ভোটকুশলি থেকে নেতা!!

 ভোটকুশলি থেকে নেতা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দীর্ঘদিন ধরেই জল্পনা চলছিল।অবশেষে একেবারে পাকাপাকিভাবে রাজনীতির ময়দানে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর।তবে রাজনীতির ময়দানে পাকাপাকিভাবে নামার আগে গত কয়েক বছর ধরেই রাজনীতির রাস্তাটা একটু একটু করে তৈরি করছিলেন প্রশান্ত কিশোর।২রা অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তীর দিনেই তাঁর রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা করে দিয়েছেন। পাটলিপুত্রে ‘জন সূরজ পার্টি’ সংক্ষেপে জেএসপি নামে আরও এক রাজনৈতিক দলের যাত্রা শুরু হলো।তাঁর নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশনের সম্মতি ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে বলে প্রশান্ত কিশোর নিজেই জানিয়েছেন।নতুন দলের ঘোষণা উপলক্ষে গান্ধী জয়ন্তীতে একটি সমাবেশেরও আয়োজন করেছেন।সেখানে কয়েক হাজার মানুষের জমায়েতও হয়েছে।আর সেটা দেখে বেশ আবেগপ্রবণও হয়ে পড়েছিলেন ভোট কৌশলী থেকে নেতায় রূপান্তরিত হওয়া প্রশান্ত কিশোর।ভাষণ দিতে গিয়ে বড় প্রতিশ্রুতি দিয়ে বসলেন।বলেছেন, ক্ষমতায় এলে এক ঘন্টার মধ্যে ‘ড্রাই স্টেট’ বিহার থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।অর্থাৎ ভোটে নামার আগেই বড় প্রতিশ্রুতি দিয়ে বসলেন ভোট ভোটকুশলী থেকে রাজনীতিক হয়ে উঠা প্রশান্ত কিশোর।তাঁর এই প্রতিশ্রুতি ঘিরে ইতিমধ্যে বিহার রাজনীতিতে জল্পনা শুরু হয়েছে।
যে সংস্থা নিজের হাতে তৈরি করেছিলেন,বছর ঘুরতে চললো সেই ‘আইপ্যাক’ নামক সংস্থার সাথে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করে নিয়েছেন। কর্মজীবনের শুরুতে বিজেপি দলের ভোটেকুশলী হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটে প্রশান্ত কিশোরের।ধীরে ধীরে তাঁর সাফল্যের জয়গান ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন মহলে।জাতীয় রাজনীতির অঙ্গনে ‘পিকে’ এই নামেই পরিচিতি ঘটে। এরপর একাধিক রাজনৈতিক দলের সাথে ভোটকুশলী হিসাবে কাজ করেছেন এবং সাফল্য এনে দিয়েছেন। বছরখানেক ধরে তার ‘আইপ্যাক’- এর সাথে মতানৈক্য তৈরি হয়।দূরত্ব বাড়তে থাকে।শেষে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন।এরপর থেকেই নানাভাবে স্পষ্ট হচ্ছিল যে রাজনীতিতে আসতে পারেন ভোটকুশলী পিকে।সেটাই শেষ পর্যন্ত সত্য হলো।
বিহারের ভূমিপুত্র প্রশান্ত কিশোর বিহারেই তাঁর জীবনের নয়া ইনিংস শুরু করতে চলেছেন।বিহারের রাজনীতিতে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে উঠে আসার ঘোষণা দিয়েছেন।বিহার পিছিয়ে থাকার জন্য কখনো লালু প্রসাদ তো কখনো নীতীশ কুমারে বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন।জাত-পাতের রাজনীতি থেকে উর্ধ্বে উঠে বিহারের উন্নয়নই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য বলে ঘোষণা করেছেন।এই পর্যন্ত সবই ঠিক আছে।বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আরও একটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এতে নতুনত্ব তেমন কিছু নেই। এই দেশে বহু রাজনৈতিক দলের জন্ম হয়েছে এখন পর্যন্ত। এদের মধ্যে বহু দলের আজ অস্তিত্বই নেই। অকালেই ঝরে পড়ে রাজনীতির অঙ্গন থেকে মুছে গেছে। আবার অনেক দলই নিজেদের পৃথক সত্ত্বায় সাফল্য অর্জন করে জাতীয় রাজনীতির অন্যতম নিয়ন্ত্রক শক্তি হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। ফলে রাজনৈতিক দলের অভাব নেই। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন ‘জন সুরজ পার্টি’। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর ওরফে পি.কে এই দলের সুপ্রিমো বলেই গোটা দেশজুড়ে একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কেননা, তিনি বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি স্টস্ট্র্যাটেজিস্ট হিসাবে কাজ করে সফল হয়েছেন। তাঁর তৈরি ভোট রণকৌশলকে পাথেয় করে একাধিক রাজনৈতিক দল সাফল্য কুড়িয়েছে। শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। সেই প্রশান্ত কিশোর এবার নিজেই রাজনৈতিক দল গড়ে রাজনীতির ময়দানে হাজির হয়েছেন। ফলে এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে, এবার কি তিনি নিজে পারবেন সফল হতে? আগামী ২০২৫ সালে বিহারে বিধানসভার ভোট। সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে ওই ভোটে।ততদিন অপেক্ষা তো করতেই হবে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.