সংবাদপত্রে টেণ্ডারের বিজ্ঞাপন, সংক্রান্ত অর্থ দপ্তরের বিতর্কিত সার্কুলার ঘিরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া!!
ভেষজ আবির আসছে রাজ্যের বাজারে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা কাঙিক্ষত পর্যায়ে না পৌঁছলেও সৌন্দর্য সচেতনতা তৈরি হয়েছে অধিকাংশের মধ্যে।দোল এখন দোরগোড়ায়।বাঙালিদের উৎসব অনুষ্ঠানগুলোয় ব্যবহৃত হয় আবির। সবচেয়ে বেশি পরিমাণ আবিরের ব্যবহার হয় দোল ও হোলি উৎসবে। এই সময়েই রঙ মাখানো হয় গায়ে। রঙের এই উৎসবে আবির ছাড়া অসম্পূর্ণ। কিন্তু অনেকেই রঙ থেকে নিজেকে আড়ালে রাখেন, রঙ খেলার ইচ্ছে থাকলেও। কারণ রাসায়নিক সামগ্রী দিয়ে তৈরি আবিরের কারণে এলার্জি থেকে শুরু করে ত্বকের নানা উপসর্গ দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে ভেষজ আবির। এর প্রচলন বহুল না হলেও চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে। ভেষজ আবিরের জোগান দিতে এগিয়ে এসেছেন কেউ কেউ। সিপাহিজলা জেলার বিশালগড় মহকুমার পূর্ব লক্ষ্মীবিল গ্রামের কয়েকজন নারী মিলে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সহযোগিতা প্রশিক্ষণে এই কাজটি শুরু করেছেন। ভেষজ এই আবির বা রঙ-এর কাঁচামাল গাঁদাফুল, গোলাপের পাপড়ি, গাজর, পালং শাক, বিট ইত্যাদি।
লক্ষ্মীবিল, চাম্পামুড়া, ভাটিলার্মা, গোপীনগর,গোলাঘাটি, রঘুনাথপুর, রাউথখলা, কে কে নগর গ্রামগুলি ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত।এর দেখাদেখি আশপাশে গ্রামেও প্রচুর ফুল চাষ হয়। এই ফুল রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে থাকেন।কিন্তু উৎপাদন ও জোগানের মাঝখানের যে সমস্যা তার সমাধান হয়নি এখনও।ফুল সংরক্ষণে আশপাশে কোনও হিমঘর নেই।ফলে অবিক্রিত ফুল চাষিরা হিমঘরে তুলে রেখে চাহিদা অনুসারে বিক্রি করতে
পারছেন না।এতে অবিক্রিত ফুল ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় তাদের নেই। দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিল, তাদের উৎপাদিত ফুল দিয়ে যাতে বিকল্প কিছু করা যায়। সম্প্রতি আগ্রহী মেয়েদের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের বিশালগড় অফিসের উদ্যোগে ভেষজ আবির তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞান প্রযুক্তি দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা এই প্রশিক্ষণ দেন।মেয়েদের নিয়ে লক্ষ্মী উইমেন কনজিউমার কো-অপারেটিভসোসাইটি লিমিটেড গঠন করা হয় ও শেখানো হয় ভেষজ আবির বানানোর পদ্ধতি।তাদের তৈরি আবির ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছে স্থানীয় বাজারে। আগরতলা সহ স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে বাজারজাত ও বিক্রির ব্যবস্থা করা সম্পূর্ণ। এবার অপেক্ষা উৎসবের। প্রশিক্ষণ নেওয়া দলের এক সদস্যা প্রীতি সরকার জানান, দপ্তরের প্রচেষ্টায় প্রায় ত্রিশজন প্রথম প্রশিক্ষণ নেন ২০২২ সালে।২০২৪-এর জুলাই মাসে ছয়দিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ম্যানেজমেন্ট, ম্যানেজ হায়দ্রাবাদ এবং লেম্বুছড়ার রাজ্য কৃষি ব্যবস্থাপনা ও সম্প্রসারণ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট-এর তত্ত্বাবধানে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন, আধুনিক প্যাকেটিং ইত্যাদির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, আর্থিক সাহায্যও দেওয়া হয়। এখন বাণিজ্যিকভাবে তৈরি হচ্ছে আবির। প্রীতি সরকার জানান, আবির উৎপাদনে তারা আর্থিক স্বনির্ভরতার সুযোগ পেয়েছেন। উৎপাদন শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই তাদের আবির বাজারে সাড়া ফেলেছে। কৃষি দপ্তরে বিশালগড় সেক্টর অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রবীর দত্ত জানান, উদ্যান ও ভূমি সংরক্ষণ বিভাগে একটি আধুনিক প্রকল্পের রূপরেখা জমা করেছেন বিশালগড়ের উদ্যান বিভাগের সহায়তায়।আগামীদিনে এই প্রকল্প অনুমোদন হলে পরিকাঠামো বৃদ্ধি হবে ও নিশ্চিতভাবে বলা যায় গ্রামীণ নারীদের এই আবিরের বাজার আরও
সম্প্রসারিত হবে।তিনি জানান, প্রশিক্ষণের পর সরকারের এমআইডিএইচ প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।