ভ্রষ্টাচার মুক্ত ভারত উপহার দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদিঃ নাড্ডা

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি।। বিগত ৯ বছরে ভারতের রূপরেখা পালটে গেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে। ২০১৪-র আগে ভ্রষ্টাচারমূলক দেশগুলোর মধ্যে ছিল ভারতের নাম। ভ্রষ্টাচারী দেশ বলা হতো ভারতকে। সমস্ত কাজেই ছিল দূর্নীতি। ইউপিএ-র সরকার সবজায়গাতে শুধুমাত্র ভ্রষ্টাচার ও দূর্নীতিমূলক কাজই করে গেছে। কিন্তু ২০১৪ সালের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতবর্ষকে ভ্রষ্টাচার থেকে মুক্ত করে দূর্নীতিমুক্ত শক্তিশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
শনিবার দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়া মহকুমার শান্তিরবাজারে আয়োজিত এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথাগুলো বললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে.পি নাড্ডা।
তিনি আরও বলেন, ভ্রষ্টাচার ও বংশবাদ থেকে দেশকে বের করে বিকাশবাদের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শুধুমাত্র সরকারই নয়, সরকারের কাজ করার সংস্কৃতিও পালটে গেছে বিগত ৯ বছরে। এছাড়াও তিনি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়ন মূলক বিভিন্ন কাজের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, একটা সময় ছিল যখন প্রতিদিন শুধুমাত্র ১২ কিলোমিটার করে জাতীয় সড়কের কাজ হতো কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমানে প্রতিদিন ২৯ কিলোমিটার করে জাতীয় সড়ক গড়ার কাজ হচ্ছে।

এইভাবেই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিগত ৯ বছরে ৫৪ হাজার কিলোমিটার জাতীয় সড়ক গড়ে উঠেছে। আর ত্রিপুরায় বিগত ৬ বছরে ৩০০ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক গড়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও রেল পথ ও বিমানবন্দর সহ অন্যান্য বিভিন্ন নির্মান কাজ সংক্রান্ত তথ্যও তুলে ধরেন নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, যে জায়গায় দাঁড়িয়ে ৭০ বছরে শুধুমাত্র ৭৪ টি বিমানবন্দর গড়ে উঠেছিল, সেখানে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিগত ৯ বছরে আরও ৭৪টি বিমানবন্দর গড়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়া গ্রামগুলোকে একসূত্রে বাধার জন্য ৩ লাখ ২৮ হাজার সড়ক গড়ে উঠেছে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভারতবর্ষ আত্মনির্ভর হয়ে উঠেছে। আর্থিক দিক থেকেও ভারত দশম স্থান থেকে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। এছাড়াও দেশ সহ ত্রিপুরার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের তথ্য তুলে ধরেন নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে।
এদিন তিনি নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে কংগ্রেস ও সিপিআইএম-কে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে.পি নাড্ডা। তিনি বলেন, তারা যেখানেই দাঁড়ায় সেখানেই শুধু গরিবী আর বেকারত্ব শুরু হয়ে যায়। সেই বেকারত্ব থেকে দেশকে বের করে রোজগারের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে দেশকে পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ভারতবর্ষ পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থব্যবস্থা। আর্থিক ব্যবস্থাকে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া জিডিপি’র দেশ হল এই ভারতবর্ষ। ভারতবর্ষ জিডিপি’র দিক দিয়ে ৮.৭ শতাংশে দাঁড়িয়ে আছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এবং আর্থিক দিক দিয়ে যদি পৃথিবীর দৃষ্টিতে কোনো উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে থাকে, তবে তা শুধুমাত্র ভারতবর্ষ। এছাড়াও এদিন সাধারণ মানুষের উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রকল্পের সফলতা তুলে ধরেন তিনি।
পাশাপাশি কংগ্রেস-সিপিআইএম ও বিজেপি দলের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরতে গিয়ে কংগ্রেস ও সিপিআইএম-কে চাচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে. পি নাড্ডা। তিনি বলেন, কংগ্রেস মানে হল ভ্রষ্টাচার, কমিশন, কুশাসন, পরিবারবাদ এবং সিপিআইএম মানেই হল সরকারি অর্থ লুট, অরাজকতা, প্রশাসনিক ব্যবস্থার পতন, সিপিআইএম মানেই দূর্নীতি। আর বিজেপি মানেই হলো হাইওয়ে, ইন্টারনেট, রেলওয়ে, এয়ারওয়ে অর্থাৎ ‘হিরা’। বিজেপি মানেই বিকাশ-শিক্ষা-উন্নয়ন-সশক্তিকরণ, বিজেপি মানেই সবকা সাথ-সবকা বিকাশ-সবকা বিশ্বাস-সবকা প্রয়াস। অর্থাৎ এক কথায় বিজেপি মানেই উন্নয়ন। সর্বোপরি তিনি দেশ ও রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড: মানিক সাহা প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন। মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আধুনিক ভারতবর্ষ নতুন উদ্যমে এগিয়ে চলেছে। দীর্ঘদিনের উপেক্ষিত ও অবহেলিত ছিল উত্তর-পূর্ব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উত্তর-পূর্বের উন্নতিসাধন সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মার্গ দর্শনেই গত ৯ বছরে ত্রিপুরারও সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন হয়েছে সাধারণ মানুষের। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনেই এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে রাজ্য সরকার।
এছাড়াও এদিনের জনসভায় বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, বিজেপি প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য প্রমুখ। প্রত্যেকেই নিজেদের বক্তব্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশ ও রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের কথা তুলে ধরেন।
এছাড়াও এদিনের সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য সদস্যারা,পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভার সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা, সকল বিধায়ক সহ দলীয় নেতৃত্বরা। এদিনের জনসভায় দলের কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়।

Dainik Digital

Recent Posts

এ কে-৪৭ ও প্রচুর কার্তুজ সহ ৬ বৈরী ধৃত মিজোরামে, চাঞ্চল্য!!

অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…

17 hours ago

ফাইফরমাশ খাটছেন টিএসআর জওয়ানরা !!

অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…

18 hours ago

ইন্ডিগো আরও একটি দিল্লীর বিমান চালু করছে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…

18 hours ago

ইন্দ্রপ্রস্থে ভোট!!

দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…

18 hours ago

বহিঃরাজ্যে গেল “ধানি লঙ্কা”ওরফে ধান্না মরিচ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…

2 days ago

কুম্ভ ইকনমি

২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…

2 days ago