ব্যর্থ হাওয়া অফিস!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-সাম্প্রতিক ১৭ নভেম্বরের আচমকা ঘূর্ণিঝড়ে রাজ্যে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বিদ্যুৎ এবং কৃষি ব্যবস্থার।প্রচুর বাড়িঘর নষ্ট হয়েছে।
প্রভাব পড়েছে রেল এবং বিমান পরিষেবার।সবটাই হয়েছে আগাম কোনও সতর্কতা না থাকায়।কয়েকদিন ধরেই আবহাওয়া দপ্তর থেকে জানানো হয় যে একটি নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে।এর জেরে রাজ্যে বৃষ্টিপাত হতে পারে। কিন্তু এভাবে আচমকা যে রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় হবে তা কেউ আঁচই করতে পারেনি। শুক্রবারই সকলেই জানতে পারে যে নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে তা সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়েছে।এবং -এর জেরে শুক্রবার সারাদিনই রাজ্যে আচমকা দুর্যোগজনিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।দুপুর পর্যন্ত হাল্কা থেকে মাঝারি, কখনও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হয় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে।বিকালের দিকে শুরু হয় ঝড়।এতে গোটা বিদ্যুৎ ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে গোটা রাজ্যে।অসময়ের এই বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয় কৃষিজাত সামগ্রীর।বিশেষ করের শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়।আবহাওয়া দপ্তর থেকে শুক্রবার সকাল থেকেই বুলেটিন,মেসেজ ইত্যাদি জারি হতে থাকে।কিন্তু আচমকা এই বুলেটিন জারি হওয়ার ফলে সবাই প্রায় অপ্রস্তুত হয়ে যায়।গোটা রাজ্য যেমন একদিকে অবরুদ্ধ হয়ে যায়।তেমনি সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে বিমান পরিষেবায়।বিমান কর্তৃপক্ষ দুপুরের পর আর কোনও বিমান আগরতলায় নামাতে পারেনি।তেমনি আগরতলা থেকে কোনও বিমানও আকাশে উড়তে পারেনি।তেমনি প্রভাব পড়ে রেল পরিষেবায়।গোটা বিদ্যুৎ ব্যবস্থা লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এমনিতেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থার হতশ্রী চেহারা সময়ে সময়ে দেখা দেয় রাজ্যে।অল্প বৃষ্টি, ঝড়ে রাজ্যের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে, এটা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে রাজ্যে। এই ব্যবস্থার উন্নতির কোনও লক্ষণ নেই অদ্যাবধি।কৃষি ব্যবস্থারও ক্ষতি হয়েছে গোটা রাজ্যেই।বিশেষ করে অসময়ের এই বৃষ্টিতে শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয় রাজ্যে।ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন কৃষকরা।সবকিছুর মূলে রয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের দুর্বল পূর্বাভাস।বর্তমান সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনেকাংশেই রোখা যায় আগাম পূর্বাভাসের কারণে। এখন উন্নতমানের প্রযুক্তির দৌলতে আগামা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস জারি করা হয়।বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড়, বৃষ্টিপাত ইত্যাদির কথা বলে সরকার, প্রশাসন আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।যেমন সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস আগাম জারি করা হলে প্রশাসন, সরকার থেকে ঘূর্ণিঝড় প্রভাবিত অঞ্চল থেকে মানুষজনকে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাওয়া হয়।ফলে জীবনহানি কম হয়। রেল বাতিল করা হয়,বিমান বাতিলের কথা আগাম জানানো হয় যাত্রীদের সুবিধার জন্য।বিদ্যুৎ কর্মীদের আগাম সতর্ক থাকার কথা বলা হয়।কন্ট্রোলরুম খোলা হয়। যদিও প্রাকৃতিক দুর্যোগ সবসময় যে পূর্বাভাস অনুযায়ী মিলে যায় এরকম কোনও গ্যারান্টি নেই।তবুও অনেকাংশেই পূর্বাভাস মিলে যায়।কিন্তু গত ১৭ নভেম্বর রাজ্যে মিধিলি নামের যে ঘূর্ণিঝড় এসেছে তার আগাম কোনও পূর্বাভাস ছিল না। শুক্রবারই আবহাওয়া দপ্তর থেকে এর প্রচার করা হয় এবং এর জন্য শুক্রবার এবং শনিবারের জন্য রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাত এবং ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়। ইদানীংকালে এই ধরনের নজিরবিহীন পূর্বাভাসের এহেন নজির নেই।কেননা ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ সহ সতর্কতা শুক্রবার দিনই রাজ্যবাসী জানতে পারে। ততক্ষণে রাজ্যের মানুষজন ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন কাজকর্মের জন্য।গিয়ে তারা বিড়ম্বনায় পড়েছেন।এর প্রভাব পড়েছে অফিস, আদালত, স্কুল কলেজ থেকে সর্বত্র।বিমান যাত্রীরা, রেল যাত্রীরা ব্যাপক বিড়ম্বনায় পড়ে।সীমাহীন দুর্ভোগের মুখে পড়েন তারা।তবে রক্ষা একটাই রাজ্যে কোনও প্রাণহানি হয়নি।তবে বাড়িঘরের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।বিমান যাত্রীরা,রেল যাত্রীরা গন্তব্যে যেতে পারেননি।এই অবস্থায় পরদিন অর্থাৎ শনিবারের জন্য ব্যাপক সতর্কতা জারি করে রাজ্যের আবহাওয়া দপ্তর।কিন্তু তাও সঠিক হয়নি। শনিবারদিন সকাল থেকেই রোদে ঝলমল আকাশ।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী আবহাওয়া দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী শনিবারদিন আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে স্কুলে ছুটি ঘোষণা করে দেন।আদতে এই ছুটি কোনও কাজে আসেনি। কেননা আগের রাতেই ঘূর্ণিঝড় পালিয়েছে।কিন্তু আবহাওয়া দপ্তর এরও পূর্বাভাস মেলাতে পারেনি। এইটুকু বলা যায়,এবারের ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আবহাওয়া দপ্তর পুরোপুরি ব্যর্থ।যা নজিরবিহীন ঘটনা বলাই যায়।