ভোটের ইস্যু ও ভবিতব্য!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

রাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচন একেবারে দোড়গোড়ায়। খুব বেশি হলে আর তিন মাস বাকি। এই সময়ের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে পারে রাজ্যের সব থেকে হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। এখন সব থেকে বেশি আলোচ্য বিষয় হচ্ছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচন কোন কোন ইস্যুর উপর ভিত্তি করে হবে। আরও স্পষ্ট করে বললে কোন কোন ইস্যুগুলি (বিষয়) ভোটের বাজারে প্রাধান্য পাবে?

এটা সকলেই জানে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়ার মধ্যে যে কোনও নির্বাচনই ইস্যুর উপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠিত হয়। সরকার পক্ষ, বিরোধী পক্ষ প্রত্যেকেই ইস্যুর উপর ভিত্তি করে নির্বাচনে লড়াই করে। ইস্যুর বাইরেও কিছু ইস্যু থাকে। সেগুলিও নির্বাচনের অন্যতম বিষয় হিসাবে বিবেচিত হয়। যেমন, পছন্দ-অপছন্দ। কেউ অমুক দলকে পছন্দ করে, ভালোবাসে। আবার কেউ তমুক দলকে। তাদের কাছে ভোটের ইস্যু খুব একটা বড় ফ্যাক্টর নয়। তারা এই বিষয়ে খুব একটা মাথা ঘামান বলেও মনে হয় না। তারা দলের একনিষ্ঠ সমর্থক, কর্মী। যাকে বলে অন্ধভক্ত। এমন ভক্তের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়।

প্রতিটি দলের কাছেই এমন কমিটেড ভোটার রয়েছে কম-বেশি। কিন্তু ভাসমান ভোটার, অর্থাৎ কোনও দলের সাথেই যাদের সরাসরি কোনও যোগসাজশ নেই, তাদের কাছে ভোটের ইস্যু কিন্তু একটা বড় ফ্যাক্টর। এমন ভোটারের সংখ্যাই সব থেকে বেশি। তারা মূলত নিজেদের ভোটাধিকার অর্থাৎ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেন ইস্যুর উপর ভিত্তি করে। কাকে ভোট দেবেন, কেন ভোট দেবেন— ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগেই এই প্রশ্নগুলোর জবাব খুঁজে নিয়ে মনস্থির করেন। ফলে কাকে বা কোন দলকে তারা ভোট দেবেন, সেটা আগে থেকেই ঠিক করে নেন। এটা একটা মনস্তাত্ত্বিক বিষয়। ফলে রাজনৈতিক দলগুলিও ওইসব ভাসমান ভোটারদের কাছে টানতে নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করে থাকে।

সেই কৌশলের অঙ্গ হিসাবেই তৈরি হয় ‘ভোটের ইস্যু’। অর্থাৎ গণদেবতা কোন ইস্যুকে অনেকটা মাছের আধারের মতো টোপ হিসাবে গিলবে, তাতে ভোটের বাক্সে ফায়দা হবে এই নিয়ে চুল-চেরা বিশ্লেষণ চলে। সময়ের নিরিখে এখন ভোটের বাজার এসেছে পেশাদারিত্ব। নয়া অবতারে এসেছে ‘ভোটকৌশলী’। এই ভোট কৌশলীর পিছনে রাজনৈতিক দলগুলি এখন শত শত কোটি টাকা খরচ করে ‘ভোটের ইস্যু’ তৈরি করার জন্য। শাসক-বিরোধী সকলেই এখন এই পথে হাঁটছে। নয়া অবতারের পেশাদারী ভোটকৌশলীরাই এখন রাজনৈতিক দলগুলির চাহিদা ও চুক্তি অনুযায়ী ‘ভোটের ইস্যু’ তৈরি করে, ভোটের স্লোগান তৈরি করে। রাজনৈতিক হাওয়া তৈরি করে।

ভোটকৌশলীদের দেখানো পথেই রাজনৈতিক দলগুলির নীতি নির্দেশিকা তৈরি হয়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, ওই তৈরি করা ইস্যুতে ‘চমক’ থাকে। নানা লোভাতুর বিষয় থাকে। যেগুলো দেখে ভোটাররা আকৃষ্ট হয়। আবার এমন চমকের ইস্যু দেখে ভোটাররা মারাত্মকভাবে বিভ্রান্তও হয়। সত্যকে আড়াল করে অসত্যকে প্রচারের আলোতে নিয়ে এসে ভোটারদের বিভ্রান্ত করার প্রয়াস চলতে থাকে অহরহ। একইরকম উল্টোটাও চলে সমানতালে। এখন ভোট মানেই আমজনতার মগজ ধোলাই আর পেশিশক্তির আস্ফালন। এতে চাপা পড়ে যায় মানুষের মৌলিক চাহিদা ও চাওয়া পাওয়ার মূল ইস্যুগুলি। এই অবস্থার পরিবর্তন না হলে কোনও নির্বাচনেই প্রকৃত জনাদেশ প্রতিফলিত হবে না। এটাই এখন রাজনীতির ভবিতব্য।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

এ কে-৪৭ ও প্রচুর কার্তুজ সহ ৬ বৈরী ধৃত মিজোরামে, চাঞ্চল্য!!

অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…

21 hours ago

ফাইফরমাশ খাটছেন টিএসআর জওয়ানরা !!

অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…

22 hours ago

ইন্ডিগো আরও একটি দিল্লীর বিমান চালু করছে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…

22 hours ago

ইন্দ্রপ্রস্থে ভোট!!

দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…

22 hours ago

বহিঃরাজ্যে গেল “ধানি লঙ্কা”ওরফে ধান্না মরিচ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…

2 days ago

কুম্ভ ইকনমি

২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…

2 days ago