ভিলেজ কমিটির নির্বাচন ঘিরে পাহাড়ে শক্তির জানান দিল মথা!!

 ভিলেজ কমিটির নির্বাচন ঘিরে পাহাড়ে শক্তির জানান দিল মথা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভিলেজ কমিটির নির্বাচনের আগেই আবারও পাহাড় ও সমতলে নিজেদের শক্তির জানান দিল তিপ্রা মথা।বৃহস্পতিবার ত্রিপাক্ষিক চুক্তির শর্ত পূরণ করা।ভিলেজ কমিটির নির্বাচন অবিলম্বে করা হোক। ১২৫ তম সংবিধান সংশোধনী বিলে লোকসভায় অনুমোদন প্রদান করা সহ তিন দফা দাবিতে রাজ্যপালের উদ্দেশে ডেপুটেশন পেশ করেছে তিপ্রা মথা।মিছিল ও ডেপুটেশন প্রদানকালে হাজারো মানুষের সক্রিয় উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।এর থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট রাজ্যের পাহাড়ে তিপ্রা মথা বিকল্প অন্য কেউ নেই।এদিন রাজ্যের প্রত্যেকটি ব্লকে এবং মহকুমা শাসক, জেলাশাসকের মাধ্যমে রাজ্যপালের উদ্দেশে ডেপুটেশন পেশ করেছেন তিপ্রা মথার নেতা কর্মী সমর্থকরা।
তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ সাংবাদিকদের জানান,সিপিএম রাজ্যে একটানা ২৫ বছর ক্ষমতায় ছিল।তবে সিপিএম রাজ্যের উপজাতি জনসমাজের জন্য
কিছুই করেনি।উপজাতি মানুষের ভোটে বামেরা ক্ষমতায় বসে ট্রাইবেল মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য কিছু করল না।তবে এখন আবার কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে এই প্রথম উপজাতি জনসমাজের আর্থসামাজিক উন্নয়নের
জন্য ঐতিহাসিক ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হলো।আর এরপর থেকেই সিপিএম মানুষকে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে।কারণ
বামেরা চায় না রাজ্যের ট্রাইবেল মানুষের সমস্যার সমাধান হোক।
তিনি বলেন,তাদের ২৫ বছরে রাজ্যে শুধুমাত্র হিংসা হয়েছে।যা এখন আর হচ্ছে না।এদিনও ডেপুটেশন প্রদান হয়েছে সারা রাজ্যে শান্তিপূর্ণভাবে।তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আমার বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।আমরা বলেছি বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতি ঘিরে যাতে উত্তর পূর্ব ভারতের জন্য পৃথক নীতি তৈরি করা হয়।রাজ্যের পাহাড়ি,বাঙালি,ট্রাইবেল, হিন্দু, মণিপুরি, চাকমা, মগ, লুসাই, বুদ্ধিষ্ট, খ্রিস্টান, মুসলিম সহ প্রত্যেক রাজ্যবাসীর স্বার্থে আমি কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে চুক্তি করেছি।যা বামেরা কোনও দিন করতে পারবে না।তাদের ক্ষমতা থাকলে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আলোচনায় বসতে পারে। তবে এসব বলে বামেরা রাজ্যের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। তাই এরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে।
প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন,কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে এই মাসেই ত্রিপাক্ষিক চুক্তি বৈঠক দিল্লীতে হচ্ছে। আর এই চুক্তিতে আমাদের সাংবিধানিক অধিকারগুলি দাবি করা হয়েছে।এরমধ্যে অন্যতম হলো ভূমির অধিকার, ভাষার অধিকার, আর্থ-সামাজিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার,১২৫ তম সংবিধান সংশোধন বিলে লোকসভার অনুমোদন, ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদে সরাসরি অর্থ প্রদান করা। ত্রিপুরা বিধানসভায় সংরক্ষিত আসন ২৬ টি করা হোক।এর মধ্যে উপজাতি সংরক্ষিত আসন করতে হবে ২৫টি এবং মণিপুরি সংরক্ষিত আসন হবে ১টি। অবিলম্বে ভিলেজ কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। তাই আমরা পথে নেমেছি। তবে একটি অংশ মিথ্যাচারে ব্যস্ত।তাই রাজ্যের মানুষকে তিনি সতর্ক থাকার পাশাপাশি শান্তি সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান জানান।
তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন, আমরা নতুন ত্রিপুরা না গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি। রাজ্যের উন্নয়ন বেকার যুবক যুবতীদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ছাড়া সম্ভব নয়।তাই আমরা রাজ্যের বেকারদের চাকরির ই জন্য এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।রাজ্যে বেকারদের অনেক মেধা রয়েছে। তবে তাদের কাছে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নেই।তাই তারা চাকরি থেকে এবং উচ্চ বেতনের চাকরি থেকে অনেক ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছে।তবে এখন রাজ্যে বেকার যুবক যুবতীদের স্কিল ডেভেলপমেন্টের দায়িত্ব নিয়েছে টাটা গ্রুপ।তাই ই বেকারের কমিউনিকেশন স্কিলের সমস্যার এখন সমাধান হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পঠনপাঠন শুরু হবে। প্রথমে টাটা গ্রুপের এই নল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রাজ্যের ২৫০ জন বেকার যুবক যুবতী প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। এরপর এক বছরের মধ্যেই ৫০০ জন বেকার এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়াশোনা যে করার সুযোগ পাবে।প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ জানান, রাজ্যের বেকারদের কর্মসংস্থান প্রদানে এবার উদ্যোগ নিয়েছে টাটা গ্রুপ। এসবই একটি অংশ চায় না। ওএনজিসি এবং গেইল কর্তৃপক্ষকেও তিনি সিএসআর প্রকল্পের মাধ্যমে সাহায্যের জন্য আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মাণিক্যের নাতি হিসেবে আমি রাজ্যে আর্থসামাজিক উন্নয়ন করতে এসেছি। তাই রাজ্যের বেকার সহ রাজ্যবাসীর সমস্যার সমাধানে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। তাই বলে আমরা ভারতবর্ষের সংখ্যালঘু মানুষের উপর হামলা করব না। রাজ্যের শান্তিসম্প্রীতি রক্ষায় তিনি সকলকে আহ্বান জানান। আসন্ন এডিসি ভিলেজ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিপ্রা মথা দলের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার ডম্বুরনগর ব্লকে গণডেপুটেশন প্রদান করেন দলের নেতৃত্ব ও কর্মীসমর্থকরা।এদিন রাজ্যপালের উদ্দেশে ডম্বুরনগর ব্লকে তিনটি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। গণ্ডাছড়া রাজস্ব ডাকবাংলো থেকে সকাল এগারো ঘটিকায় তিপ্রা মথার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে একটি মিছিল বের হয়ে মহকুমার বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে ডম্বুরনগর ব্লকে মিলিত হয়। সেখান থেকে পাঁচ প্রতিনিধির দল বিডিওর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের তিন দফা দাবিসনদ তুলে দেন।
তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে পানিসাগর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কার্যালয়ে তিপ্রা মথা দলের উদ্যোগে সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক তথা বিডিওর নিকট গণডেপুটেশন প্রদান করা হলো।ডেপুটেশনটি মূলত রাজ্যের রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লুর উদ্দেশে প্রেরণ করা হয়েছে। এই দিন বেলা বারোটা নাগাদ পানিসাগরের বিভিন্ন প্রান্তের তিপ্রা মথা দলের নেতা কর্মী ও সমর্থকেরা পানিসাগর টাউন হলের সামনে জমায়েত হয়ে মিছিল সহকারে ডেপুটেশনে মিলিত হন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.