অনলাইন প্রতিনিধি :- গত দু’দিনের টানা বর্ষণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। ছন্দপতন ঘটে স্বাভাবিক জনজীবনে। সন্ধ্যার পর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে খবর মিলেছে তাতে প্রায় প্রতিটি নদীরই বিপদসীমা ছুঁইছুঁই অবস্থা। যেমনি মনু নদী, তেমনি খোয়াই, সাব্রুমের ফেনি নদী, আগরতলার হাওড়া নদী, প্রত্যেকটি নদীর ক্ষেত্রেই এখন একই অবস্থা। দুপুরের পর শহর আগরতলার ক্ষেত্রে কিছুটা বিরাম দেখা গেলেও খোয়াই জেলা, উত্তর ত্রিপুরা, ঊনকোটি জেলাগুলির বেশিরভাগ এলাকা থেকেই অবিরাম বর্ষণের খবর মিলেছে। প্রশাসনিকভাবে রাতের মধ্যে বর্ষণ আরও তেজী হলে অবস্থা বেগতিক হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে অবশ্য আরও আগেই এই সংকেত দিয়ে রাখা হয়েছে। আগরতলা পুর নিগমের ক্ষেত্রে এ বছরও বর্ষার শুরুতেই দুর্ভোগ দেখা দিলো শহরবাসী। অনেক ক্ষেত্রেই নিকাশি ব্যবস্থার করুণ পরিণতির খেসারত দিতে হয়েছে তাদেরকে। এলাকাভেদে এমন বহু মানুষের বাড়িঘরেই বৃষ্টির জল ঢুকে পড়ে ছন্দপতন ঘটনায়।অনেকেই স্বাভাবিক জনজীবনে বাধ্য হয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায় চলে যান।জেলাশাসক ড. বিশাল কুমার শুক্রবার সকালেই সার্বিকভাবে এই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ময়দানমুখো হয়ে পড়েন।ঘুরে দেখলেন শ্রীলঙ্কাবস্তি এলাকা থেকে শুরু করে বলদাখাল এবং প্রতাপগড়ের বেশকিছু এলাকা। পরিদর্শন শেষে তার কথা অনুযায়ী বাড়তে পারে নদীর জল। যে কারণে প্রশাসনিকভাবে পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখা হয়েছে বলেও তিনি জানান। তবে ঝুঁকি না নিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় যারাই রয়েছেন, আগে থেকে নিরাপদ স্থানে তাদেরকে আশ্রয় নেওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি। যদিও প্রশাসনিকভাবে এরই মধ্যে তৎপরতার সাথে একদিকে যেমন নদী তীরে কিংবা তুলনামূলকভবে নিচু জায়গাগুলি থেকে জনগণকে টিলা জমিতে তুলে আনা হয়েছে তেমনি অনেক ক্ষেত্রে আবার স্বামী দয়ালানন্দ স্কুলে একটি শিবির খুলে দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা অবধি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মোট ৪টি শিবিরে অন্তত ৫৭পরিবারের ২০৭ জন আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে, প্রশাসনিকভাবে রাতেই জানানো হয় বর্ষণের ফলে ইতিমধ্যেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ১০৬টি বসত বাড়ি। এর মধ্যে ৩৩টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বাদবাকি ৭৩টি বাড়ির ক্ষেত্রে সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজস্ব দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বন্যায় পানিসাগর, লংতরাইভ্যালি, জিরানীয়া, করবুক, সাব্রুম সহ অন্য আরও বেশ ক’টি জাতীয় সড়কের মুখ থুবড়ে পড়েছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তৎপরতার সাথে সার্বিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেই জানানো হয় এ দিন। অন্যদিকে অবিরাম বর্ষণের ফলে রাজ্যের জাতীয় সড়কগুলির অবস্থা যখন করুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তখন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এই বিষয়টি নিয়ে শুক্রবারই কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ এবং হাইওয়ে মন্ত্রী নীতিন গড়করির সাথে। রাজ্যের জাতীয় সড়কগুলির দ্রুত সংস্কার ও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার অনুরোধ জানানোর পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীকে দ্রুততার সাথেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশঙ্কা করেন।
