ভোটে রেকর্ড ত্রিপুরার!!

 ভোটে রেকর্ড ত্রিপুরার!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে প্রথম দফায় গত ১৯ এপ্রিল মোট অ ৫৪৩ টি আসনের মধ্যে ১০২ টি আসনে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।ভোট হয়েছে দেশের ২১টি রাজ্যে। এর মধ্যে দেশের উত্তর- পূর্বের ছোট রাজ্য ত্রিপুরাতেও একটি আসনে(১ নং পশ্চিম ত্রিপুরা)ভোট হয়েছে।নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী প্রথম দফায় ১০২ টি সংসদীয় নির্বাচন ক্ষেত্রে গড়ে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ।কিন্তু উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, প্রথম দফায় ভোটে সারা দেশের মধ্যে রেকর্ড করেছে ত্রিপুরা।এখানে ভোট পড়েছে সারা দেশের মধ্যে সর্বাধিক। রাজ্য নিবাচন দপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা সংসদীয় ক্ষেত্রে ভোট পড়েছে গড়ে ৮১.৪৮ শতাংশ।গত ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম আসনে ভোটের হার ছিল ৮১ শতাংশ।২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম আসনে ভোটের হার সামান্য বেড়েছে।
ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে সারা দেশের মধ্যে ত্রিপুরা রেকর্ড করলেও, এই রাজ্যের জন্য তা মোটেও ব্যতিক্রম নয়। কেননা,এই রাজ্যের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রদানের ক্ষেত্রে বরাবরই আন্তরিক।এই রাজ্যে যে কোনও নির্বাচনে জনগণ সতস্ফূর্ত ভাবে এবং উৎসবের মেজাজে ভোট প্রদান করে থাকেন।ফলে ভোটের হার বরাবরই ৮০ শতাংশের উপরে থাকে।কখনো কখনো ৯০ শতাংশের উপরেও চলে যায়। ফলে ত্রিপুরার ক্ষেত্রে এই ভোটের হার স্বাভাবিক বলেই মনে করা হয়।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী পশ্চিম ত্রিপুরা সংসদীয় নির্বাচন ক্ষেত্রে অধীন যে ৩০টি বিধানসভা রয়েছে তার মধ্যে সব থেকে বেশি ভোটের হার রেকর্ড হয়েছে ১৮ নং সূর্যমণিনগর বিধানসভা কেন্দ্রে।এই কেন্দ্রে ভোটের হার ৮৬.৭৭ শতাংশ।দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ২১ নলছড় বিধানসভা কেন্দ্র।এখানে ভোটের হার ৮৬.৩২ শতাংশ।তৃতীয় স্থানে রয়েছে ৩৫ নং বিলোনীয়া বিধানসভা কেন্দ্র।এখানে ভোট পড়েছে ৮৬.২৭ শতাংশ। লোকসভা এবং বিধানসভা উপনির্বাচন দুটি ক্ষেত্রেই সবথেকে কম ভোট পড়েছে ৭ নং রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রে।এই কেন্দ্রে লোকসভার ভোট পড়েছে ৭২.৭০ শতাংশ এবং বিধানসভার উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ৭১.১৯ শতাংশ।যা বেশ তাৎপর্য পূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।রামনগর কেন্দ্রে লোকসভা এবং বিধানসভা উপনির্বাচনের ভোটের মধ্যে ১.৫১ শতাংশ ভোটের ফারাক রয়েছে।এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, রামনগর কেন্দ্রের ১.৫১ শতাংশ ভোটার লোকসভায় ভোট প্রদান করলেও, তাঁরা বিধানসভার উপনির্বাচনে ভোট প্রদান করেননি। অথচ তাঁরা ভোট কেন্দ্রে এসেছেন।ভোটারদের
এই প্রবণতা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
এখন মূল প্রশ্ন হচ্ছে, এমনটা কেন হলো?এই ১.৫১ শতাংশ ভোটার, এরা তো ভোটকেন্দ্রে এসেছেন।লোকসভার আসনে কোনও না কোনও দলের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু এরা একই ভোটকেন্দ্রে বিধানসভার উপনির্বাচনে ভোট দিলেন না কেন? ১.৫১ শতাংশ,এই সংখ্যাটা কিন্তু একবারে ফেলে দেওয়ার মতো নয়।ভোটের পরিসংখ্যানে এই সংখ্যার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।এক শতাংশ ভোটের এদিক সেদিকে ফলাফলের অনেক বড় পরিবর্তন হয়ে যায়। অনেক কিছুই উল্টপালট হয়ে যায়। অনেক হিসেব গুলিয়ে যায়। এমন বহু উদাহরণ রয়েছে।
তবে রাজ্য রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন উলটপালটের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।রাজ্য রাজনীতির হাঁড়ির খবর যারা রাখেন, তাঁরা ভালো করেই জানেন, লোকসভার দুটি আসনে এবং রামনগর বিধানসভার উপনির্বাচনের ফলাফল কী হতে পারে। পশ্চিম আসনে এবং রামনগর বিধানসভার উপনির্বাচনের ভোট ইতিমধ্যে ইভিএম বন্দি হয়ে গেছে।২৬ এপ্রিল ভোট হবে পূর্ব ত্রিপুরা আসনে। ১৯ এপ্রিল সকাল থেকে ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত দিনভর ভোটের যে ছবি লক্ষ্য করা গেছে, তাতে এই কথা জোর দিয়ে বলা যায় যে ভোট হয়েছে একতরফা। বিরোধীদের তেমন কোনও উপস্থিতিই লক্ষ্য করা যায়নি। যদিও বিরোধীরা ভোেট লুঠ হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে।কিন্তু বিরোধীদের এই অভিযোগ খন্ডন করেছে নির্বাচন কমিশন কমিশনের বক্তব্য, ভোট হয়েছে সুষ্ঠু, অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ। এখন অপেক্ষা ৪ জুনের।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.