ব্ল‍্যাক অ্যান্ড হোয়াইট!!

 ব্ল‍্যাক অ্যান্ড হোয়াইট!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বৃহস্পতিবার লোকসভায় ভারতীয় অর্থনীতি নিয়ে একটি শ্বেতপএ পেশ করেছেন।সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সংসদে তাঁর অন্তর্বর্তী বাজেট বক্তৃতার সময় ঘোষণা করেছিলেন যে,কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৪ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ ইউপিএ শাসনের ১০ বছরের অর্থনৈতিক অব্যবস্থার রূপরেখা নিয়ে একটি শ্বেতপত্র নিয়ে আসবে। বৃহস্পতিবার সেই শ্বেতপত্র পেশ করা হয়েছে সংসদে। যাকে কেন্দ্র করে এখন জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় হচ্ছে।৫৯ পাতার ওই শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে,২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির সরকার যখন ক্ষমতায় আসে,তখন দেশের অর্থনীতি খুবই খারাপ অবস্থায় ছিলো।অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও আর্থিক শৃঙ্খলাহীনতা এবং ব্যাপক দুর্নীতি ছিলো।শ্বেতপত্রে দাবি করা হয়েছে, ২০১৪ সালে দেশের অর্থনীতি সঙ্কটে পড়েছিল।সেই সময় যদি এই শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হতো, তাহলে দেশের অর্থনীতিতে আরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তো এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দিত।শ্বেতপত্রে দাবি করা হয়েছে,রাজনৈতিক ও নীতিগত স্থিতিশীলতায় সজ্জিত এনডিএ সরকার পূর্বসূরি ইউপিএ থেকে ভিন্ন। বৃহত্তর অর্থনৈতিক মঙ্গলের জন্য অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনডিএ সরকার। দ্রুত সংশোধন করার পরিবর্তে এনডিএ সরকার সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে আর্থিক ব্যবস্থার সংস্কার করে।সেই সাথে শক্তিশালী পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে।মোদি জমানায় গত দশ বছরে এনডিএ সরকার সফলভাবে পূববর্তী ইউপিএ সরকারের রেখে যাওয়া চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে উঠেছে।কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সহজতর করতে ব্যর্থ হয়েছিল।পরিবর্তে বাধা সৃষ্টি করে অর্থনীতির গতি আটকে দিয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে শ্বেতপত্রে।শ্বেতপত্রে আরও বলা হয়েছে, সালের আগের সময়ের প্রতিটি চ্যালেঞ্জ এনডিএ সরকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং শাসনের মাধ্যমে পরাস্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ভারতকে দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পথে নিয়ে গেছে।ইউপিএ আমলে অসংখ্য কেলেঙ্কারি ছিল,যা রাজকোষের জন্য বিশাল ক্ষতি এবং রাজস্ব ঘাটতি নিয়ে আসে।শ্বেতপত্রে আরও বলা হয়েছে,এখনও অনেক কাজ বাকি আছে।২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে উন্নত দেশে পরিণত করতে হবে। তাই এই সময়কালকে ‘কর্তব্যকাল’ বলে শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।সামনে লোকসভা নির্বাচন।প্রস্তুতি একেবারে চূড়ান্ত।আগামী কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন দেশে লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করবে।তার ঠিক আগে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের দশ বছরের আর্থিক ব্যবস্থা নিয়ে বিজেপির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা, বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।এর পিছনে যে রাজনৈতিক কৌশল রয়েছে, তা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই।শ্বেতপত্র প্রকাশের মাধ্যমে বিজেপি ফের একবার দেশবাসীকে কংগ্রেস জমানার সীমাহীন আর্থিক কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতিকে মনে করিয়ে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে বসে নেই প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও। বিজেপির সংসদে শ্বেতপত্র পেশ করার পর, কংগ্রেসও সাংবাদিক সম্মেলনে করে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কৃষ্ণপত্র প্রকাশ করেছে।শেষ দশ বছরে নরেন্দ্র মোদির সরকার কীকী ভুল করেছে, তা তুলে ধরে লক্ষ্মীবারেই কংগ্রেস প্রকাশ করেছে কৃষ্ণপত্র।মোদি জমানায় শেষ দশ বছরের রাজনৈতিক অন্যায়,আর্থিক ও সামাজিক দুর্বলতা তুলে ধরে কংগ্রেস দাবি করেছে এই দশ বছর ছিল ‘অন্যায়কাল’।সাংবাদিক সম্মেলনে করে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন,এই দশ বছরে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে।বেকারত্ব বাড়িয়েছে, দেশের কৃষিক্ষেত্রকে ধ্বংস করেছে, নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্ররোচিত করেছে এবং দেশের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মারাত্মক অবিচার করেছে।অন্যদিকে কংগ্রেসের কৃষ্ণপত্র প্রকাশ নিয়ে খোঁচা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন দেশ গত ১০ বছরে নতুন উচ্চতাকে ছুঁয়ে ফেলেছে, তখন আমরা এই কৃষ্ণপত্রকে কালো টিকা হিসাবে নিচ্ছি, যাতে খারাপ নজর না পড়ে’। ফলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে শ্বেতপত্র বনাম কৃষ্ণপত্র যে অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠবে,এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।যদিও ব্ল‍্যাক অ্যান্ড হোয়াইটের এই লড়াইয়ে শেষ জবাব দেবে দেশের জনগণই।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.