ভোক্তা সুরক্ষার নামে লিগ্যাল মেট্রোলজিতে অভিনব দুর্নীতি!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের লিগ্যাল মেট্রোলজি অর্থাৎ ওজন ও পরিমাপ বিভাগে কর্মরত এক প্রভাবশালী ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রভাবশালী এই কারণে যে, ২০১৮ সালে সরকার পরিবর্তনের পর তিনিও রাতারাতি জামা পাল্টে রামভক্ত হয়ে উঠেছেন। সবথেকে বিস্ময়কর ঘটনা হলো, বিভাগের অধিকর্তাও ওই ইনস্পেক্টরের দুর্নীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।কিন্তু তিনি কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছেন না বলে অভিযোগ। লিগ্যাল মেট্রোলজি বিভাগের প্রধান কাজই হচ্ছে ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষা করা। আর এই স্বার্থ সুরক্ষার নামেই চলছে ঘোটালা।জনগণ বুঝতেও পারছে না। দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু কর্মচারীর কারণে পকেট ফাঁকা হচ্ছে আম জনতা ক্রেতা সাধারণের।প্রতিনিয়ত মানুষকে ঠকতে হচ্ছে।
বিভিন্ন মহল থেকে প্রাপ্ত অভিযোগে – জানা গেছে, শহর এবং শহরতলির পেট্রোল পাম্পগুলিতে জ্বালানির পরিমাণে দুর্নীতি চলছে।এক অভিনব পদ্ধতিতে এই দুর্নীতি চলছে দীর্ঘদিন ধরে।এই দুর্নীতিতে একাংশ পেট্রোল পাম্প মালিকও জড়িত বলে অভিযোগ। বছরে একবার করে পেট্রোল পাম্পের জ্বালানি সরবরাহকারী পরিমাপ মেশিনগুলি ক্যালিব্রেশন করতে হয়।আর এখানেই -চলে দুর্নীতি।যা সাধারণের নজরের বাইরে থেকে যায়। মেশিনগুলি এমনভাবে ক্যালিব্রেশন করে দেওয়া হয়, যেখানে ভোক্তা উচিত মূল্য দিয়ে জ্বালানি ক্রয় করলেও পরিমাপে কম পায়।যেমন পাঁচ লিটার জ্বালানিতে – পনেরো থেকে কুড়ি মিলিলিটার কম।কোথাও আরও বেশি-কম থাকে। এভাবে বছরে দুর্নীতির পরিমাণটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা সহজে অনুমেয়। এতে বছরে যে অর্থ লাভ হয়, তা দুইভাগে ভাগ হয়। একভাগ যায় লিগ্যাল মেট্রোলজির ইনস্পেক্টরের পকেটে।অন্যভাগ যায় পেট্রোল পাম্প মালিকের পকেটে।এই ভাবেই অভিনব পদ্ধতিতে চলছে দুর্নীতি।
অভিযোগ,পেট্রোল পাম্প মালিকদের এই দুর্নীতির সাথে জড়াতে বাধ্য করা হচ্ছে। নতুবা তাদের নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয়। যেসব পেট্রোল পাম্প মালিক মনেপ্রাণে চান তাদের পরিমাপ মেশিন সঠিক থাকুক। তাদের নানাভাবে
হয়রানি করা হয়।নতুবা তাদের মেশিন ক্যালিব্রেশনের সময় পরিমাপ বাড়িয়ে দেওয়া হয়।যাতে তাদের আর্থিক ক্ষতি হয়।এছাড়াও আরও নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয় পেট্রোল পাম্প মালিকদের। নানা অজুহাত তুলে বড় অংকের অর্থ জরিমানা করে দেওয়া হয়। ক্যালিব্রেশন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে কোনও পরিমাপ যন্ত্র বা ডিভাইসকে তার নির্ধারিত মানগুলির সাথে সামঞ্জস্য করা হয়।এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে, পরিমাপ যন্ত্র বা ডিভাইশটি সঠিক এবং নির্ভুল পরিমাপ প্রদান করছে। আরও স্পষ্ট করে বললে পরিমাপ যন্ত্রের সঠিকতা নির্ণয় করা।পেট্রোল পাম্পগুলিতে বছরে একবার করে এই ক্যালিব্রেশন করা হয়। প্রতিবার ক্যালিব্রেশনের জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দিষ্ট অংকের ফিস দিতে হয়। বর্তমানে ফিসের পরিমাণ ২২৫০ টাকা। অভিযোগ, রামনগরের বাসিন্দা বর্ধনবাবু নামে জনৈক ইনস্পেক্টরের বেআইনি ‘কার্যকলাপে অতিষ্ঠ শহরের নর্থ জোনের পেট্রোল পাম্প মালিকরা।জানা গেছে, বর্ধনবাবুর আন্ডারে পঞ্চাশটি পেট্রোল পাম্প রয়েছে। ক্যালিব্রেশনের জন্য মালিকদের একমাস আগে থেকেই চিঠি দিতে হয়।মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে আবার মোটা অংকের জরিমানা গুণতে হয়। এভাবে নীরবেই চলছে দুর্নীতি। অথচ সকলে নীরব।