ভারতে শিশুদের কোভিড-১৯ :নতুন ভ্যারিয়েন্ট, উপসর্গ ও প্রতিরোধ – ভয় নয়, সচেতন হোন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-২০২৫ সালের মার্চ মাসের পর থেকে দেশে শিশুদের মধ্যে কোভিড–১৯ সংক্রমণে নতুন ধারা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে NB.1.8.1,LF.7 এবং JN.1
ভ্যারিয়েন্টগুলো দ্রুত ছড়াচ্ছে, যার ফলে কিছু রাজ্যে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ বাড়ছে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উপসর্গ মৃদু হলেও কিছু ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতি:
কলকাতার হাসপাতালে ১৫ বছরের এক কিশোর গুরুতর ডিহাইড্রেশন ও পেটের সমস্যার জন্য ভর্তি হয়, তার কোভিড পজিটিভ আসে।
কর্ণাটকে তিন শিশুর সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে, যদিও কারও আইসিইউ প্রয়োজন হয়নি।
মহারাষ্ট্র:মুম্বাই ও পুণেতে গত এপ্রিল-মে মাসে প্রায় ৫০০ শিশুর কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে।
অধিকাংশের উপসর্গ মৃদু, স্বাস্থ্যকর্মীরা ভ্যাকসিন ও মাস্ক ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন।
নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব: NB.1.8.1,LF.7 ভ্যারিয়েন্টগুলো দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। JN.1 ভ্যারিয়েন্ট আগের তুলনায় বেশি সংক্রামক হলেও, এখন স্কুল বন্ধ বা বাড়ি থেকে কাজের মতো পদক্ষেপের প্রয়োজন নেই।শিশুদের উপসর্গ:উচ্চ জ্বর কাশি, সর্দি
পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি ক্লান্তি, শরীর ব্যথা শ্বাসকষ্ট চোখ লাল হওয়া বা র্যাশ
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা :দুই বছরের বেশি বয়সি শিশুদের মাস্ক পরোনো নিয়মিত হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজার ব্যবহার
ভিড় এড়িয়ে চলা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরার্মশ নেওয়া পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে শিশুদের আলাদা করা
চিকিৎসা পদ্ধতি :মৃদু উপসর্গ: বাড়িতে বিশ্রাম, বেশি পান, পুষ্টিকর খাবার, জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল, গলার ব্যথায় গার্গল।মাঝারি উপসর্গ: শ্বাসকষ্ট, অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯০-৯৪, হাসপাতালে ভর্তি, অক্সিজেন ও অ্যান্টিবায়োটিক।
গুরুতর উপসর্গ: অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯০-এর নিচে নামলে আইসিইউ ভর্তি, প্রোন পজিশনিং, চিকিৎসকের নির্দেশে ওষুধ প্রয়োগ।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:শিশুদের ক্ষেত্রে স্টেরয়েড, রেমডেসিভির, ফ্যাভিপিরাভির ইত্যাদি ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়।WHO ও ভারত সরকারের পরামর্শ:বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলেছেন, শিশুদের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়লেও আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। তাদের পরামর্শ হল, শিশুরা যেন নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করে, হাত পরিষ্কার রাখে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে।
ভারত সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রক ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, শিশুদের জন্য কোভিড ভ্যাকসিন কার্যকর ও নিরাপদ।
তারা অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিশুরা যেন যথাসম্ভব ভ্যাকসিন গ্রহণ করে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে। এছাড়া, কোভিড সংক্রমণজনিত উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নোওয়ার গুরুত্বও তুলে ধরা হয়েছে।
উপসংহার:শিশুদের মধ্যে কোভিড সংক্রমণ বাড়লেও আতঙ্কিত হওয়ার সময় আসেনি। সচেতন ও সুরক্ষিত থাকার মাধ্যমেই আমরা এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারব।
সূত্র:মহারাষ্ট্র স্বাস্থ্য দপ্তরের সর্বশেষ রিপোর্ট, ২০২৫ সালের মে মাস উত্তর-পূর্ব ভারতের স্বাস্থ্য দপ্তর ও বিভিন্ন জেলা স্বাস্থ্য রিপোর্ট, ২০২৫ সালের মার্চ-মেWHO কোভিড-১৯ শিশু সংক্রমণ নির্দেশিকা, ২০২৫ ভারত সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তি, এপ্রিল ২০২৫।