ান্ত সীলমোহর পড়বে।…