মঙ্গলে ধুলোঝড়ের দাপট ক্রমে শান্ত হচ্ছে, জানাল নাসা
ঋতু পরিবর্তন হচ্ছে মঙ্গলগ্রহের। ফলে সেখানে প্রবাহমান ভয়ঙ্কর ধুলোঝড়টি ক্রমে দুর্বল হয়ে এ আসেছে। এই ধুলোঝড়ের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার একটি ল্যান্ডার চূড়ান্ত মুহূর্তে অবতরণ করতে পারেনি। সেপ্টেম্বরে নাসার এই মহাকাশযান ‘মার্স রিকনেসাস অরবিটার’ লাল গ্রহের বিষয়ে একটি সতর্কবার্তা পাঠায়। তাতে বলা হয়, ভয়ঙ্কর এক ধুলোঝড় সৃষ্টি হচ্ছে মঙ্গলে। টানা প্রায়য় ১৭৮ দিন ঝড় বয়ে গিয়েছে লাল গ্রহটির পুরো অংশে। নাসা নতুন আরেকটি সৌরশক্তি চালিত ‘অপর্চুনিটি’ মিশন পাঠায়। এর নামে দেওয়া হয় ‘ইনসাইট ল্যান্ডার’।
মাত্র কয়েক ঘন্টার জন্য ইনসাইটকে শান্তিতে থাকতে দিয়েছিল এই ঝড়। কিন্তু অক্টোবরের শুরুর দিকে ধুলোবালি এর ওপর গাঢ় আবরণ সৃষ্টি করে। ফলে এর সঙ্গে জড়িত বিজ্ঞানীরা তাদের এই মিশন নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। কারণ, তাদের আশঙ্কা ছিল, মিশনও বিফলে যেতে পারে! কিন্তু এখনও নাসার সাম্প্রতিক রিপোর্ট নিশ্চিত করেছে, ইনসাইট মিশনের ইতি ঘটলেও ল্যান্ডার ওই ঝড়ের ভয়াবহতার শিকার হয় নি। এর ওপর থেকে ধুলোবালি সরে যেতে শুরু করেছেন, তারও ছবি ‘মার্স রিকনেসাস অরবিটার’ থেকে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের হাতে এসে পৌঁছেছে। মঙ্গলের আবহাওয়া নইয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে ‘এইলিস রিসার্স’। এই গবেষণাকারী দলের মুখ্য আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকারী বিজ্ঞানী ক্লেয়ার নিউম্যান বলেছেন, ‘মঙ্গলে এতো ভ ভয়ঙ্কর ধুলোঝড় আগে কখনও হয় নি। তবে সৌভাগ্য এটাই ঝড়ের দাপট ক্রমশ কমছে। আমার মনে হয় আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যেই পরিবেশ পুরোপুরি বদলে যাবে।’ বিজ্ঞানীরা এখনও মঙ্গলগ্রহের আবহাওয়া বোঝার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে এর ধুলোঝড়ের বিষয়ে তারা কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন নিউম্যান। বলা হচ্ছে, ছোটখাট একটি স্থানীয় পর্যায়ের ধুলোঝড় এক বছর ধরে চলতে পারে। দক্ষিণ গোলার্ধে যখন গ্রীষ্মের শেষ হয়ে আসে তখন বড় মাপের ধুলোঝড় সেখানে সাধারণত দেখা যায়। ফলে ইনসাইট যে ধুলোঝড়ের মধ্যে পড়েছে, সেটা অস্বাভাবিকতার বাইরে নয় । নিউম্যান বলেছেন, ‘বছরের বিভিন্ন সময়ে আমরা মধ্যপ্রাচ্যে যেমন ধুলোঝড় দেখি এই ধুলোঝড় তেমনই একটি।’ ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ঝড়েরও গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন হয় কারণ, মঙ্গলের তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে এমন ঝড় হয়। এতে উত্তপ্ত পৃষ্ঠের ধুলোবালিকে বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে মঙ্গলের আবহাওয়া মন্ডলে ছড়িয়ে দিয়ে তাকে করে ঘন ও কালো। অরবিটারগুলো ছবি এবং তাপমাত্রার ডাটা বিশ্লেষণ করে ঝড়ের পূর্বাভাস দেয়। আবার মঙ্গলের পৃষ্ঠের ধুলোবালিও সতর্কতা দেয়।