ভোটকুশলী থেকে নেতা!!!

 ভোটকুশলী থেকে নেতা!!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

ভোটকুশলীর ভূমিকা ছেড়ে এবার কি রাজনৈতিক নেতা হতে চলেছেন প্রশান্ত কিশোর? এই জল্পনা নিয়েই উসকে দিয়েছেন পিকে। সম্প্রতি কংগ্রেস দলে যোগ দিতে চেয়ে সোনিয়া, রাহুল গান্ধি সহ কংগ্রেস হাইকমান্ডের সঙ্গে বারবার বৈঠক করেছেন। কংগ্রেসকে পুনরুজ্জীবনের প্রস্তাব দিয়েছেন। আলোচনা অনেক দূর এগিয়েওছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার কংগ্রেস দলে যোগদান আর করা হয়নি। কেন তিনি কংগ্রেসের হাত ধরলেন না? এই প্রশ্নের জবাব পাওয়ার আগেই নতুন করে জল্পনা বাড়ালেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর।
তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সোমবার এক ট্যুইট করেন। আর এই ট্যুইট প্রকাশ্যে আসতেই ফের গুঞ্জন শুরু হয়। তিনি ট্যুইটে লিখেছেন, “গণতন্ত্রের অংশ হয়ে উঠতে এবং মানুষের জন্য নীতি তৈরিতে সাহায্য করতে আমার অনুসন্ধান দশ বছর ধরে চললো। এবার প্রকৃত মাষ্টারদের অর্থাৎ জনগনের কাছে যাওয়ার সময় হয়েছে। ইস্যুগুলি আরও ভালো করে বোঝার জন্য তাদের কাছে যেতে হবে।” এই ট্যুইটে প্রশান্ত কিশোর ‘জন সুরজ’ শব্দটি লিখেছেন। অর্থাৎ জনতার সূর্য। আর জনতার সূর্য বলতে বুঝিয়েছেন মানুষের সুশাসন। আর এর শুরু বিহার থেকে হচ্ছে জানিয়ে ট্যুইট সেশ করেছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। তার এই ট্যুইট প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়ে যায়। অনেকেই মনে করছেন, প্রশান্ত কিশোর ‘জন সুরজ’ নামে রাজনৈতিক দল গঠন করে এবার সরাসরি রাজনৈতিক ময়দানে অবতীর্ণ হতে চলেছেন। সোমবার ট্যুইটের মাধ্যমে সেই ইঙ্গিতই দিয়েছেন।
ভোটকুশলী হিসাবে বছর পয়তাল্লিশের প্রশান্ত কিশোরের সাফল্য নজরকাড়া। ২০১২ সালে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের সময় নরেন্দ্র মোদির ভোটকুশলী হিসাবে কাজ করেছিলেন পিকে। মোদি গুজরাটের মসনদে ফের বসেন। এই সাফল্যের পর ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনেও  প্রশান্ত কিশোরকে বিজেপির ভোট কৌশলী হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাতেও পিকের মুকুটে সাফল্যের পালক যুক্ত হয়েছে। এরপর, ২০১৫ সালে বিহারে বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দলের হয়ে ভোট কুশলীর কাজ করেছেন। ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ।
২০১৭ সালে কংগ্রেসের হয়ে পাঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশে ভোটকুশলীর কাজ করেন পিকে। পাঞ্জাবে কংগ্রেস জিতলেও উত্তরপ্রদেশে হারতে হয় দেশের সবচেয়ে প্রাক্তন রাজনৈতিক দলকে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের পর প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার সাথে গাঁটছড়া বাঁধে তৃণমূল কংগ্রেসও। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে দুশোর বেশি আসন পেয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটকুশলী হিসাবে একের পর এক সাফল্যের পর প্রশান্ত কিশোরের রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়া নিয়েও জল্পনা ছড়িয়েছে বহুবার। বছর চারেক আগে নীতীশ কুমারের দলে যোগ দিয়েছিলেন পিকে। কিন্তু ষোল মাস পর নীতীশের সাথে মনোমালিন্যের জেরে জেডিইউ থেকে বেরিয়ে আসেন। তৃণমূল কংগ্রেস তাকে রাজ্যসভার সাংসদ করতে পারে, একসময় এমন জল্পনাও ছড়িয়েছিল। বাস্তবে অবশ্য তা হয়নি। গত একমাস ধরে জল্পনা চলছিল, প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন। কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সাথে তার একাধিক বৈঠক হয়। এই বৈঠকের পর থেকেই দেশজুড়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠে। কিন্তু কয়েকদিন আগে যাবতীয় জল্পনায় তিনি নিজেই জল ঢালেন। ট্যুইট করে জানিয়েছেন, কংগ্রেসে যগ দেওয়ার প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। সোমবার তার নতুন ট্যুইট ফের জল্পনা উসকে দিয়েছে। এবার আর কোনো দলে যোগদান নয়। সরাসরি নিজেই দল গড়ে জনতার সামনে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। বাস্তবে এর প্রতিফলন হয় কি না, সেটাই এখন দেখার।

Avatar

Dainik Sambad

Leave a Reply

Your email address will not be published.