মঙ্গল গ্রহের ছিটকে আসা শিলা পৃথিবীর বুকে।।

 মঙ্গল গ্রহের ছিটকে আসা শিলা পৃথিবীর বুকে।।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

মঙ্গল গ্রহে গর্জে উঠেছে সৌরজগতের এ যাবৎকালীন বৃহত্তম আগ্নেয়গিরি।এতটাই তার অভিঘাত যে, সেখান থেকে লাভা পাথর গড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীর বুকে! কী করে তা সম্ভব ? বিজ্ঞানীরা বলেছেন, মঙ্গলে আগ্নেয়গিরির অভিঘাতে আগুনে পাথর ধূমকেতু রূপ নিয়ে পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছে। মার্কিন বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলে যে আগ্নেয়গিরি গর্জে উঠেছে তা সৌরজগতে সৃষ্ট যে কোনও আগ্নেয়গিরির চেয়ে উঁচু এবং বিধ্বংসী। ওই আগ্নেয়গিরি তথা জ্বলন্ত পর্বতের নাম ‘অলিম্পাস মনস’।আগ্নেয়গিরি থেকে ছিটকে আসা লাভা,পাথর ছড়িয়ে পড়ছে তাবৎ মহাকাশে। মঙ্গলের লাভা, আগ্নেয় পাথর পৃথিবীতে বয়ে আনছে ধূমকেতু।গ্লাসগো ইউনিভার্সিটির গবেষক ডঃ বেন কোহেন এ সম্পর্কে মার্কিন সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘পৃথিবীতে মঙ্গলের পাথরের টুকরো পাওয়া গেছে। ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে সেই পাথরের টুকরো রাখা হয়েছে।’ অধ্যাপক কোহেন আরও জানিয়েছেন, মঙ্গলের মাটির গঠন, চরিত্র, প্রকৃতি, বাতাসে মিথেন গ্যাসের অস্তিত্ব, বায়ুমণ্ডলে অ-তরিদাহত কণার গবেষণা করছেন গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ বিজ্ঞান বিভাগের একদল গবেষক।তাদের নেতৃত্বে আছেন ডাঃ কোহেন।সুদূর মঙ্গলে আগ্নেয়গিরির চরিত্র কী ভাবে বোঝা গেল?

ঘটনা হল, যে সব মহাকাশযান ইতিমধ্যে সৌরজগতের লাল গ্রহটিতে পাঠানো হয়েছে তাদের হাই রেজোলিউশনে ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, মঙ্গলে দিন-রাত আছে,ঋতু পরিবর্তন আছে, আছে উত্তর ও দক্ষিণ মেরু, খুব উঁচু পাহাড় আছে, বিরাট আগ্নেয়গিরি আছে, বিশাল নদীখাতও আছে, যা একদা সেখানে জল থাকার প্রমাণ দেয়।এর পাশাপাশি মঙ্গলের মাটিতেই আছে সুবিশাল আগ্নেয়গিরি যা আকারে-আয়তনে তিনটি এভারেস্টের সমান।মঙ্গলের সেই পর্বতের নাম অলিম্পাস মনস। তবে এটি কোনও সাধারণ পর্বত নয়।এটি একটি আগ্নেয়গিরি।পাহাড়ের মতো শৃঙ্গ নেই অলিম্পাসে।আছে অগ্ন্যুৎপাতের জ্বালামুখ। সৌরজগতের সবচেয়ে উঁচু আগ্নেয়গিরি এই অলিম্পাস। বিজ্ঞানীদের অনুমান, একসময় এই সুবিশাল আগ্নেয়গিরির চারদিকে জল ছিল। তেমন প্রমাণও পাওয়া গেছে। অলিম্পাসের উচ্চতা প্রায় ২১.৯ কিলোমিটার। মহাকাশ থেকে অলিম্পাসকে লাল আভায় ছেয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। আগ্নেয়গিরিকে কেন্দ্র করে যার বিস্তৃতি হাজার হাজার কিলোমিটার। ডাঃ কোহেনের দাবি, এই আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে ভয়ঙ্কর অগ্ন্যুৎপাত হয়। আগ্নেয়শিলা ছিটকে বেরিয়ে মহাজাগতিক রশ্মির সঙ্গে মিলে ধূমকেতুর চেহারা নেয়।এই ধূমকেতুই মঙ্গলের মাটি থেকে শিলা-পাথর বয়ে এনেছে পৃথিবীতে। শোনা যায়, কয়েকশো কোটি বছর আগে অলিম্পাসকে কেন্দ্র করে মঙ্গলের মাটিতে তুমুল আলোড়ন হয়েছিল। আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ ফেটে এমন লাভাস্রোত বের হয় যা মাটির ভিত নড়িয়ে দিয়েছিল। অলিম্পাসের মাটির নীচের অংশে বরফের স্তর ছিল। জ্বলন্ত লাভাস্রোত সেই বরফ গলিয়ে দেয়।ফলে সাঙ্ঘাতিক ভূমিধস হয় মঙ্গলে। মাটির গঠন বৈচিত্র্য অনেক বদলে যায়।

এ সব নিয়েই গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে চলেছেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.