সূত্র মোতাবেক সন্ধ্যার পর এ দিন হাওড়া নদীর জল ছিলো ১০.০১ মিটার। অর্থাৎ স্বাভাবিকের তুলনায় সামান্য বেশি। রাজ্যের অন্যান্য নদীগুলির তুলনায় হাওড়া নদীর জলই সবচেয়ে বেশি ফুঁসছে বলেও জানানো হয়। নদীর জল বেড়ে যাওয়ার শহর আগরতলার পার্শ্ববর্তী চন্দ্রপুর, কাশীপুর, চানপুর এলাকাগুলির অবস্থা বেগতিক হতে শুরু করে। প্রশাসনিকভাবে বোট নামিয়ে চালানো হয় উদ্ধার কাজ। সার্বিকভাবে মহকুমার এই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন প্রশাসনের পাশাপাশি ময়দানে দেখা গিয়েছে বিধায়ক রতন চক্রবর্তীকেও। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতে কোনও এক সময় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের পাশাপাশি দমকা হাওয়ার জেরে রাজধানী আগরতলার লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়ি এলাকায় একটি বিশাল আকারের গাছ সটান রাজপথে এসে উপড়ে পড়ে। সকালে অবশ্য প্রশাসনিকভাবে তৎপরতার সাথে একে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। অন্যদিকে টাকারজলা গোলাঘাটি এলাকার রামহরিপাড়ায় প্রবল বর্ষণের জেরে জলের স্রোতে ভেসে যায় লোহার একটি ব্রিজ। এছাড়াও বিশালগড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে বলেও খবর মিলেছে। বিশেষ করে রাউথখলা এলাকা থেকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়। উদয়পুরের ক্ষেত্রেও নিকাশি ব্যবস্থার করুণ পরিণতির খেসারত দিতে হয়েছে সোনামুড়া চৌমুহনী, রাজারবাগ, খিলপাড়া, ব্রহ্মাবাড়ি এলাকার জনগণকে। এই পরিস্তিতিতে বিদ্যুৎ চপলতাও দারুণভাবে দেখা দিয়েছে সিপাহিজলার মেলাঘর, কাকড়াবন থেকে শুরু করে গোমতী জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়। এ দিন সকাল অবধি সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় সিপাহিজলা জেলার বিশ্রামগঞ্জ এলাকায়। ২১.১ সেমি বৃষ্টিপাত হয় শুধুমাত্র বিশ্রামগঞ্জ এলাকায় এবং পার্শ্ববর্তী মোহনভোগ এলাকায় হয় ২০.৫ সেমি। এছাড়াও জিরানীয়া এলাকায় ১৫.৯ সেমি, খোয়াই, তেলিয়ামুড়ায় ১১.২ সেমি, কাকড়াবনে ১০.৫ সেমি, অমরপুরে ২০.২ সেমি, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার বিলোনীয়ায় ১১.৪ সেমি, সাব্রুমে ১০.৯ সেমি, নতুনবাজারে ১৩.৮ সেমি, ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরে ৮.৫ সেমি এবং ধলাই জেলার কমলপুরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে ৭.১ সেমি। শুক্রবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮.৫ এবং সর্বনিম্ন ২৫.৮। আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে শনিবারও মেঘাচ্ছন্ন আকাশ এবং একই সাথে রাজ্যজুড়েই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে। তবে পৃথকভাবে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে উত্তর ত্রিপুরা জেলা এবং ঊনকোটি জেলার বিভিন্ন এলাকাগুলিতে।
অনলাইন প্রতিনিধি:-বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রবিবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগের…
অনলাইন প্রতিনিধি :- গুয়াহাটি মহানগরের বন্দার অঞ্চলে একটি বিধ্বংসী ভূমিধ্বসে দু’জন শিশু এবং একজন মহিলার…
অনলাইন প্রতিনিধি :- বর্ষার শুরুতেই কেরলে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় ৷ এ বছর নির্ধারিত সময়ের প্রায়…
অনলাইন প্রতিনিধি :- ২০১৭ সালে আবিষ্কৃত পেরুর মমিগুলি নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। বারবার প্রশ্ন উঠেছে,…
অনলাইন প্রতিনিধি :-একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে রাজ্যের উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের বিরুদ্ধে। এবার প্রধানমন্ত্রী…
অনলাইন প্রতিনিধি :- আগরতলা সহ রাজ্যের প্রায় সর্বত্র গত দুদিনে মাত্রাছাড়া বিদ্যুৎ দুর্ভোগ সইতে হয়েছে…