পেশাজীবীর রাজনীতি গতানুগতিকতার চাইতে খানিক দূরে থাকিবে, ভিন্ন হইবে এমন প্রত্যাশা সকলেই করিবে। সেইক্ষেত্রে ত্রিপুরায় এর আগে কোনও পেশাজীবী মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান নাই। অতীতে যাহারা আইন পেশা হইতে আসিয়াছিলেন তাহাদের মূল পেশা কখনোই আইন আদালত ছিল না, রাজনীতিকেই তাহারা প্রধান পেশা করিয়াছিলেন এবং আমরা সেই সকল মন্ত্রীদের গতানুগতিকতাতেই দেখিয়াছি। এইবার ভিন্ন ধারার কাজকর্ম দেখিতে কৌতূহলী রহিয়াছেন রাজ্যের মানুষ। সেই ভিন্নতা কী করিয়া আসিতে পারে। মানুষের সমস্যার প্রকার প্রকৃতি তো একইরকম, তাহা হইলে ভিন্নতা কী মতে আসিবে !কথা হইল সমস্যা এক হইলেও সেই সমস্যাকে দেখিবার নজর ভিন্ন থাকিবে। এক একজন এক এক ভাবে অর্থাৎ নিজের জ্ঞান বুদ্ধি, অভিজ্ঞতা এবং বিবেচনা বিশ্লেষণ দিয়া মানুষ তাহার চারপাশকে দেখিয়া থাকে। সেই দেখা রাজনীতিকের চোখে যেভাবে ধরা পড়ে অন্যের চোখে অন্যভাবে ধরা পড়িবে। কার্যত একজন রাজনীতিক আর পেশাজীবী বা সাধারণ মানুষ সকলে একই সমাজের মানুষ, সমাজবদ্ধ জীব। একজন মানুষ একটা সমস্যাকে দেখিয়া তাহার নিজের মতন বিশ্লেষণ করিয়া থাকে। আর সেই বিশ্লেষণের মধ্যে নিজে নিজে সমস্যা হইতে উত্তরণের পথও খুঁজে। সেই পথ একজন পেশাজীবী মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে নির্ণয় করিয়াছেন বা করিবেন উহাই আমরা দেখিতে চাহিব। উহাই হইবে নতুনত্ব।আমাদের রাজ্যের সমস্যা কী কী, উহা সাধারণ জ্ঞানবুদ্ধির মানুষ সকলেই জানেন। আবার তাহারা সেই সব সমাধানের সম্ভাব্য উপায়গুলিও জানেন, কিংবা উপায় বা পথের কাছাকাছি সন্ধানও জানেন। কিন্তু সেইসব সমস্যার সমাধানের কথা বলিয়া যাহারা ক্ষমতায় যান তাহারা সেই সমস্যার সমাধান করিতে চাহেন না বরং সেই পথত জানেন না। পরিতাপের হইল অনেক ক্ষেত্রে সেই পথ খুঁজিতেও চাহে না। পুনর্বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হইতে থাকিলে মানুষ অসহায়তা আর নিরাশার কারণে রাজনীতি আর রাজনীতিকের উপর হইতে ভরস হারাইতেছেন, মুখ ফিরাইতেছেন। তবুও দেশের মানুষ যেহেত গণতন্ত্রপ্রিয় তাই তাহারা একেবারেই মুখ ফিরাইতে পারেন না। দেখিে চাহেন প্রচলিত ব্যবস্থার বিকল্প পথগুলিও।সেই বিকল্পের প্রতি মানুষের যে ভরসা, তাহাতে সুবিচার করিতে
হইবে রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহাকে। রাজ্যের পরিচিত সকল সমস্যাকে তিনি কী দৃষ্টিতে দেখিবেন, কোন পথে ভাবিবেন সমাধান তাহা দেখিতে সকলেই আগ্রহ লইয়া পাঁচ বৎসর অপেক্ষা করিবেন। তবে তাহাকে কাজ করিবার অনুকূল পরিবেশ দিতে হইবে। রাজ্যের মানুষ সতত উন্নয়নের পক্ষে। বৃহত্তর উন্নয়নের জন্য মানুষ বরাবরই ক্ষুদ্র স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়া থাকেন। কিন্তু বাধা বা সমস্যা আসিয়া থাকে রাজনীতির বিভাজন আর রাজনীতিকের নিজ স্বার্থের দিক হইতে। সেই বাধা বা সমস্যা দল নির্বিশেষে সকল রাজনীতিকের তরফ হইতেই আসিতে পারে। তাই তিনি হইবেন গড় রাজনীতিকের চাইতে কুশলী এবং সজাগ-সচেতন। ত্রয়োদশ রাজ্য বিধানসভার প্রথম অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী যখন তাহার ভাষণে বিধানসভাকে পবিত্র বলিতেছেন, তখন সভার ভেতরেই ঘৃণ্য কাজ করিতেছেন তাহার দলের এক সদস্য। যা পরদিন গগনে গগনে বিদীর্ণ হইল। এই ঘটনা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ইমেজ ক্ষুণ্ণ করিয়াছে। দেশের যেই যেই রাজ্যে এই ঘটনা ঘটিয়াছে সর্বত্রই এই অপবিত্রতার দায়ে সেই সকল মন্ত্রী বিধায়ককে খারিজ করা হইয়াছে। ত্রিপুরায় কী হইবে তাহা আজও জানা যায় নাই। তবে ওই ‘অপবিত্রকারী’ সদস্যের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা লওয়ার ভাবনা ভাবিতেছে শাসকদল তাহা কাহারও জানা নাই। তবে নিরঙ্কুশ সংখ্যা থাকিলেও এই সময়ে শাসকদলের হাতে সদস্য সংখ্যা কম হওয়ায় তাহারা খারিজের পথে হাঁটিতেছে না বলিয়া অনুমান করা যায়। এই ঘটনা সারা দেশে আর এক নজির তৈরি করিবে, যাহা মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহার ভাবমূর্তিতে আঁচড় বসাইবে। এই ধরনের ঘটনা দলগত বা গোষ্ঠী, উপগোষ্ঠীগত নাশকতা নহে। ইহা ব্যক্তির নৈতিক পতন, যাহা মুখ্যমন্ত্রী বা তাহার সরকারকে অপদস্থ করে।তবে এই সকল বিঘ্নকে পাশে সরাইয়া রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের রূপরেখা তৈয়ারির সময় সমাগত। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের পাশাপাশি রাজ্যের নিজস্ব স্বপ্ন, যাহা সামান্য চেষ্টাতেই বাস্তব হইতে পারে সেইদিকে নজর দিতে হইবে। আর অগ্রাধিকারে থাকা দরকার রাজ্যের মানবসম্পদের সদ্ব্যবহার। যোগাযোগের বিচ্ছিন্নতা দিনে দিনে কাটিতেছে, ইহার সুফল কাজে লাগাইতে পারিলে রাজ্যের নিজস্ব উৎপাদন যেমন বাড়িবে তেমনি তৈরি হইবে রাজ্যে উৎপাদিত পণ্যের বাজার। এই পথে কর্মসংস্থান প্রচুর ঘটিবে। এই কথা ভাবিবার কারণ নাই যে রাজ্যের ছেলেমেয়েরা মেধা বা শিক্ষায় অন্য রাজ্যের চাইতে পিছাইয়া রহিয়াছে। কিন্তু তাহা সত্ত্বেও সর্বভারতীয় নানা চাকরির প্রতিযোগিতায় ত্রিপুরা কেন পিছাইয়া থাকে এই লইয়া ভাবনার সময় আসিয়াছে।
প্রতিবেশী বাংলাদেশে গত ছয়মাস ধরে চলতে থাকা অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একেবারে নিঃশব্দে এগিয়ে…
অনলাইন প্রতিনিধি:-প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করছে না সরকার। জেআরবিটির মাধ্যমে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেররাজধানী শহর আগরতলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়াল সেতু। শহরের পশ্চিম…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেরসরকারী স্কুলে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ হতেই রাজ্যের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উপর জুলুমের অভিযোগ উঠেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট একটি প্রতীককে ত্রিপুরা সরকারের রাজ্য প্রতীক/লোগো হিসেবে ব্যবহারের…
অনলাইন প্রতিনিধি :-সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকালই বিজেপির দশটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নামে চূড়ান্ত সীলমোহর পড়বে।…