রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারী মাসে করার উদ্যোগ!!
ভারী-অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা
দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি || অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকার প্রভাব সরাসরি রাজ্যের উপর পড়বে না। কিন্তু এর প্রভাবে আজ বিকাল থেকে ১৭ মে পর্যন্ত রাজ্যের কিছু কিছু এলাকায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। বাতাসের গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার। এজন্য রাজ্যের দক্ষিণ ত্রিপুরা, গোমতী, ধলাই এবং উত্তর ত্রিপুরায় কমলা সতর্কতা (সতর্ক এবং প্রস্তুতি রাখা) এবং বাকি জেলাগুলিতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।শনিবার রাজ্য অতিথিশালার কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার স্টেট প্রোজেক্ট অফিসার শরৎ দাস। সাংবাদিক সম্মেলনে রাজস্ব দপ্তরের বিশেষ সচিব অনিন্দ্য কুমার ভট্টাচার্য বলেন,মোকা মোকাবিলায় আজ মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার সভাপতিত্বে এক উচ্চপর্যায়ের পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিন্হা, আগরতলাস্থিত আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা নেহুল কুলকর্নি। সাংবাদিক সম্মেলনে রাজস্ব দপ্তরের বিশেষ সচিব জানান,সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের দ্বারা সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য রাজ্য ও জেলা প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য ও জেলা পর্যায়ে ইতিমধ্যেই খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।সাংবাদিক সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে জনসাধারণকে অবগতি করার জন্য দুটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।এই নম্বর দুটি
হলো রাজ্যস্তরের জন্য ১০৭০ এবং জেলা পর্যায়ের জন্য ১০৭৭।দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার স্টেট প্রোজেক্ট অফিসার শরৎ দাস আরও জানান, এনডিআরএফ, এইচডিআরএফ, আপদামিত্র, সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের সতর্ক করা, রাজ্যের ৩৬টি স্থানে দুর্যোগ মোকাবিলায় যে সকল সামগ্রী রয়েছে সেগুলিকে প্রস্তুত করে রাখা,বন্যা প্রবণ অঞ্চলগুলিতে ত্রাণ শিবির খোলা,খাদ্য,পানীয়জল,স্বাস্থ্য ইত্যাদি বিষয়ক সুনিশ্চিত করার জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।আগরতলা শহর জলমগ্ন হলে জল নিষ্কাশনের পাম্পগুলি যাতে যথা সময়ে কাজ করে তার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।রাজ্যবাসীদের ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সচেতন করার জন্য প্রত্যেক তিন ঘণ্টা অন্তর অন্তর স্পেশাল বুলেটিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।এছাড়াও আবহাওয়া দপ্তর থেকে মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমে সকলকে সচেতন করা হচ্ছে।কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরকে ঘূর্ণিঝড়ের ফলে কৃষকদের ফসল নষ্ট হলে তাদের সত্বর সরকারী সহায়তা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আগরতলাস্থিত আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা নেহুল কুলকর্নি,তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য ও যুগ্ম অধিকর্তা সঞ্জীব চাকমা ৷ঘূর্ণিঝড় মোকা ক্রমশ বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে।তীব্রতা বাড়তে থাকায় কক্সবাজারে ১০ নম্বর, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে আট নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।আজ রবিবার দুপুরে আঘাত হানতে পারে মোকা।আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়,অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার।এটি দমকা
অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকা ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি ঝড়াবে।দেশের তিন বিভাগ চট্টগ্রাম,সিলেট ও বরিশালে বৃষ্টি হবে। বৃষ্টির কারণে দেশের পাঁচ জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের আশঙ্কা করছে এই অধিদপ্তর। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকার কারণে দেশের ছয় জেলায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুল রহমান।ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভা শেষে তিনি এ তথ্য জানান।প্রতিমন্ত্রী বলেন,মোকা অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে।এখনও উত্তর ও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। অর্থাৎ টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের দিকে এটা যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে আশঙ্কা করছি,মিয়ানমার ও বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় আঘাত হানবে।এর প্রভাবে চট্টগ্রাম, নোয়াখালি, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল, ভোলা বরগুনাসহ বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা নিয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, টেকনাফ ও কক্সবাজারের জন্য সুনির্দিষ্ট করে দুই থেকে তিন মিটার উচ্চতার(১মিটার সমান ৩.২৮ ফুট)জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। চট্টগ্রাম,নোয়াখালি,লক্ষ্মীপুর, বরিশাল,বরগুণা ও ভোলার জন্য দুই মিটারের কম উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।তিন মিটারের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হলে আশ্রয় কেন্দ্রের লোকজনের জন্য একটি আশঙ্কা থেকে যায়।‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হবে।এতে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়নি।তবে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী,নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড কাজ করছে।এখন বাতাসের যে গতিবেগ ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার,এটা বেড়ে হয়তো ১৮০ কিলোমিটার হতে পারে।