ব্যাম্বু মিশনের অর্থ নয়ছয় ৩ এনজিও কর্তা সহ চারজনের কারাদণ্ড!!

 ব্যাম্বু মিশনের অর্থ নয়ছয় ৩ এনজিও কর্তা সহ চারজনের কারাদণ্ড!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-ব্যাম্বু স্কিল
আপগ্রেডেশন প্রোগ্রাম প্রকল্পে বরাদ্দকৃত কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ আত্মসাতের দায়ে ত্রিপুরা ব্যাম্বো মিশনের মার্কেটিং ইনস্ট্রাক্টর এবং তিন এনজিও কর্তাকে কারাদণ্ডের আদেশ শুনিয়েছে সিবিআই আদালত। শুক্রবার ওই আদালতের মাননীয়া বিচারক শর্মিষ্ঠা মুখার্জি ভারতীয় দণ্ডবিধির120 (B)/420/468 ধারায় তিন এনজিও কর্তাকে চার বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। উল্লেখিত তিনটি ধারায় চার বছরের কারাদণ্ড সহ মার্কেটিং ইনস্ট্রাক্টর অচ্যুত কুমার দাসকে প্রিভেনশান অব করাপশন আইনের ৩২ ধারায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। চারজনের ক্ষেত্রে সব কটি সাজাই একসাথে চলবে। পাশাপাশি আর্থিক জরিমানাও করা হয় তাদেরকে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ওমেন ডেভলপমেন্ট সোসাইটি নামে একটি এনজিও ব্যাম্বো স্কিল আপগ্রেডেশন প্রোগ্রামে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে স্কিম জমা করে। সেই অনুযায়ী কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে এনজিওর জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু কোনও ধরনের কাজ না করে ভুয়ো রিপোর্ট জমিতে জলসেচের ব্যবস্থা করে তাদের দ্বিগুণ ফসল ও দ্বিগুণ আয়ের জন্য অগ্রণী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। গত ৭বছরে পাম্প বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ৪২৩২টি। ২০১৮ সালের আগে ছিল মাত্র ২৫টি। জলসেচের আওতায় আনা হয়েছে এমন জমির পরিমাণ ২১,১৬০ কানি। কৃষক উপকৃত হয়েছেন ৪২৩:২ জন। মোট ব্যয় ১২৫.২৬ কোটি। কাজ এগিয়ে চলছে ৩০০০টি। জনজাতি এলাকায় যেখানে প্রচলিত বিদ্যুৎ গ্রিড পৌঁছানো কঠিন বা সম্ভব নয়, সেসব এলাকায় ত্রিপুরা সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থায়নে রাজ্যের বিভিন্ন প্রত্যন্ত বাসস্থানগুলোতে সোলার মাইক্রো গ্রিড স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, সংযুক্ত করা হয়েছে। ২০১৮ সালের আগে রাজ্যে সোলার মাইক্রো গ্রিড ছিল মাত্র ২টি। ২০১৮ সালের পর এখন পর্যন্ত মাইক্রো গ্রিড বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ১৫২টি পাড়ায়। পরিবার উপকৃত হয়েছেন ৩৪৩৮ জন। মোট ব্যয় হয়েছে ৩৪.৩৭ কোটি। কাজ এগিয়ে চলছে ২১০টি পাড়ায়।
রাজ্য সরকারের আর্থিক সহায়তায় দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে/ গ্রামে/ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশুদ্ধ পানীয় জলের জন্য বসানো হয়েছে সোলার কমিউনিটি পিউরিফাইড ওয়াটার প্রকল্প। গত ৭ বছরে সোলার কমিউনিটি পিউরিফাইড ওয়াটার প্রকল্প বসানো হয়েছে ১৬টি পাড়ায়। পরিবার উপকৃত হয়েছেন ৫৫০ জন। মোট ব্যয় হয়েছে ৩.৩৬ কোটি। কাজ এগিয়ে চলছে ১৫টি পাড়ায়। গ্রামীণ বাজারগুলোতে আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য বসানো হয়েছে সোলার হাইমাস্ট। গত ৭ বছরে কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ৬১টি গ্রামীণ/আধা-শহর এলাকার বিশিষ্ট বাজার ও রাস্তা অঞ্চলগুলিতে। মোট ব্যয় হয়েছে ১.