এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

ভয়ংকর হারে রাজ্যে বাড়ছে বেকার। সেই তুলনায় নিয়োগ নেই।এই অভিযোগ বোম ছাত্র সংগঠনের।ভয়ংকর তথ্য তুলে ধরে বাম ছাত্র সংগঠন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।২০১৪ সালে এদেশে যখন বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় সে সময় এই সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল দেশে প্রতি বছর ২ কোটি চাকরি দেবে বিজেপি সরকার।গত ১১ বছর ধরে দেশে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। সেই নিরিখে বিজেপি সরকার যদি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতো তাহলে তো ২২ কোটি বেকারের চাকরি হতো। কিন্তু সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা কী?খবরে প্রকাশ, দেশে ৪৫ বছরের মধ্যে এই মুহূর্তে বেকার সর্বোচ্চ মাত্রায় রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারেরও লক্ষ লক্ষ পদ শূন্য হয়ে আছে, নিয়োগ নেই। রেলে লক্ষ লক্ষ পদ শূন্য। নিয়োগ নেই বহু বছর ধরে। বিরোধীদের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়কালেও দেশে গত ১১ বছরে বেকার কেবল বাড়ছেই। সুতরাং শিক্ষিত বেকাররা যাবে কোথায়? কর্মসংস্থান নেই। দিশাহীন হয়ে পথে পথে ঘুরছে শিক্ষিত বেকাররা।
অন্যদিকে ত্রিপুরা রাজ্যের দিকে তাকালেও দেখা যায় যে,বামেরা যে জায়গায় রাজ্যকে ছেড়ে গিয়েছিল, বর্তমানে বিজেপি সরকার অন্তত বেকার ঠকানোর জন্য সেই রাস্তাকেই ধরে রেখেছে। বরং বলা যায় সেই রাস্তাকে আরও সুচতুরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ২০১৮ সালে এ রাজ্যে যখন বিজেপি সরকার ক্ষমতাসীন হয় তখনও বিজেপি সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল বছরে তারা ৫০ হাজার বেকারের চাকরির ব্যবস্থা করবে।কিন্তু ৭ বছর ধরে এ রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায়। খবরে প্রকাশ ৫০ হাজার চাকরি তো দূর, সাকুল্যে ১২ হাজারের মতো চাকরি দিতে পেরেছে তারা গত ৭ বছরে। চাকরি দেবার তো কথা ছিল ৫০ হাজার × ৭ অর্থাৎ ৩,৫০,০০০ জন বেকারকে। উল্টো বিধানসভার তথ্য বলছে দপ্তরে দপ্তরে বিজেপি রাজত্বে শূন্যপদ কেবল বাড়ছে। নিয়োগ নেই।
সবচেয়ে মারাত্মক যে তথ্য সামনে উঠে এসেছে তা হল এ রাজ্যে গত ৭ বছরে ৫২ হাজারের মতো শিক্ষক কর্মচারী কমে গেছে।সেই নিরিখে নিয়োগ নেই বললেই চলে।একসময় রাজ্যে সরকারী কর্মচারী ছিল প্রায় দেড় লক্ষেরও বেশি। সম্প্রতি বাম যুব সংগঠনের২ পদাধিকারী কর্মসংস্থান ইস্যুতে রাজ্য বিধানসভায় তথ্য তুলে ধরে রাজ্য সরকারকে বেকারবিরোধী বলে কাঠগড়ায় তোলে। তাদের পরিসংখ্যান মোতাবেক রাজ্যের মোট ৪২টি দপ্তরে এই মুহূর্তে শূন্যপদের সংখ্যা প্রায় ৫২ হাজারের মতো। সেই অনুযায়ী নিয়োগ কোথায়?
এই সরকারের আমলে চাকরি ক্ষেত্রে অর্থাৎ নিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ ওঠেছে। দেখা গেছে একেকটি নিয়োগের ক্ষেত্রে চার থেকে পাঁচ বছর সময় কাটিয়ে দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এটা কি ইচ্ছাকৃত নাকি সরকারের এটাই পলিসি তা বোধগম্য হচ্ছে না। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই মামলা মোকদ্দমা, আদালত, হাইকোর্ট ইত্যাদি হচ্ছে। এতে কি প্রমাণিত হয় না যে সরকার ইচ্ছে করেই দীর্ঘসূত্রিতাকে ডেকে আনছে। যেমন জেআরবিটি নিয়ে এ রাজ্যে কম জলঘোলা হয়নি। জেআরবিটি নিয়োগে প্রায় চার বছরের বেশি সময় লাগিয়ে দেয় সরকার। তেমনি টিপিএসসির নানা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাতে একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে। দীর্ঘসূত্রিতা। ঘোষণা থেকে শুরু করে বিজ্ঞাপন, তারপর প্রক্রিয়া শেষে পরীক্ষা, বাছাইপর্ব, নিয়োগ, পরিশেষে অফার প্রদান- সবকিছু সমাধা হতে হতে কয়েক বছর লেগে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক ত্রিপুরা ইঞ্জিনীয়ারিং সার্ভিসে নিয়োগের ক্ষেত্রেও হাইকোর্টে যেতে হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের। প্রতি ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকার দীর্ঘসূত্রিতার আশ্রয় নিচ্ছে।এটা কি রাজ্য সরকারের বেকারদরদের নমুনা?এটি কি ধরনের বেকারপ্রীতি?
পড়াশোনা শেষ করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে করতে এখন ছেলেমেয়েদের জীবনের অনেক অমূল্য বছর শেষ হয়ে যায়। এরপর নিয়োগ প্রক্রিয়াতে যদি দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দেয় তাহলে বেকাররা যাবে কোথায়?বেকাররা এই করে করে বয়সোত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছে।এর ফলে বেকাররা একদিকে ফুল বেনিফিট পাচ্ছে না অন্যদিকে পেনশনের সুবিধাও মেলে না। অর্থাৎ সবটাই চলছে বেকার ঠকানোর খেলা।এই অবস্থায় রাজ্যের শিক্ষিত বেকারদের ত্রাহি ত্রাহি রব।
রাম সরকারের আমলে আবার রাজ্যে নয়া এক কালচার আবিষ্কার হয়েছে। তা হলো অফার বিলি পর্ব। অফার বিলি পর্বে উপস্থিত থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী থেকে অন্যান্য মন্ত্রীরা। এর দেদার প্রচারও হচ্ছে। আদতে তা কতখানি বেকারদের কাজে আসছে তা বলা মুশকিল।
একদিকে সরকারী শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ নেই। অন্যদিকে,আবার বহি:রাজ্যের এনজিওকে ডেকে আনা হচ্ছে। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ হচ্ছে কম বেতনে। চাকরির কোনও নিশ্চয়তা সেখানে নেই। বেকারদের উপর ডবল কষাঘাত চলছে। বাম যুব সংগঠন সরকারের এই বেকারবিরোধী মনোভাবের প্রতিবাদ জানাতে পথে নামবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।দেখা যাক তারা শক্তভাবে বেকারার্থে সরকারকে চেপে ধরতে পারি কিনা।বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য অবিলম্বে শূন্যপদ পূরণ করার একান্ত আবশ্যক।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

