ভারতের হাতে বিশ্বসেরা-বিধ্বংসী মিসাইল সিস্টেম

 ভারতের হাতে বিশ্বসেরা-বিধ্বংসী মিসাইল সিস্টেম
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

সাড়ে তিন বছরের প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে । ভারতীয় বায়ু সেনার হাতে চলে এসেছে বিশ্বসেরা বিধ্বংসী মিসাইল সিস্টেম । যার পোশাকি নাম ‘ এস ৪০০ ট্রায়াম্ফ ‘ । ইউক্রেন যুদ্ধের আবহেই গত এপ্রিল মাসে রাশিয়া থেকে তার প্রথম ইউনিট ভারতে এসে পৌঁছেছে । যদিও সরকারী ভাবে এ নিয়ে কেউ মুখ খোলেনি । দিন কয়েক আগে দিল্লিতে অগ্নিপথ ইস্যুতে তিন বাহিনীর প্রধান সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন । সেখানে সাংবাদিকরা ওই মিসাইল নিয়ে প্রশ্ন করলে বায়ু সেনা প্রধান ‘ নো কমেন্টস ’ বলে এড়িয়ে যান । বিশ্বস্ত সূত্রে খবর , অ্যাসেম্বলিংয়ের পর গত মে মাস থেকেই তা কর্মক্ষম ( অপারেশনাল ) হয়ে উঠেছে । চিনের চোরাগোপ্তা আক্রমণের মোকাবিলা করতেই রাশিয়া থেকে ‘ বিশ্বসেরা- বিধ্বংসী ’ এস ৪০০ ট্রায়াম্ফ মিসাইল কিনেছে সিস্টেম ভারত । মোট পাঁচটি ইউনিট রাশিয়া থেকে আসার কথা ।

যার প্রথম ইউনিট এসেছে গত এপ্রিলে । দ্বিতীয় ইউনিট আসার কথা ১৫ আগস্টের আগে । স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে দেশের অস্ত্র ভাণ্ডারের মধ্যে এ বার সেরা আকর্ষণ হতে চলেছে ‘ এস ৪০০ ট্রায়াম্ফ’‘মিসাইল সিস্টেম । পঞ্চম তথা শেষ ইউনিটটি আসার কথা আগামী বছরেরর ৩১ মার্চ । এগুলির পাল্লা হবে যথাক্রমে ৪০ কিলোমিটার , ২৫০ কিলোমিটার এবং ৪০০ কিলোমিটার । পাঁচটি ইউনিট কেনার জন্য ২০১৮ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার সঙ্গে ৫০০ কোটি ডলারের চুক্তি করেছিল কেন্দ্র । এটি পারে । এমন এক উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র যা একসঙ্গে ৩০০ টি লক্ষ্যে আঘান হানতে সক্ষম । ভূমি থেকে আকাশে যে কোনও টার্গেটে আঘাত করতে পারে। চোখের পলকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে শত্রুপক্ষের কমব্যাট ফাইটার জেট । এক লপ্তে ৩০০ – র বেশি ক্ষেপণাস্ত্র বহন করে নিয়ে যেতে পারে । দেশের সুরক্ষায় এমনই অ্যান্টি – এয়ারক্র্যাফট ওয়েপন সিস্টেমের অপেক্ষায় ছিল ভারত ।

ঠিক দুই বছর আগে পূর্ব লাদাখে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত তৈরি হওয়ায় পর মিসাইল বরাতের কাজ কত দূর এগিয়েছে তা দেখতে রাশিয়া ছুটে গেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ।
১৯৯০ সালে রাশিয়া এই প্রযুক্তি তৈরি করেছিল । প্রথমে এর নাম ছিল এস -৩০০ পিএমইউ । ২০০৭ সাল থেকে রাশিয়ায় বায়ুশক্তিতে যুক্ত হয় এস -৪০০ ট্রায়াম্ফ । ২০১৫ সালে প্রথম ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণে সক্ষম এস -৪০০ মিসাইল প্রযুক্তি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল ভারত । দুই দেশের মধ্যে এরপর ৫৪৩ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি সই হয় । কিন্তু তাতে গোঁসা হয় আমেরিকার । তারা ভারতকে বোঝায় , রাশিয়া থেকে এয়ার ডিফেন্স প্রযুক্তি যেন না কেনা হয় । অনেকদিন সেই নিয়েই বিষয়টি ঝুলে ছিল । কিন্তু ঘাড়ের কাছে চিনা ফৌজ নিঃশ্বাস ফেলার পরেই ভারত আমেরিকার গোঁসার তোয়াক্কা না করে অক্টোবরে রাশিয়ার সঙ্গে ৫০০ কোটি করে ২০১৮ সালের মার্কিন ডলারে চুক্তি পাকা করে ফেলে কেন্দ্র । ভারতের আগেই ২০১৪ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে এই মিসাইল সিস্টেম কেনার ব্যাপারে চুক্তি করেছিল চিন । ফলে চিনের হাতেও এই বিধ্বংসী মিসাইল সিস্টেম আছে ।

বিশেষজ্ঞরা বলেন , পৃথিবীর মিসাইল সিস্টেম হল এত সবচেয়ে শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স এটি । এর এক – একটি ইউনিটে থাকে আলাদা ব্যবস্থাপনা । কোনও ইউনিট থেকে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপ করার ব্যবস্থা , কোনওটায় ব্যাটল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম , দূরপাল্লার সার্ভেইলেন্স রাডার ইত্যাদি । একটি ইউনিটে আছে ট্রান্সপোর্টার ইরেক্টর লঞ্চার ভেহিকল । এটি আদতে ট্রাকের মতো দেখতে একটি গাড়ি , যা ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম । এই মিসাইল সিস্টেমের রাডার ৬০০ কিলোমিটার পর্যন্ত নিজের টার্গেট দেখতে পায় । যার অর্থ , যদি দিল্লির কাছে এস -৪০০ ট্রায়াম্ফকে বসানো যায় তা হলে এর রাডার লাহোর ও ইসলামাবাদ পর্যন্ত টার্গেট দেখতে পাবে । ৪ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত থাকে এই সিস্টেম । যার সর্বোচ্চ পাল্লা ৪০০ কিমি , ৪,৮০০ মিটার বেগে প্রতি সেকেন্ডে ছুটে গিয়ে সে টার্গেটে আঘাত করতে পারে । এরপর আছে ২৫০ কিমির পাল্লা , গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ২০০০ মিটার । তৃতীয় মিসাইলটির পাল্লা ৪০ কিমি , বেগ সেকেন্ডে ৯০০ মিটার ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.