৭৮ কোটি। কাজ এগিয়ে চলছে ২৩৫টি। গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা ও নিরাপদ জীবনজীবিকার জন্য গ্রামের প্রত্যন্ত রাস্তা জমায়েতের স্থান হাসপাতাল, মোটরস্ট্যান্ড এলাকায় ইত্যাদি স্থানে বসানো হয়েছে সোলার স্ট্রিট লাইট। কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ৪২,৫৫৮টি। মোট ব্যয় হয়েছে ৯৩.০৩ কোটি। কাজ এগিয়ে চলছে ২২০০টি।

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিভিন্ন সরকারী অফিস, হসপিটাল, স্কুল, কোর্ট, পঞ্চায়েত ও টিএসআর ক্যাম্পগুলিতে সোলার অফ-গ্রিড পাওয়ার প্রকল্প বসানো হয়েছে। কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ২৫৯টি অফিসে (২৮৮৫ কিলোওয়াট)। মোট ব্যয় হয়েছে ৩৬.১৫ কোটি। কাজ এগিয়ে চলছে ২০টি (১০০ কিলোওয়াট)। বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন সরকারী অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর ইত্যাদি এলাকায় গ্রিড সংযুক্ত সোলার প্লান্ট বসানো হয়েছে। কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ৩৯টি (২৩৪০ কিলোওয়াট)। মোট ব্যয় হয়েছে ৬.৭২ কোটি ও RESCO মডেলে বিদ্যুৎ শুল্ক ৪.৯৯ প্রতি ইউনিট হিসেবে। কাজ এগিয়ে চলছে ৩৬টি।
গ্রামাঞ্চলে রান্নার জন্য কাঠ ও এলপিজির বিকল্প হিসেবে বসানো হয়েছে বায়োগ্যাস প্রকল্প। কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ১৭৮৫টি। মোট ব্যয় হয়েছে ৭.৫৪ কোটি। কাজ এগিয়ে চলছে ৮৩৫টি।
হর্টিকালচার দপ্তরের বিভিন্ন orchard-এ জলসেচের জন্য বসানো হয়েছে বিভিন্ন সোলার পাম্প। কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ৪২টি। মোট ব্যয় হয়েছে ১.৬৮ কোটি। কাজ এগিয়ে চলছে ৭টি।
যে সমস্ত এলাকাতে বিদ্যুৎ নির্ভরশীলতা কম, ওই সমস্ত এলাকাতে PWD, water resource department থেকে পাওয়া কৃষকদের জমিতে জলসেচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ১২৯টি। মোট ব্যয় হয়েছে ২.৯৮ কোটি। কাজ এগিয়ে চলছে ২টি।
গ্রামে/পাড়াতে সোলার পাম্প বসিয়ে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ১৩৫টি। মোট ব্যয় হয়েছে ৩.১৮ কোটি। কাজ এগিয়ে চলছে ৫০টি।
গ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে পড়াশোনার সুবিধার জন্য দশম শ্রেণীর স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সোলার স্টাডি ল্যাম্প বিতরণ করা হয়েছে ৩ লক্ষ। ব্যয় হয়েছে ১২.৪৭ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, ১৯৮৫-৮৬ থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত এই ৩২ বছরে রাজ্যে শিল্প ইউনিট ছিল ৫,৬৯৩, আর আমাদের ৭ বছরে শিল্প ইউনিট দাঁড়িয়েছে ৭৭৯০৮টি। –