জুলাই মাসে হবে শিলান্যাস,জিরানীয়ায় ৮০ কানি জমিতে তৈরি হবে অত্যাধুনিক পার্ক: সুশান্ত!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে জিরানীয়া মহকুমা এমএন কলোনিকে নিয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।…

5 hours ago

সামগ্রিক উন্নয়ন নিয়ে কথোপকথন, মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এল মুরুগন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-সামগ্রিকভাবে রাজ্যের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুকে সামনে রেখে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর সাথে বিস্তারিত আলোচনা…

6 hours ago

কৃষির উন্নয়নে নতুন রূপরেখা রাজ্যের: রতন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-কেন্দ্রীয় সরকারের জল বিভাজিকা প্রকল্পের মধ্য দিয়ে পূর্ব নোয়াগাঁও গ্রামটিকে কৃষির উন্নয়নের স্তরে…

6 hours ago

উড়িয়ে দেওয়া হবে মুম্বই বিমানবন্দর, তাজহোটেল!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হবে তাজ হোটেল এবং মুম্বইয়ের শিবাজি মহারাজা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর!…

7 hours ago

ফের হাজির কোভিড ১৯, সিঙ্গাপুর-হংকং বিপর্যস্ত!

অনলাইন প্রতিনিধি :-হংকং ও সিঙ্গাপুর সহ এশিয়ার বিভিন্ন শহরে করোনা ভাইরাসের নতুন ঢেউ দেখা দিয়েছে।…

7 hours ago

উড্ডয়নের সময় খুলে পড়ে গেল বিমানের চাকা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে আকাশে উড্ডয়নের পরই বিমানের একটি চাকা খুলে পড়ে যায়।…

1 day ago