এরা বিনিয়োগ করেছে ৭৭.১৫ কোটি টাকা। ৭ বছরে বিভিন্ন শিল্প ইউনিটগুলিকে ১৬৬টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল শেড বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। ৭ বছরে বিভিন্ন শিল্প ইউনিটগুলিকে ২৪৪ একর জমি বন্দোবস্ত করা হয়েছে। স্বাবলম্বনে ৫২০ কোটি টাকা বেকারদের স্বাবলম্বী করার জন্য প্রদান করা হয়েছে।এতে উপকৃত হয়েছে ১৫,৭৮৫ জন। PMEGP-তে ৪১৭ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য। উপকৃত হয়েছে ৬,৪৪৫ জন।Amtali By Pass Road-এর পাশে নির্মিত হচ্ছে Tripura Unity Mall.এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১১৪ কোটি টাকা। ত্রিপুরা চা-এর জন্য ই-নিলাম কেন্দ্রের শিলান্যাস করা হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ত্রিপুরা চায়ের স্বীকৃতি অর্জনের জন্য ২০১৯ সালে ত্রিপুর চায়ের লোগো একটি ব্র্যান্ড হিসাবে গঠিত করা হয়েছে। ত্রিপুরেশ্বরী চা, যা ত্রিপুর চা উন্নয়ন নিগম তৈরি করে তা সারা রাজ্যজুড়ে রেশনশপের মাধ্যমে ভর্তুকিতে গ্রাহকদের বিতরণ করা হচ্ছে। সাক্রমে ২০২০ সালে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (SEZ) স্থাপন করা হয়েছে। টিআইডিসি লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে
টাটা টেকনোলজি লিমিটেডের সহযোগিতায় ১৯টি আইটিআইকে আপগ্রেডেশন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তার জন্য এই আইটিআইগুলোকে Centre o Excellence হিসাবে উন্নত করতে চলেছে।২০১৮-র আগে আগরতলা শহরে হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট ছিল ২৮২টি। ৭ বছরে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১৬টি। ২০১৮-র আগে রাজ্যে CNG Station ছিল ৮টি। বর্তমানে এটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪টি। ২০১৮-র আগে রাজ্যে Petrol Pump ছিল ৬২টি। বর্তমানে এটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২১টি। আগে ত্রিপুরা রাজ্যে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ছিল ৪,৮০,১৮০টি। বর্তমানে এটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮,০৭,৭৯৪টি।
রাজ্যে পর্যটন শিল্প শক্তিশালী হওয়ায় দেশি বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। ২০১৭-১৮-তে রাজ্যে মোট দেশি-বিদেশি পর্যটক এসেছিল ৪,৮৩,৪৮৮ জন এবং রেভিনিউ কালেকশন হয়েছে ৩,৪৭,২৫,০০০ টাকা। আর ২০২৩-২৪-এ পর্যটক এসেছিল ৫,৪৫,২৯৯ জন এবং রেভিনিউ কালেকশন হয়েছে ৫,৭৮,৭৫,০০০ টাকা।
বিগত ৭ বছরে উদ্যান বিভাগের অধীন উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে। এখন পর্যন্ত ২০০৮ হেক্টর এলাকা অয়েল পাম চাষের আওতায় আনা হয়েছে। বিভিন্ন ফল চাষের এলাকা সম্প্রসারণ করা হয়েছে মোট ১৫,১৯৭.২ হেক্টর জমিতে। এছাড়াও ফুলচাষ, বাগিচা ফসল, আনারস চাষ, মশলাজাতীয় ফসল চাষ ইত্যাদির উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর সাফল্যও আসছে। মন্ত্রী বলেন, এভাবেই প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে রাজ্য। এর জন্য সরকার রাত-দিন একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কেননা, রাজ্যের উন্নয়ন, রাজ্যবাসীর সার্বিক উন্নয়নই আমাদের সরকারের মূল লক্ষ্য এবং বৈশিষ্ট্য। এর জন্য প্রথম বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং দ্বিতীয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা উভয়ের অবদান অনস্বীকার্য।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.